গোলরক্ষক ‘৮ সেকেন্ড’-এর বেশি বল ধরে রাখলেই কর্নার

২০২৫ সালের ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রে এখন এক ছাদের নিচে জড়ো হয়েছেন বিশ্বের ৪১টি দেশের ১১৭ জন রেফারি, সহকারী রেফারি এবং ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর)। তবে এবার শুধু খেলা পরিচালনাই নয়, তাদের উপর দেওয়া হয়েছে নতুন দায়িত্ব ও নিয়ম বাস্তবায়নের ভারও।
ফিফা এবারের ক্লাব বিশ্বকাপে বেশ কিছু নতুন নিয়ম চালু করেছে, যা ‘দর্শকদের অভিজ্ঞতা উন্নত করা, স্বচ্ছতা বাড়ানো এবং খেলার গতি বজায় রাখা’র লক্ষ্যে তৈরি। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো গোলরক্ষকদের জন্য প্রবর্তিত ‘৮ সেকেন্ড’ নিয়ম।
কী এই নতুন নিয়ম?
ফুটবলে সময় নষ্ট করাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলে আসছে। এগিয়ে থাকা দলের গোলরক্ষককে হরহামেশাই দেখা যায় অকারণে সময় নষ্ট করতে। আন্তর্জাতিক ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বোর্ড (আইএফএবি) ২০২৪ সালের মার্চে সময়ক্ষেপণ রোধে ল’ ১২.২-এ একটি সংশোধন আনে। সেখানে বলা হয়— গোলরক্ষক যদি বল হাতে নেওয়ার পর ৮ সেকেন্ডের মধ্যে তা মাঠে ছাড়তে না পারেন, তাহলে প্রতিপক্ষ দলকে কর্নার কিক দেওয়া হবে।
তবে এ নিয়ম এবার প্রথমবারের মতো ক্লাব বিশ্বকাপ ও ইউরোপিয়ান অনূর্ধ্ব-২১ চ্যাম্পিয়নশিপে পরীক্ষামূলকভাবে কার্যকর হচ্ছে।
রেফারিরা মাঠে গোলরক্ষক বল ধরার পর থেকে সময় গণনা শুরু করবেন। বল ছাড়ার জন্য শেষ ৫ সেকেন্ড বাকি থাকতে রেফারি হাত উঁচিয়ে ইঙ্গিত দেবেন। তবে, যদি কোনো ফরোয়ার্ড খেলোয়াড় ইচ্ছাকৃতভাবে গোলরক্ষককে বাধা দেন, তাহলে উল্টোভাবে সেই ফরোয়ার্ডের বিরুদ্ধে পরোক্ষ ফ্রি কিক দেওয়া হবে।
ফিফার রেফারি কমিটির প্রধান এবং বিখ্যাত সাবেক রেফারি পিয়ারলুইজি কোলিনা জানিয়েছেন, ‘অনেক লিগে দেখা যায়, গোলরক্ষক ২০ থেকে ২৫ সেকেন্ড পর্যন্ত বল হাতে রাখেন। এটা ম্যাচের গতি নষ্ট করে। দর্শকের জন্যও এতে কোনো বিনোদন নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন নিয়ম থাকা সত্ত্বেও তা বাস্তবে কার্যকর করা হচ্ছিল না। এবার থেকে তা কঠোরভাবে মানা হবে।’
এর প্রভাব কী হতে পারে?
নতুন এই নিয়মে খেলোয়াড়দের সিদ্ধান্ত নেওয়ার গতি বাড়বে এবং ম্যাচের গতি ধরে রাখা সহজ হবে। একইসঙ্গে গোলরক্ষকদের অহেতুক সময়ক্ষেপণ ঠেকানো যাবে। নিয়মটি বাস্তবায়নে রেফারিদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হবে এবং মাঠে নতুন এক আবহ তৈরি হবে, যা ফুটবলকে আরও গতিশীল ও উপভোগ্য করে তুলবে।