img

বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘তথ্য এখন জাতীয় নিরাপত্তার কৌশলগত অস্ত্র। জাতীয় নিরাপত্তা এখন শুধু অস্ত্রের ওপর নির্ভর করে না, এটি জনমতের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।’

তিনি আজ মিরপুরের ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে (এনডিসি) আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে এনডিসি এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (বিপিএসএস)।

 

উপদেষ্টা বলেন, ‘তথ্য যদি গোপন রাখা হয়, সত্য যদি দমন করা হয়, তাহলে আমরা টেকসই উন্নয়ন ও নিরাপত্তা—দুটোই হারাব। এই আলোচনার মাধ্যমে আমরা যেন একটি তথ্য ভিত্তিক, সুরক্ষিত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ার পথে আরো এক ধাপ এগিয়ে যেতে পারি ‘

‘অ্যাডভান্সিং ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ইউজ অব ইনফরমেশন এজ আ পাওয়ারফুল ট্রাটেজিক টুল’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি আরো বলেন, ‘বিভ্রান্তিকর তথ্য একটি মনস্তাত্ত্বিক অস্ত্র। এটি মোকাবেলায় চাই সত্য, আস্থা এবং তথ্যভিত্তিক সচেতনতা। এ জন্য জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

 

উপদেষ্টা বলেন, ‘১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধ আমাদের ইতিহাসে এক ট্র্যাজেডি। ৫০ হাজার সৈন্য নিয়ে পরাজয়ের অন্যতম কারণ ছিল ভুল তথ্য ও ষড়যন্ত্র। আজকের দিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো গুজব ঠিক তেমনি জাতীয় নিরাপত্তা ও উন্নয়নকে হুমকির মুখে ফেলছে।’

তিনি বলেন, ‘তথ্যের স্বতঃপ্রণোদিত প্রকাশ নিশ্চিত না হলে জনগণ সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, ফলে গুজবই সমাজে চালিকা শক্তি হয়ে ওঠে।

রাষ্ট্রের প্রকল্পের খরচ হয় জনগণের টাকায়। তাই জনগণের উচিত সেই প্রকল্প সম্পর্কে জানা। উপদেষ্টা জলবায়ু সংকটকে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি আমাদের এক-তৃতীয়াংশ ভূখণ্ডকে ডুবিয়ে দিতে পারে।’

 

তিনি আরো বলেন, ‘তথ্য শুধু প্রযুক্তি দিয়ে নয়, লোকজ জ্ঞান দিয়েও গঠিত। অনেক ক্ষেত্রে গ্রামের মানুষদের পূর্বাভাস বেশি কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।

 

তিনি জানান, ‘যুক্তরাজ্য বাংলাদেশকে স্যাটেলাইটভিত্তিক তথ্য ও প্রশিক্ষণ সহায়তা দিতে প্রস্তুত। এখন প্রয়োজন সেই তথ্য বিশ্লেষণের সক্ষমতা গড়ে তোলা এবং তা সাধারণ মানুষের কাছে সহজভাবে পৌঁছে দেওয়া।’

ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কমান্ড্যান্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ শাহীনুল হক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

চারজন অংশগ্রহণকারী মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা, কূটনীতিক, শিক্ষাবিদ, অংশগ্রহণকারী এবং উন্নয়ন পেশাদাররা উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর


সর্বশেষ