img

নাইজেরিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ভাইরাল ভিডিওটিতে দেখা যায়, নারী কর্মীরা পরীক্ষা শুরুর আগে ছাত্রীদের স্তনে হাত দিয়ে পরীক্ষা করছেন তারা ব্রা পরেছেন কি না।

দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওগুন রাজ্যে অবস্থিত ওলাবিসি ওনাবানজো বিশ্ববিদ্যালয়ের (ওওইউ) ঘটনা এটি। পরীক্ষার সময় ব্রা পরা বাধ্যতামূলক—বিশ্ববিদ্যালয়টির এমন একটি নীতিমালার প্রয়োগ নিশ্চিত করতেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

তবে এই দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার হওয়ার পর লাখ লাখ মানুষ তা দেখেছে এবং তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা শুরু হয়েছে।

অনলাইনে এই ঘটনাকে কেউ কেউ পুরনো ধ্যান-ধারণা থেকে জন্ম নেওয়া, লিঙ্গবৈষম্যমূলক আচরণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, আবার অনেকেই একে যৌন হয়রানির শামিল বলেছেন। এক্সে কায়শেইলা নামের একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘এটা তো নিপীড়ন। মানুষ ব্রা না পরার নানা ব্যক্তিগত কারণ থাকতে পারে।

’ আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন। এদের বিরুদ্ধে মামলা করো!!!’

 

তবে এ বিষয়ে একদল ব্যবহারকারী ভিন্ন মত পোষণ করেছেন। তাদের মতে, ব্রা ছাড়া কোনো নারীর জনসমক্ষে যাওয়া অনুচিত, তাই এমন পরীক্ষা গ্রহণযোগ্য।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইউনিয়নের সভাপতি মুইজ ওলাতুঞ্জি এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জানিয়েছেন, “ওওইউতে ‘নো ব্রা, নো এন্ট্রি’ কোনো নতুন নীতি নয়।”

 

তিনি আরো বলেন, ‘ওলাবিসি ওনাবানজো বিশ্ববিদ্যালয় একটি নির্দিষ্ট পোশাকবিধি অনুসরণ করে, যার উদ্দেশ্য সম্মানজনক ও মনোযোগ-বিক্ষিপ্তমুক্ত শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখা। শিক্ষার্থীদের সংযত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যবোধ অনুযায়ী পোশাক পরতে উৎসাহিত করা হয়।’

ওলাতুঞ্জি জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন তারা এমন পোশাক পরিহার করেন, যা ‘বিপরীত লিঙ্গের অপ্রয়োজনীয় কামনা উদ্দীপিত করতে পারে’। তবে তিনি এ-ও জানিয়েছেন, ইউনিয়ন বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসবে এবং পোশাকবিধি বাস্তবায়নে আরো সম্মানজনক ও মার্জিত উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে।

এদিকে এই বিতর্ক নিয়ে এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি।

উল্লেখ্য, নাইজেরিয়ার বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়েই ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পোশাকবিধি রয়েছে, যদিও তা কোথাও কঠোর, কোথাও তুলনামূলক শিথিল। নারীদের জন্য মিনি স্কার্ট নিষিদ্ধ থাকাটা অনেক জায়গায় সাধারণ বিষয়, একইভাবে পুরুষদের ক্ষেত্রে ড্রেডলক বা কানে দুল পরা নিষিদ্ধ।

ধর্মীয় ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতে নাইজেরিয়া বরাবরই একটি রক্ষণশীল দেশ হিসেবে পরিচিত, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায়। দেশটির প্রায় ৫৩.৫ শতাংশ মানুষ মুসলিম ও প্রায় ৪৪ শতাংশ খ্রিস্টান, ফলে সামাজিক রীতিনীতিতে রক্ষণশীলতা স্পষ্টভাবেই প্রতিফলিত হয়।

এই বিভাগের আরও খবর


সর্বশেষ