মায়ের দোয়া ক্রিকেট টিম হয়ে গেছি : সাকিব
বড় টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দলের শুরুটা হয় বিতর্ক দিয়ে। এরপর টুর্নামেন্টজুড়ে দলের বাজে পারফরম্যান্সে সমর্থকদের হৃদয় ভাঙে। সেই সঙ্গে চলে দোয়া চাওয়া। মাঠে নিবেদন যেমনই হোক, যেন দোয়াই পারে টাইগারদের দুর্দশা থেকে উত্তরণ ঘটাতে। আরেকটি বিশ্বকাপ যখন মাঠে, বাংলাদেশ দল ফের ভরসা খুঁজছে দোয়ায়।
বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে রান করতে সংগ্রাম, এরপর যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে স্বাগতিকদের বিপক্ষে সিরিজ হারের লজ্জা। টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার আগেই আত্মবিশ্বাস তলানিতে নামতে আর কী লাগে!
আত্মবিশ্বাস যেমনই হোক, মাঠের খেলা যেমনই হোক, বাংলাদেশ বিশ্বকাপে ভালো করতে পারে দর্শক-সমর্থকদের দোয়া পেলেই। টাইগারদের দলটা চলছে দোয়ায় ভর করে- দেশের ক্রিকেট নিয়ে এমন ব্যঙ্গ খোদ সমর্থকরাই করেন। আর সেই ব্যাপারটা খেলোয়াড়রাও ভালো করেই জানে। অন্তত সাকিব আল হাসান শত ব্যস্ততার মধ্যেই সেই খবর রাখেন।
আনুষ্ঠানিকভাবে টি২০ বিশ্বকাপ শুরু হলেও এখনো মাঠে নামেনি বাংলাদেশ দল। নিজেদের প্রথম ম্যাচে আগামী শনিবার শ্রীলংকার বিপক্ষে খেলবে টাইগাররা। তবে এর আগে ম্যাচ ভেন্যুতে অনুশীলন সেরেছে টাইগাররা। এ সময় ইনজুরড পেসার শরিফুল ইসলাম ছাড়া দলের বাকি সবাই অনুশীলনে উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে দলীয় অনুশীলন শেষে ড্রেসিংরুমে ফিরে যাচ্ছিলেন সাকিব আল হাসান। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে বেশ খানিকটা রসিকতাও করলেন সাকিব। মজার ছলে সাকিবের ভাষ্য, ‘আমরা তো মায়ের দোয়া টিম হয়ে গেছি! দোয়া চাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি!’
দেশসেরা অলরাউন্ডারের এমন রসিকতায় হাসির রোলও উঠল। মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশ দলের দোয়া চাওয়ার একটি ভিডিও বেশ পরিচিত।
ওয়ানডে বিশ্বকাপে ধারাবাহিক ব্যর্থতার ব্যাখ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেখ মাহেদীর একটি মন্তব্য খুব ভাইরাল হয়। সেখানে তাকে বারবার ‘আমাদের জন্য দোয়া করবেন, দোয়া চাওয়া ছাড়া অপশন নেই!’ বলতে শোনা যায়।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজ হারের পর নাজমুল শান্তর বরাতে একটি ভুয়া ফটোকার্ড ছড়িয়ে পড়ে। যাতে লেখা ছিল, ‘আট দেশের ক্রিকেটার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র দল গঠিত, সে জন্য তারা বেশি দোয়া পায়।’
এরপর থেকেই বাংলাদেশ দলকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘মায়ের দোয়া টিম’ হিসেবে ট্রল করা হচ্ছে। এদিকে বিশ্বকাপের আগে খুব একটা সুখকর না টাইগারদের পরিস্থিতি। টপঅর্ডারে লিটন দাস, সৌম্য সরকার এবং অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত; কেউই রান পাচ্ছেন না। আবার প্রথম ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছেন পেসার শরিফুল ইসলাম। নিজের ব্যাটিং নিয়েও ভুগছেন সাকিব। এমন অবস্থা নিয়েই বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে টাইগাররা।
বিশ্বকাপে গ্রুপ ‘ডি’-তে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শ্রীলংকা, নেপাল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও নেদারল্যান্ডস। গ্রুপপর্বে চারটি ম্যাচ মোট তিনটি ভেন্যুতে খেলবে বাংলাদেশ। টাইগারদের শিরোপা মিশন শুরু হবে ৮ জুন শ্রীলংকার বিপক্ষে ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে।
শান্ত বাহিনীর পরের ম্যাচটি হবে নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে। তবে ১০ জুন বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা লড়াইয়ের আগে এই মাঠে ভারত-পাকিস্তানসহ পাঁচটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ফলে সাকিব-রিয়াদরা অন্তত কিছুটা ধারণা নিয়ে মাঠে নামার সুযোগ পাবেন।
বাংলাদেশের পরের দুটি ম্যাচ হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংস্টাউনের সেন্ট ভিনসেন্টে। কিংস্টাউনে ১৩ জুন নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খেলবে টাইগাররা। আর গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে ১৭ জুন নেপালের বিপক্ষে একই ভেন্যুতে নামবে।