img

লর্ডসের ঐতিহাসিক মঞ্চে দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাস গড়ার নায়ক এইডেন মারক্রাম। চরম চাপ, টেস্ট ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ফাইনাল, আর সামনে বিশ্বসেরা বোলিং আক্রমণ—সব কিছু যেন বুক চিতিয়ে সামলে নিলেন মারক্রাম। ১৩৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে দলকে শুধু জয়ই এনে দেননি, ২৭ বছর দক্ষিণ আফ্রিকাকে এনে দিয়েছেন বহু আকাঙ্ক্ষিত আইসিসি ট্রফি।

চতুর্থ দিনে জয়ের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার ছিল ৬৯ রান।

ধীরে ও হিসেবি ব্যাটিংয়ে শুরু করলেও লক্ষ্য পূরণে তারা ছিল আত্মবিশ্বাসী। আগের দিন অপরাজিত থাকা মারক্রাম শুরু থেকেই খেলেছেন ধৈর্যের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে। নিখুঁত টেম্পারামেন্টে জয়ের দিগন্তে পৌঁছে দেন দলকে। যদিও অন্য প্রান্তে দুই সঙ্গীকে হারিয়েছেন তিনি।

 

দিনের শুরুতেই কামিন্সের বলে মাত্র ১ রান যোগ করেই আউট হয়ে যান দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা (৬৬), যিনি আগের দিন হামস্ট্রিং ইনজুরির নিয়ে দারুণ এক লড়াকু ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন। এই উইকেটের মধ্য দিয়েই ১৪৭ রানে শেষ হয় ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া তৃতীয় উইকেট জুটি। পরে স্টাবস বিদায় নেন দ্রুত সময়ে।  

কিন্তু এক প্রান্ত আগলে রানের চাকা ঘোরাতে থাকেন মারক্রাম।

কখনো কাট, কখনো ড্রাইভ—চারদিকে ছড়িয়ে দেন স্ট্রোকের ফুলঝুরি। ফ্লিকে চার মেরে আগের দিন পূর্ণ করেন সেঞ্চুরি। আউট হওয়ার ওভারে হ্যাজলউডের নতুন বলকেও বাউন্ডারিতে স্বাগত জানান। যদিও ওই ওভারের শেষ বলে আবারও বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে বিদায় নিতে হয় তাকে—ততক্ষণে জয়ের কাজ প্রায় শেষ।

 

মারক্রাম যখন বিদায় নিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরছেন তখন লর্ডসের গ্যালারি উঠে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে এক নায়ককে।

অস্ট্রেলিয়ানরাও হাততালি দিয়ে জানান দিচ্ছেন এই ইনিংসের মাহাত্ম্য। তিন অঙ্ক পার করে ১৩৬ রান করে ফিরেছেন তিনি, খেলেছেন ২০৭ বল, মেরেছেন ১৪টি চার।

 

এটাই তো দক্ষিণ আফ্রিকার স্বপ্নপূরণের গল্প। যেখানে ব্যর্থতার ছায়া দীর্ঘদিন তাড়া করত তাদের আইসিসি আসরে, সেই দল এখন বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়ন —আর এই রূপকথার কেন্দ্রে আছেন মারক্রাম। হয়তো ভবিষ্যতে আরো অনেক নাম আসবে, কিন্তু লর্ডসে মারক্রামের এই ইনিংস প্রোটিয়া ক্রিকেটের ইতিহাসে রয়ে যাবে এক অবিস্মরণীয় মহাকাব্য হয়ে।

এই বিভাগের আরও খবর