img

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলার এক বছর পেরিয়ে গেছে। গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির তীব্র আহ্বান উপেক্ষা করে আধুনিককালের সবচেয়ে নৃশংস গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল।  খাদ্য-চিকিৎসা তো দূরের বিষয়, নির্বিচার হামলায় আশ্রয়টুকুও পাচ্ছে না গাজাবাসী। 

এরমধ্যে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) হৃদয়বিদারক এক প্রতিবেদন হাজির করেছে আল জাজিরা  যেখানে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বর্বরতায় ফিলিস্তিন থেকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে ৯০২টি পরিবার।  গত এক বছরে এই পরিবারগুলোর প্রত্যেক সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে।  

এর বাইরে কমপক্ষে ১ হাজার ৩৬৪টি ফিলিস্তিনি পরিবারে শুধুমাত্র একজন জীবিত সদস্য এবং তিন হাজার ৪৭২টি ফিলিস্তিনি পরিবারে মাত্র দু’জন জীবিত সদস্য রয়েছে।

এর আগে, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি আগ্রাসনের এক বছর পূর্তির দিনে ‘নো দেয়ার নেমস’ বা ‘তাদের নাম জেনে রাখুন’—শিরোনামে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে আল-জাজিরা। 

এতে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত নিহত ৩৪ হাজার ৩৪৪ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। নিহতদের বিভিন্ন পরিসংখ্যানসহ এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক বছরেরও বেশি সময়ের সংঘাতে গাজায় অন্তত ৯০২টি পরিবার চিরতরে হারিয়ে গেছে। 

ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বর্বরতার দৈনন্দিন চিত্র তুলে ধরে আল জাজিরা বলছে, প্রতিদিন সেখানে ১১৫ জনের মৃত্যু হচ্ছে। আহত হচ্ছে ২৬৬ জন। প্রতিদিন ২৭ জন মানুষ ধ্বংস্তুপে চাপা পড়ছে। ৫ হাজার ৪৮০ জন মানুষ তার বাসস্থান হারাচ্ছে।

প্রতিবেদনে একটি পরিবারের কথা তুলে ধরা হয়, জেইন ছিলেন আল-নাজ্জার পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য। তার পরিবার মধ্য গাজা উপত্যকার দেইর এল-বালাহতে বাস করত। আল-নাজ্জার পারিবারিক নামটি গাজায় খুবই সাধারণ এবং এর অর্থ রং মিস্ত্রি।

২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর তাদের বাড়িতে ইসরাইলি বিমান হামলায় পাঁচ শিশু ও তিন নারীসহ পরিবারের ১৮ জন সদস্য নিহত হন। আহত হন ২৩ জন। ওই সময় জেইনের বয়স ছিল মাত্র দুই মাস।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংঘাত পর্যবেক্ষণ সংস্থা এয়ারওয়ারসের মতে, অন্তত তিনটি আল-নাজ্জার পরিবার ১০ বা তার বেশি সদস্যকে হারিয়েছে।  গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের আক্রমণ শুরু করার পর থেকে নিহত শতাধিক পরিবারের মধ্যে অন্তত ৩৯৩ জন আল-নাজ্জার ছিল।

সংস্থাটির মতে, প্রত্যেক সদস্যকে হারানো অন্য পরিবারগুলোর মধ্যে আল-মাসরি পরিবার ছিল ২২৬ টি, আল-আস্তাল পরিবার ২২৫ টি, আশুর ১৬৬ টি, শাহীন ১৬৪ টি, হামদান ১৫১ টি, আল-মাদুন ১৪৬ টি, আহমদ ১৪৫ টি, ওবেদ ১৪৪টি এবং হিজাযি উপাধি ছিল নিশ্চিহ্ন ১৪১টি পরিবারের।

এর বাইরে কমপক্ষে ১ হাজার ৩৬৪টি ফিলিস্তিনি পরিবারে শুধুমাত্র একজন জীবিত সদস্য এবং তিন হাজার ৪৭২টি ফিলিস্তিনি পরিবারে মাত্র দু’জন জীবিত সদস্য রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর