দর্শকরা যেন আমাদের এক্সপ্লোর করার স্বাধীনতাটুকু দেয়: জেফার

জেফার রহমান, বাংলাদেশের প্রথম ইউটিউব বেইজড মিউজিশিয়ান। যিনি একাধারে গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক। ইংরেজি গান গেয়েই মূলত আলোচনায় আসেন তিনি। তবে এখন বাংলা গানেও তিনি অনন্য, একইসঙ্গে জনপ্রিয়।
নিজস্ব স্বকীয়তা, ভিন্ন গায়কী আর ফ্যাশন স্টেটমেন্ট দিয়ে সহজেই সবার থেকে নিজেকে আলাদা হিসেবে তৈরি করতে পেরেছেন।
গানের বাইরে তিনি এখন অভিনয়েও সরব। মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘লাস্ট ডিফেন্ডারস অব মনোগামী’, শিহাব শাহীনের ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন-২’ এর পর জেফার এবার আসছেন নতুন ওয়েব ফিল্ম ‘তুমি আমি শুধু’ নিয়ে। এরমধ্যে উন্মুক্ত হয়েছে তার নতুন গান ‘তীর’।
গান, অভিনয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছে কালের কণ্ঠ বিনোদন।
বিধেছে ‘তীর’
মানুষ কীভাবে নিবে, আমি সত্যি জানিনা। এটা আমার একটা প্যাশন প্রজেক্ট ছিল, যার কারণে টিমের সবাই আমার পাগলামিতে সায় দিয়েছে। ‘তীর’ খুবই এক্সপেরিমেন্টাল একটা গান।
ভোকালের পাশাপাশি এটার কম্পোজিশন, ভিডিও কনসেপ্ট আমার ছিল। এখন আমরা যেসব গান করি সেক্ষেত্রে চিন্তা করি, গানটা শ্রোতাদর্শকরা কতটা পছন্দ করবে বা করবে না। কিন্তু ‘তীর’ একদমই এরকম প্রজেক্ট না। দর্শক কতটা পছন্দ করবে সে চিন্তা করে এই গানটি বানাই নি। গানটা তৈরি করেছিলাম ২০২১ সালে এবং ভিডিওটা ২০২৪ সালের জুনে, ঠিক এক বছর আগে।
গানের স্টাইলটা একটু ভিন্ন। বাংলা ট্র্যাডিশন রেখেছি, মিউজিকটা আবার অন্য ঘরানার।
আবারও শিহাব শাহীনের ওয়েব ফিল্মে
হ্যাঁ। এটা আরও বেশ আগের প্রজেক্ট, বছর দুয়েক হবে। এরমধ্যে আমিও ব্যস্ত ছিলাম, অন্যদিকে শিহাব শাহীন ভাইয়াও তার অন্যান্য প্রজেক্ট নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। উনি তো অনেক ব্যস্ত একজন নির্মাতা। ‘তুমি আমি শুধু’ নিয়ে কথা বলতে গিয়েই উনার সঙ্গে ‘দাগি’ সিনেমার গান এবং ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন-২’-তে অভিনয় করা হয়। যার কারণে সবকিছু মিলিয়ে দেরি হলো। অবশেষে শুরু হচ্ছে। আমরা আমাদের মতো করে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
প্রীতম হাসানের সঙ্গে অভিনয়ে প্রথম জুটি
প্রীতম এবং আমি দুজনেই গানের মানুষ, খুব ভালো বন্ধু। গানের পাশাপাশি প্রীতম এখন নিয়মিত অভিনয় করছে আর আমি শুরু করেছি। দুজন গানের মানুষ এবার অভিনয়ে জুটি হচ্ছি, সেটা আমাদের জন্য একইসঙ্গে চ্যালেঞ্জিং, পাশাপাশি ইন্টারেস্টিং। দুজনের ব্যাকগ্রাউন্ড যেহেতু এক সেহেতু এখানে একটা ইন্টারেস্টিং কিছুই হবে, এরকম চিন্তা করেই এই জুটিকে নিয়ে নির্মাতার পরিকল্পনা। নির্মাতা যেহেতু শিহাব শাহীন, সেখানে অবশ্যই ভালো কিছু হবে এটা বলা যায়।
গানে যার ব্যস্ততা তুঙ্গে, সে এখন অভিনয়েও নিয়মিত
আমার প্রথম অভিনয় ছিল মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘লাস্ট ডিফেন্ডারস অব মনোগামী’। এই কাজটা নিয়ে অভিনয়ের জন্য অনেক প্রশংসা পেয়েছি আমি। কাজটা যখন করি তখনও কিন্তু জানতাম না কী হবে। পরে এই জায়গাটা ভালো লাগতে শুরু করলো, এরপর অনেক পরিচালকই বিভিন্ন চরিত্রে আমাকে ভাবতে শুরু করলেন। শিহাব শাহীন তো একজন পরীক্ষিত, ভালো নির্মাতা। আমি যেহেতু এখন শিখছি তাই শুরুর দিকটাতে আমার জন্য ভালো পরিচালকই প্রয়োজন। শুরুটা ফারুকী ভাইয়ের মতো লেজেন্ডারি পরিচালক, এরপর শিহাব শাহীন। সেদিক থেকে আমি ভীষণ ভাগ্যবতী। যেহেতু অভিনয়ে আমি একদমই নতুন সেখানে এটা আমার জন্য বিশাল সুযোগ। এখন আমি সেই সুবিধাটাই নিচ্ছি।
অভিনয়েও মন ছুঁতে চান দর্শকের
আমি সবসময় চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি। গানের মানুষ হিসেবেও আমি এটাই করে আসছি, এখন অভিনয়টা আমার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ, নতুন এক্সপেরিমেন্ট। অভিনয় করতে করতে যে এই জায়গাটা ভালো লেগে যাবে সেটা তো আগে বুঝিনি, এখন বুঝতেছি। আমার কাছে ভালোই লাগে ব্যাপারটা। গানের মতো করে অভিনয়েও দর্শকের মনে জায়গা করে নিতে চাই।
সমালোচনা কখনোই বিচলিত করে না
দর্শকরা অনেক কিছুই বলতে পারে। যেহেতু আমরা পাবলিক ফিগার, আমাদের কাজের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও তারা কথা বলবে, এটাই স্বাভাবিক। আমরা আমাদের কাজটা করে যাই, সবকিছু যে একদম টার্গেটেড হবে এমনটাও না। আমি একদমই নতুন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন-২’-এ আমার পার্ট ছিল একদমই ছোট, সেখানে আমার আর করার মতো কিছুই ছিল না তারপর ‘মনোগামি’-তেও অভিনয় নিয়ে তেমন নেগেটিভ কিছু শুনিনি। আমার মধ্যে সেই পটেনশিয়ালিটি আছে বলেই হয়তো পরিচালকরা আমাকে নিয়ে ভাবছেন।
‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন-২’ নিয়ে কোনো সমালোচনা আমার চোখে পড়েনি। এটার পুরো গল্পই ছিল অ্যালেন স্বপনকে ঘিরে, আমি সেখানে নতুন একটা মুখ ছিলাম। একটা অংশ ছিলাম, বলতে পারেন। এটাতে প্রশংসা করার মতোও কিছু ছিল না, আবার সমালোচনা করার মতোও কিছু ছিল না। আমি শুধু আমার পার্টটুকুই করেছি। যদি সিজন-৩ আসে তাহলে সেটাই বলে দিবে, আমার চরিত্রটা কতটুকু যেতে পারতো বা আমি কী করতে পারতাম!
দর্শকদের জন্য বার্তা
দর্শকরা কাজ দেখবে তারপর সেটা নিয়ে তাদের মতামত জানাবে, এটাই স্বাভাবিক। আমার মনে হয় দর্শকদের আরও ওপেন মাইন্ডেড হওয়া উচিত। গান হোক কিংবা অভিনয়, যেহেতু আর্টিস্ট আমরা সেটাকে আর্টিস্টিক ওয়েতেই উপস্থাপন করছি বা সামনেও করব। সেটা এক্সপ্লোর করতে দর্শক যেন আমাদেরকে স্বাধীনতাটুকু দেয়।