img

‘বাকের আলীর আদুরে মেয়ে, নাম ছিল তার গুলবাহার, দেখতে ভারী চমৎকার’—সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঢুকলেই যেন বেজে উঠছে এমন কথার গানটি। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক কোথাও যেন বাদ নেই, সব জায়গাতেই যেন একটাই নাম—গুলবাহার। 

তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে মধ্যবয়সীরাও যেন মজেছেন গুলবাহারে। তার আঁচ পাওয়া যায়, সোশ্যালে চোখ রাখলেই।

 

কেউ কেউ নিজের প্রেয়সীকে কল্পনা করছেন গুলবাহার রূপে, আবার কেউ বা খুঁজছেন গুলবাহারের মতো প্রেমিকা! শুধু তাই নয়, গুলবাহারকে সাজাচ্ছেন নিজের কল্পনার মতো করে। আবার কেউ লিখছেন, ‘হোসনে আরা গুলবাহার—এক অসমাপ্ত প্রেমগাঁথা। গুলবাহার। সুন্দরী মেয়ে।

 

বাকের আলীর আদুরে মেয়ে। দেখতে সে অনন্য, অতুলনীয়। সে একদমই অপূর্ব, অনিন্দ্য ও মনোহরা। সে হচ্ছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্পের সংজ্ঞার মতো।

 

শেষ হইয়াও হইলো না শেষ।’

 

মাসদুয়েক আগে (১৭ মে) অন্তর্জালে রিলিজ হয়েছে ‘গুলবাহার’ শিরোনামের একটি গান। ঈশান মজুমদারের কথা ও সুরে গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন শুভেন্দু দাস শুভ ও ঈশান। এর সংগীত আয়োজন করেন শুভেন্দু দাস শুভ এবং গানের মিক্স ও মাস্টারিং করেছেন ইফতে খায়রুল আলম শুভ। গানটি রিলিজের দুই মাস হলেও গেল কয়েক দিন ধরে টিকটক, রিলসে গানটি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে।

 

গান ভিডিওটির গল্পে দেখা যায়, এক নির্বাসিত ভালোবাসার এক অপূর্ণ যাত্রার প্রতিচ্ছবি। গানের সুর গেয়ে ওঠে এক নিরাশ হৃদয়ের কথা, যে ভালোবেসে ফেলেছিল গুলবাহারকে। সেই গুলবাহার, যার রূপ এতটাই মুগ্ধকর যে তার পাশে তারারাও ম্লান হয়ে যেত। যে সৌন্দর্য কোনো শব্দে বর্ণনা করা যেত না, তা-ই যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে এই গানে। প্রতিটি রূপকথার মতোই, এই গল্পের শুরুটাও ছিল প্রথম দেখার সেই মন্ত্রমুগ্ধ করা মুহূর্ত দিয়ে। আর শেষটা হলো কিছু দুর্ভাগ্যজনক মোড়ে, যা ভালোবাসাকে এনে দিয়েছে এক অপূর্ণ পরিণতি।

কে এই গুলবাহার? 

গান ভিডিওতে গুলবাহার রূপে অভিনয় করেছেন মাধবী চক্রবর্তী। গানে গুলবাহার সম্পর্কে বলা হলেও গানের ভিডিও চিত্রে ‘গুলবাহার’ চরিত্রে যিনি অভিনয় করেছেন তার মুখ দেখানো হয়নি। বিষয়টি নিয়ে কেউ কেউ বলছেন, ‘এই গানে ‘গুলবাহার’-এর চেহারা ইচ্ছাকৃতভাবে আড়ালে রাখা হয়েছে, যেন প্রতিটি শ্রোতা গান শুনে নিজের কল্পনার গুলবাহারকে খুঁজে নেন। যাকে দেখা যায় না, কিন্তু অনুভবে যার উপস্থিতি ছড়িয়ে থাকে সুর জুড়ে!’ 

তবে গানটির গায়ক ও সুরকার ঈশান মজুমদারও গুলবাহার নিয়ে রহস্য জিইয়ে রাখলেন। খোলাসা করলেন না কিছুই। কালের কণ্ঠের সঙ্গে আলাপকালে শুধু এটুকুই বলেছেন, ‘গুলবাহার একটা কাল্পনিক চরিত্রও হতে পারে, আবার বাস্তবেও কারো সঙ্গে মিল থাকতে পারে; সেটা পরিষ্কার করতে চাই না। আমি চাই, মানুষ নিজেদের মতো করে ভেবে নিক।’

‘গুলবাহার’ গানটি এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইউটিউবে দেখেছে ২৮ লাখ ৬৪ হাজারেরও বেশি দর্শক এবং মন্তব্য করেছেন প্রায় দুই হাজার আটশরও বেশি। গুলবাহারের প্রতি আকর্ষণ ছাড়াও গানের প্রতি মুগ্ধতার কথাও জানিয়েছেন অনেকে। একজন লিখেন, ‘এই গানের প্রতিটা শব্দ যেন চোখের সামনে একটা গল্প এঁকে দেয়। গুলবাহার নামটার মধ্যেই যেন এক অদ্ভুত নস্টালজিয়া লুকিয়ে আছে। প্রেম, যন্ত্রণা আর ভালোবাসার মিশেলে এমনভাবে ফুটে উঠেছে, যা খুব কম গানে দেখা যায়।’

গান ও দর্শকের সাড়া প্রসঙ্গে ঈশান মজুমদার আরো বলেন, ‘আমার গান লেখালেখির একদম শুরুর দিকের একটি গান ‘গুলবাহার’। বরাবরই ইচ্ছা ছিল, এ রকম একটি গান তৈরির, যেটা সবাইকে কানেক্ট করতে পারবে। সেই চিন্তা-ভাবনা থেকে এক্সপেরিমেন্ট হিসেবেই গানটি লেখা ও সুর করা। আর এ গানের ধরন অনুযায়ী মিউজিকের জন্য শুভেন্দু দা (শুভেন্দু দাস শুভ) ছাড়া কাউকে কল্পনা করতে পারিনি। পরে দাদাকে রাজি করালাম, তিনি মিউজিক করলেন। এরপর ভিডিও। প্রকাশের পর বাকিটা তো সবার জানা। 

এখন সব জায়গায় ‘গুলবাহার’ বাজছে। রিল, শর্টস, আর্টওয়ার্ক এমনকি মিমও হচ্ছে। সেগুলো দেখে বেশ মজা পাচ্ছি। গানটির সঙ্গে আমরা যারা যুক্ত, সবাই ব্যাপারগুলো খেয়াল করছি। প্রত্যেকেই খুশি। এত ভালোবাসা তো আসলে প্রত্যাশাও করিনি। 

এই বিভাগের আরও খবর