মার্কিন ডলারের দরপতনের আশঙ্কা থাকলেও স্বর্ণের ভবিষ্যৎ নিরাপদ

বর্তমানে সোনার বাজার কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে। প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩ হাজার ২০০ ডলারের নিচে নেমে এসেছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, মূল্যস্ফীতি (ইনফ্লেশন) ও যুক্তরাষ্ট্রের ধীরগতি অর্থনীতির কারণে ডলারের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে, আর এতে করে ভবিষ্যতে সোনার দাম আবার বাড়তে পারে।
স্টেট স্ট্রিট গ্লোবাল অ্যাডভাইজরস-এর প্রধান স্বর্ণ বিশ্লেষক জর্জ মিলিং স্ট্যানলি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাণিজ্য নীতিতে একবার একরকম, আবার অন্যরকম সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যার ফলে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে এবং এটি মূল্যস্ফীতিকে বাড়িয়ে দিতে পারে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আগামী ৯০ দিনের জন্য চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক কমাবে বলে জানিয়েছে। এতে করে বাজারে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্ক কিছুটা কমেছে এবং ‘নিরাপদ সম্পদ’ হিসেবে স্বর্ণের চাহিদা কমেছে। ফলে এখন সোনার দাম কমে দাঁড়িয়েছে প্রতি আউন্স ৩ হাজার ১৮৬ ডলারে, যা গত পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে কম।
গত মাসে সোনার দাম সর্বোচ্চ ছিল ৩ হাজার ৫০০ ডলার।
তবে স্ট্যানলি বলেন, এখনো তিনি সোনার দাম বাড়বে বলে বিশ্বাস করেন, কারণ ডলারের মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা খুব একটা নেই। ডলার সূচক (ডলার ইনডেক্স) কিছুটা বেড়ে ১০০.৯৪ পয়েন্টে গেলেও স্থিতিশীল নয় এবং ওঠানামা করছে।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও নীতির কারণে ডলার শক্তিশালী হবে না।
বরং উচ্চ মূল্যস্ফীতি, কম অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং দুর্বল ডলার—সব মিলিয়ে স্বর্ণের জন্য এগুলো ভালো লক্ষণ।’
সাধারণভাবে মূল্যস্ফীতি বাড়লে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়িয়ে থাকে, এতে ডলার শক্তিশালী হয়। কিন্তু এখন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ধীর হচ্ছে, তাই ফেডারেল রিজার্ভ (মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক) সুদের হার কমানোর দিকে যেতে পারে, বিশেষ করে বেকারত্ব বাড়লে।
স্ট্যানলি আরো বলেন, ‘এই বছর যুক্তরাষ্ট্র মন্দার মুখে পড়বে কি না, তা আমি জানি না। তবে এটা অনেকেই এখন জানতে চাইছে।
” বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা আশাবাদ দেখা দিলেও তিনি মনে করেন, স্বর্ণের ‘নিরাপদ আশ্রয়’ হিসেবে চাহিদা এখনই কমবে না।
তিনি বলেন, ‘অনেকেই এখন স্বর্ণ কিনছেন নিরাপত্তার জন্য, দ্রুত মুনাফার আশায় নয়। দীর্ঘ সময় ধরে স্বর্ণ উচ্চ মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে, শেয়ারবাজার দুর্বল হলে বা যুদ্ধ-সংঘাত হলে একটি নিরাপদ সম্পদ হিসেবে কাজ করে। এসব কারণে স্বর্ণের চাহিদা এখনো কমবে না।’
সূত্র : কিটকো নিউজ।