img

ইসরায়েলের হুমকি বা আন্তর্জাতিক চাপের মুখে হিজবুল্লাহ অস্ত্র পরিত্যাগ বা আত্মসমর্পণ করবে না। ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীটির নতুন নেতা নাঈম কাসেম রবিবার এ কথা বলেছেন।

বৈরুতের দক্ষিণ উপশহরে আশুরা উপলক্ষে হাজারো সমর্থকের সামনে দেওয়া এক টেলিভিশন ভাষণে কাসেম বলেন, ‘এই হুমকি আমাদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করতে পারবে না।’

গত বছরের ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধের পর দায়িত্ব নেওয়া লেবাননের নতুন নেতারা একাধিকবার বলেছেন, দেশটিতে কেবল রাষ্ট্রেরই অস্ত্র বহনের অধিকার থাকবে।

 

পাশাপাশি তারা গত নভেম্বরের যুদ্ধবিরতির বাস্তবায়ন দাবি করেছেন, যা ওই সংঘাতের অবসান ঘটায়।

 

হাসান নাসরাল্লাহকে সেপ্টেম্বরে ইসরায়েল হত্যার পর হিজবুল্লাহর নেতৃত্ব নেওয়া কাসেম বলেন, তার দলের যোদ্ধারা কখনোই অস্ত্র ত্যাগ করবে না। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, আগে ইসরায়েলের ‘আগ্রাসন বন্ধ’ করতে হবে।

এই ভাষণ এমন এক সময় এলো, যখন মার্কিন দূত টম ব্যারাক সোমবার বৈরুতে সফরে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

 

অন্যদিকে লেবাননের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, ব্যারাকের অনুরোধ অনুযায়ী বছরের শেষ নাগাদ হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে দেশটির পক্ষ থেকে একটি জবাব দেওয়া হবে। এ ছাড়া দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েল সীমান্তবর্তী এলাকায় হিজবুল্লাহর সামরিক স্থাপনা ধ্বংস করার কথা জানিয়েছে লেবাননিজ কর্তৃপক্ষ।

তবে নভেম্বরের যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েল লেবাননে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের দাবি, তারা হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছে এবং বৈরুত যথাযথভাবে গোষ্ঠীটিকে নিরস্ত্রীকরণে ব্যর্থ বলেও অভিযোগ করছে।

 

চুক্তি অনুযায়ী, হিজবুল্লাহকে লিতানি নদীর উত্তরে, ইসরায়েলি সীমান্ত থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে নিজেদের যোদ্ধাদের সরিয়ে নিতে হবে। অন্যদিকে ইসরায়েলেরও লেবানন থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করার কথা ছিল। কিন্তু তারা পাঁচটি কৌশলগত স্থানে সেনা মোতায়েন রেখেছে।

কাসেম বলেন, ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলতে হবে, ‘দখলকৃত এলাকা থেকে সরে যেতে হবে, আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে...ও যুদ্ধের সময় ধরে নেওয়া বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে’ এবং লেবাননের পুনর্গঠন কাজ শুরু করতে হবে।

হিজবুল্লাহ নেতা আরো বলেন, ‘তখনই আমরা দ্বিতীয় ধাপে যেতে প্রস্তুত থাকব, যখন জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কৌশল নিয়ে আলোচনা হবে।’

এদিন আশুরার মিছিলে অংশ নেওয়া সমর্থকরা কালো পোশাকে বৈরুতের দক্ষিণ উপশহর দিয়ে মিছিল করেন। তাদের হাতে হিজবুল্লাহর পতাকা ছাড়াও লেবানন, ফিলিস্তিন ও ইরানের পতাকা ছিল। কেউ কেউ নিহত নেতা নাসরাল্লাহর ছবিও বহন করছিলেন।

কাসেম তার ভাষণে বলেন, তার দল ‘ইসরায়েলি শত্রুর সঙ্গে কোনো ধরনের স্বাভাবিক সম্পর্ক গ্রহণ করবে না’। এর আগে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, তার দেশ এ ধরনের সম্পর্ক স্থাপনে ‘আগ্রহী’। ইসরায়েলের সঙ্গে বাস্তবে এখনো যুদ্ধাবস্থায় থাকা লেবানন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

এদিকে ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সার সিরিয়াকেও সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আলোচনায় যুক্ত করার পর দেশটি জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য ‘এখনো সময় হয়নি’।

এই বিভাগের আরও খবর