img

বিশ্ব ক্রিকেটে ‘ফিনিশার’ নামে পরিচিত মাইকেল বেভান। অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটারই টার্মটা চালু করেছেন—এমনটা বললেও খুব বেশি বলা হবে না। ক্যারিয়ারে এমন সব ম্যাচ জিতিয়েছেন তিনি, যা অন্যদের কল্পনার বাইরে ছিল। সে সময় অনেকে চিন্তাও করতে পারেননি যে হারতে বসা ম্যাচও জয় পাওয়া যায়।

 

সেই ‘ফিনিশার’ এবার বিশ্ব ক্রিকেটকে স্মরণীয় মুহূর্ত এনে দেওয়ার স্বীকৃতি পেয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার ‘হল অব ফেমে’ জায়গা পেয়েছেন বেভান। সাদা বলের ক্রিকেট ক্যারিয়ার এতটাই সমৃদ্ধ যে তাকে ‘হল অব ফেমে’ জায়গা দিতে নিয়মেই বদল এনেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। সাধারণত টেস্ট ক্রিকেটের সমৃদ্ধ ক্যারিয়ারের জন্যই এই স্বীকৃতি পান দলটির খেলোয়াড়রা।

তবে বেভানের ১৮ ম্যাচের লাল বলের ক্যারিয়ার সেই মানদণ্ডে কোনোভাবেই ধোপে টেকে না।

 

২৩২ ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৬৯১২ রান করেছেন বেভান। বাঁহাতি ব্যাটারের থেকে ঢের বেশি রান রয়েছে অনেকের। কিন্তু তার ৫৩.৫৮ গড় অনেকের কাছে স্বপ্নের।

আর ৫৪ বছর বয়সী ব্যাটারের বিশেষত্ব তা হচ্ছে চার নম্বরের পর ব্যাটিংয়ে নেমে ম্যাচ শেষ করার ক্ষমতা। এ বছর নিয়ম পরিবর্তন করায় তাই ১৫ বছরের অপেক্ষার অবসান হয়েছে।

 

বেভানের হাতে স্মারক তুলে দেওয়ার সময় ‘হল অব ফেমের’ চেয়ারম্যান পিটার কিং বলেছেন, ‘হল অব ফেম কমিটিকে মানদণ্ড পর্যালোচনা করতে বাধ্য করেছে মাইকেলের (বেভানের) অসাধারণ রেকর্ড এবং মানুষের অবস্থান। এখন থেকে শুধু টেস্ট নয়, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতেও যাদের ক্যারিয়ার উজ্জ্বল, কমিটি তাদেরও সমভাবে স্বীকৃতি দেবে। সাদা বলের ক্রিকেটে নিঃসন্দেহে বিপ্লব ঘটিয়েছেন মাইকেল এবং অসাধারণ অ্যাথেলেটিসিজম, রান তাড়ায় মুন্সিয়ানার জন্য সকলের কাছে পরিচিতি পেয়েছেন তিনি।’

 

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১৯৯৯ ও ২০০৩ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন বেভান। দলটির অবিচ্ছেদ অংশ ছিলেন তিনি। তার ফিনিশিংয়ের উল্লেখযোগ্য ম্যাচ হচ্ছে—১৯৯৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১ উইকেটের জয় এনে দেওয়া। সেদিন ১৭৩ রান তাড়া করতে নেমে ৩৮ রানে ৬ উইকেট হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সেখান থেকে গ্লেন ম্যাকগ্রাকে নিয়ে দলকে অবিশ্বাস্য জয় এনে দেন বেভান। ২০০২ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১০২ রানের ইনিংস খেলে অস্ট্রেলিয়াকে ২ উইকেটের জয় এনে দেন।

আর ২০০৩ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৪ রানের ইনিংসটি সব কিছুকে ছাড়িয়ে গেছে। ২০৫ রান তাড়া করতে নেমে ১৩৫ রানে ৮ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। যেখানে ২ উইকেট নিলেই জয় পায় ইংল্যান্ড। সেই ম্যাচ পরে অ্যান্ডি বিকেলের সঙ্গে জিতিয়ে দেন বেভান, আর কোনো উইকেট না হারিয়ে।

এমন সব ইনিংস উপহার দেওয়ার স্বীকৃতি পেয়ে দারুণ খুশি বেভান। তিনি বলেছেন, ‘দুর্দান্ত এক অনুভূতি। খেলাটি সম্পর্কে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পেরে আমি গর্বিত। অনুমান করছি যে আমার ভূমিকা সত্যিই ওয়ানডে ক্রিকেটে রূপ নিয়েছে। তার সঙ্গে এ বছর ‘হল অব ফেমে’ জায়গা পেয়েছেন—মাইকেল ক্লার্ক ও নারী উইকেটরক্ষক ব্যাটার ক্রিস্টিনা ম্যাথুস। ১৯৯৬ সালে চালু হওয়া ‘হল অব ফেমের’ সদস্য সংখ্যা এখন ৬৬ জন।

এই বিভাগের আরও খবর