ডিপিএলে সন্দেহজনক আউট, ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ইমরুল কায়েসের

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) আলোচনার খোরাক হয়েছে শাইনপুকুরের বিপক্ষে গুলশানের গতকালের ম্যাচটি। প্রশ্ন উঠেছে ম্যাচের দুটি আউট নিয়ে। এই ম্যাচে স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়ে আউট হন শাইনপুকুরের দুই ব্যাটার রহিম আহমেদ ও মিনহাজুল আবেদিন সাব্বির। সন্দেহের তীর তাদের আউটকে ঘিরেই।
তাদের আউটের ফুটেজ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে যাওয়ার পর শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা। ক্রিকেটারদের অনেকেই এটাকে বলছেন লজ্জাজনক।
আরেকটি দলকে সুপার সিক্সে উঠতে না দিতে শাইনপুকুর ইচ্ছে করে ম্যাচ ছেড়ে দিয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ করেছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাবেক ইমরুল কায়েস। তার প্রশ্ন কাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে দেশের পতাকা? ক্রিকেটার শামসুর রহমান শুভ লিখেছেন, ‘সত্যি লজ্জা!’
ব্যাটার রহিম বাঁহাতি স্পিনার নিহাদুজ্জামানের বল বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টা করেছিলেন।
তবে সিঙ্গল বের করার জন্য রহিম ক্রিজ ছেড়ে যতটুকু বের হয়ে এসেছিলেন, সন্দেহটা সেখানে। তার সতীর্থ মিনহাজুলের আউটের ধরন আরো বিস্ময় ছড়িয়েছে নেটিজেনদের মাঝে। অফ স্পিনার নাঈম ইসলামের ওয়াইড বলটা বেরিয়ে এসে খেলতে চেয়েছিলেন মিনহাজুল।
তবে বল অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে থাকায় কোনো শট খেলেননি তিনি।
শুধু তা-ই নয়, নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা থেকে বিরত থেকে ব্যাট ক্রিজের ভেতরে না ঢুকিয়ে সরিয়ে ফেলেন। ওই সময় হাঁটু গেড়ে যেন তিনি নিজের আউট হওয়া দেখছিলেন মিনহাজুল! প্রথমবারের চেষ্টায় স্টাম্প ভাঙতে না পারা গুলশানের উইকেটরক্ষক আলিফ হোসেন দ্বিতীয়বারে সফল হন। ওই সময় জয়ের জন্য ১ উইকেট হাতে রেখে ৪২ বলে শাইনপুকুরের দরকার ছিল ৭ রান। মিনহাজুল আউট হলে গুলশান ম্যাচ জেতে ৫ রানে।
এই ঘটনায় ফেসবুকে তীব্র ভাষায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইমরুল।
তিনি এই ম্যাচ আরও একবার আয়োজনের দাবিও তুলেছেন, ‘আজকে আমি হৃদয় থেকে ক্ষোভ নিয়ে কিছু কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি। মিডিয়া, ক্রিকেটার, সাংবাদিক, ধারাভাষ্যকার—সবাই আজ একটা ঘটনায় স্তম্ভিত, ক্ষুব্ধ। কারণটা খুব পরিষ্কার—ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আজ যে কাজটা হয়েছে, সেটা শুধু লজ্জাজনক না, এটা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে কলঙ্কিত করেছে। একটা দলকে সুপার লিগে উঠতে না দেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে আরেক মাঠে দুই দল নিজেদের মধ্যে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে নিয়েছে! এটা কী ধরনের নাটক? আজকের সেই ম্যাচের ভিডিও প্রমাণসহ নিচে রয়েছে—আপনারা নিজেরাই দেখুন, বিচার করুন।’
‘এই যদি হয় আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের অবস্থা, তাহলে ভবিষ্যতে জাতীয় দলে কারা খেলবে? কাদের হাতে আমরা তুলে দিচ্ছি দেশের পতাকা? যারা মাঠে নামার আগেই ম্যাচের ফয়সালা করে নেয়, তাদের দিয়ে কী দেশের প্রতিনিধিত্ব হয়? লজ্জা! যাদের ব্যবহার করে এসব নোংরা খেলা খেলানো হচ্ছে, তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার, কারণ ওরা আজ নিজেরাই নিজেদের বিক্রি করে দিয়েছে।’
‘আমরা যারা বাংলাদেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখি, সেই স্বপ্নকে বাস্তব করতে দিনরাত খেটে যাচ্ছি—আর কিছু বিকৃত মানসিকতার মানুষ নিজেদের স্বার্থে গোটা দেশের ক্রিকেটকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড চেষ্টা করছে উন্নতির, কিন্তু এইসব ঘটনাগুলো সেই চেষ্টাকেও মাটিতে মিশিয়ে দিচ্ছে।’
মিনহাজুলের আউটের ভিডিও শেয়ার করে সামাজিক মাধ্যমে ক্রিকেটার শামসুর রহমান শুভ লিখেছেন, ‘সত্যি লজ্জা!’ একই অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন সাবেক ক্রিকেটার রাজিন সালেহ।