মেক্সিকোতে নির্বাচনি প্রচারণা চলাকালীন গুলি করে মেয়র প্রার্থীকে হত্যা

মেক্সিকোর ভেরাক্রুজ রাজ্যের টেক্সিস্টেপেক শহরে এক আনন্দঘন নির্বাচনি মিছিল মুহূর্তেই রূপ নেয় ভয়াবহ সহিংসতায়। স্থানীয় সময় রোববার রাতে মেয়র পদপ্রার্থী ইয়েসেনিয়া লারা গুতিয়েরেস সহ চারজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, র্যালি থেকে প্রচার করা লাইভ ভিডিওতে দেখা যায়, মোরেনা দলের প্রার্থী ইয়েসেনিয়া লারা গুতিয়েরেস সমর্থকদের সাথে হাসিমুখে শহরের রাস্তা ধরে মিছিল করছেন। চারপাশে ছিল উল্লাস, স্লোগান আর জনসমাগম।
কিন্তু হঠাৎ করেই গুলির শব্দ ভেসে আসে। প্রায় বিশটির মতো গুলির শব্দ শোনা যায় লাইভ ভিডিওতে, যা এখনও লারার ফেসবুক পেজে আছে।
এক সংবাদ সম্মেলনে সোমবার (১২ মে) সকালে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউম এই হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
শেইনবাউম জানান, ঘটনার পেছনের কারণ এখনো জানা যায়নি, তবে ফেডারেল সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হচ্ছে এবং ভারাক্রুজ রাজ্য সরকার ও অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে তদন্ত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
শেইনবাউম আরো বলেন, 'আমরা নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করছি এবং নির্বাচনি সময়কে সামনে রেখে ভেরাক্রুজ ও দুরাঙ্গোর মতো রাজ্যে সব ধরনের সহায়তা নিশ্চিত করছি।'
ভেরাক্রুজ রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় জানিয়েছে, হামলায় লারা গুতিয়েরেসসহ চারজন নিহত এবং আরও তিনজন আহত হয়েছেন। প্রাথমিক তদন্ত চলছে এবং দোষীদের খুঁজে বের করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ভেরাক্রুজের গভর্নর রোসিও নাহলে এক্স -এ দেওয়া এক পোস্টে বলেন, 'কোনো পদ বা দপ্তর কোনো মানুষের জীবনের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নয়।
টেক্সিস্টেপেকে মোরেনা দলের প্রার্থী ও সমর্থকদের উপর চালানো এই কাপুরুষোচিত হামলার বিচার হবেই।'
মেক্সিকোতে নির্বাচনি সময়ের রাজনীতিকদের উপর হামলা নতুন কিছু নয়। মানবাধিকার সংগঠন ডেটা সিভিকা-এর তথ্য অনুযায়ী, গত বছর মেক্সিকোজুড়ে রাজনৈতিক-অপরাধজনিত সহিংসতায় রেকর্ডসংখ্যক ৬৬১টি হামলার ঘটনা ঘটেছে, যার বেশিরভাগই ছিল পৌরসভা পর্যায়ের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে।
এপ্রিল-মে মাসেও আরও বেশ কয়েকটি ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটেছে। গেরেরো রাজ্যে একজন মেয়র পদপ্রার্থী প্রচারের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
এর কয়েকদিন পর মিচোয়াকানের কোটিজা শহরের মেয়রকেও হত্যা করা হয়। গত অক্টোবরে গেরেরোর রাজধানী চিলপানসিঙ্গোর মেয়রকে দায়িত্ব নেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে হত্যা করা হয়েছিল।