তেহরান কি আসলেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাছাকাছি?

ইরানের রাজধানী তেহরানের বিভিন্ন শহরে গত শুক্রবার বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচির মূল কেন্দ্র লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক বোমা তৈরির গোপন কর্মসূচি বন্ধে আগাম ব্যবস্থা হিসেবে এ হামলা চালানো হয়েছে। তাঁর দাবি, তেহরান ইতিমধ্যে ৯টি পারমাণবিক বোমা তৈরির সক্ষমতা অর্জন করেছে।
তবে নেতানিয়াহুর সমালোচকেরা বলছেন, তিনি মূলত অন্য কিছু প্রতিরোধ করতে আগাম পদক্ষেপ নিয়েছেন। সেটা হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা নস্যাৎ করা কিংবা নেতানিয়াহু সরকারের পতন ঠেকানো।
মূলত ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তথ্যের ভিত্তিতে নেতানিয়াহু ইরান সম্পর্কে এমন দাবি করেছেন। ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা কিংবা আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) চেয়েও বেশি তথ্য রাখে বলে ধারণা করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড গত ২৫ মার্চ সিনেটের গোয়েন্দা কমিটিকে জানিয়েছেন, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মূল্যায়ন অনুযায়ী ইরান বর্তমানে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করছে না। তবে গ্যাবার্ড বলেছেন, ইরানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত বর্তমানে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে, যা কোনো পারমাণবিক অস্ত্রহীন দেশের ক্ষেত্রে নজিরবিহীন।
চলতি সপ্তাহে আইএইএ ২২ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে এমন কিছু বলা হয়নি, যাতে বোঝা যায় ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
বরং এতে উল্লেখ করা হয়েছে, তারা ইরানের বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পর্কে বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ করতে পারেনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি বেসামরিক উদ্দেশ্যে সীমাবদ্ধ কি না, তা যাচাই করতে পারেনি আইএইএ। তবে ইরান শিগগিরই একটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারে, এমন কোনো কথা প্রতিবেদনে বলা হয়নি।
সূত্র : গার্ডিয়ান