img

মার্কিন সেনাবাহিনী ট্রান্সজেন্ডার সেনাদের ব্যক্তিগত রেকর্ডে কেবলমাত্র তাদের জন্মগত লিঙ্গ উল্লেখ কর—এমন অভ্যন্তরীণ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স  নির্দেশনাটি দেখেছে বলে তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীতে থাকা ট্রান্সজেন্ডার সেনাদের ধাপে ধাপে বাহিনী থেকে বাদ দেওয়ার লক্ষ্যে এসব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

১৪ পৃষ্ঠার ওই স্মারকে বলা হয়েছে, ‘সকল ব্যক্তির জন্য কর্মীবাহিনী ও প্রশাসনিক রেকর্ডে তাদের জন্মগত লিঙ্গ জানাতে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে কমান্ডাররা।

’ এ ছাড়াও সেনাবাহিনী মনে করে, একজন ব্যক্তির লিঙ্গ অপরিবর্তনীয়’—যা ২৬ ফেব্রুয়ারির প্রতিরক্ষা বিভাগের এক মেমোরান্ডামের সুরে সুর মিলিয়ে বলা হয়েছে।

 

সেনাবাহিনী থেকে বাদ দেওয়ার প্রস্তুতি

এই নীতিমালার পেছনে রয়েছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের নীতিগত অবস্থান, যা সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়কে কেন্দ্র করে বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। মে ৮ তারিখে রয়টার্স প্রথম জানায়, ৬ জুনের মধ্যে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করা ট্রান্সজেন্ডার সেনাদের বাধ্যতামূলকভাবে সরিয়ে দেওয়া হবে। মে ১২ তারিখে প্রকাশিত আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রান্সজেন্ডার সেনাদের জন্য জেন্ডার-আফার্মিং স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করে দেওয়া হবে।

 

সেনাবাহিনীর নতুন এই নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, উপসর্গ ও সর্বনাম ব্যবহারের ক্ষেত্রেও জন্মগত লিঙ্গ অনুসরণ করতে হবে। যেমন, সিনিয়র অফিসারকে সম্বোধনের ক্ষেত্রে ‘স্যার’ বা ‘ম্যাম’ বলা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ ছাড়াও সেনাবাহিনীর ‘ইনটিমেট স্পেস’ বা যৌথ ব্যবহারের ব্যক্তিগত স্থানগুলো (যেমন টয়লেট, চেঞ্জিং রুম) পুরুষ, নারী, বা পারিবারিক ব্যবহারের জন্য পৃথকভাবে নির্ধারণ করা হবে এবং সেই ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হবে জন্মগত লিঙ্গ অনুসারে।

ট্রান্সজেন্ডার সেনা সংখ্যা ও প্রতিক্রিয়া

সরকারি হিসাবে বর্তমানে ৪ হাজার ২৪০ জন ট্রান্সজেন্ডার সেনা সদস্য সক্রিয় ডিউটি বা ন্যাশনাল গার্ডে কর্মরত রয়েছেন।

তবে অধিকারকর্মীদের মতে এই সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে।
প্রো-এলজিবিটিকিউ আইন সহায়ক সংস্থা ‘গ্ল্যাড ল’-এর সিনিয়র ডিরেক্টর জেনিফার লেভি বলেন, ‘এই নির্দেশনাগুলো প্রতিহিংসাপরায়ণ ও আক্রমণাত্মক। একইসঙ্গে এগুলো বিশৃঙ্খলভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, যা নিঃসন্দেহে সামরিক প্রস্তুতির ক্ষতি করছে।’

 

জনমত ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে তার পূর্বসূরি জো বাইডেনের সময় চালু হওয়া ট্রান্সজেন্ডারদের খোলা মনে সেনাবাহিনীতে সেবা দেওয়ার নীতি বাতিল করেন।  এক জরিপে দেখা গেছে, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৫৮শতাংশ আমেরিকান খোলামনে ট্রান্সজেন্ডারদের সেনাবাহিনীতে সেবা দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।

তবে ২০১৯ সালে এই সমর্থনের হার ছিল ৭১শতাংশ।

 

সূত্র : রয়টার্স

এই বিভাগের আরও খবর