img

এবারের শীতকাল উষ্ণতার নতুন রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে বলে বিজ্ঞানীরা পূর্বাভাস দিয়েছেন। জীবাশ্ম জ্বালানির মাধ্যমে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ অব্যাহত থাকলে আগামী সাত বছরের মধ্যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের সীমারেখা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে গতকাল মঙ্গলবার বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন। এ অবস্থায় কয়লা, তেল ও গ্যাস সংশ্লিষ্ট দূষণ মোকাবেলায় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চলমান জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।

সম্প্রতি চীনের চায়নিজ একাডেমি অব সায়েন্সেস ইনস্টিটিউট অব অ্যাটমোস্ফিয়ারিক ফিজিক্সের গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২৩-২৪ সালের শীতকালে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড তৈরির ৯৫ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে।

গবেষকরা বলেছেন, ইউরেশিয়ার মধ্য-নিম্ন অক্ষাংশের অঞ্চল এবং যুক্তরাষ্ট্রের বেশির বাগ এলাকায় একটি ব্যতিক্রমী শীতকাল অনুভূত হতে পারে। সম্ভব্য এই পরিস্থিতির জন্য বিজ্ঞানীরা আসন্ন শীতকালে উত্তর গোলার্ধে ধেয়ে আসা মাঝারি থেকে শক্তিশালী পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় এল নিনোকে দায়ী করেছেন।

গবেষকরা জানান, এই শক্তিশালী এল নিনোর ঘটনাটি উত্তর-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে অস্বাভাবিক ঘূর্ণিঝড়ের কার্যক্রম শুরু করতে পারে, যা পূর্ব এশিয়া ও উত্তর আমেরিকার শীতকালীন জলবায়ুতে প্রভাব ফেলতে পারে।

গবেষকরা চীনের ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছেন।

এটি সম্ভবত ১৯৯১ সালের পর থেকে শীতকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে।

 

আলোচনায় জীবাশ্ম জ্বালানি

সংযুক্ত আরব আমিরাতে চলমান জলবায়ু সম্মেলনে বৈশ্বিক উষ্ণতার মূল কারণ জীবাশ্ম জ্বালানির ভবিষ্যৎ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলছে। আগামী সাত বছরের মধ্যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাওয়ার নতুন সতর্কবার্তার পর গতকাল জীবাশ্ম জ্বালানি নিয়ে আলোচনা নতুন গতি পায়।

দুবাইয়ে একটি নতুন কপ২৮ চুক্তিতে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার পর্যায়ক্রমে বন্ধ বা এই সমস্যা একেবারেই আলোচনা না করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল রপ্তানিকারক দেশ সৌদি আরব এই ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়ে জানিয়েছে, তারা জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার পর্যায়ক্রমে কমানোর ব্যাপারে রাজি হবে না।

অবশ্য কার্বণ ডাই-অক্সাইডের নিঃসরণ অব্যাহত থাকায় এটি আরো চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠছে বলে দ্য গ্লোবান কার্বন প্রজেক্ট জানিয়েছে। যদিও কপ২৮ সম্মেলনে শতাধিক দেশ চলতি দশকেই নবায়নযোগ্য শক্তির সক্ষমতা তিন গুণ বাড়ানোর ব্যাপারে একমত হয়ে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।

সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ক্লাইমেট রিসার্চের জ্যেষ্ঠ গবেষক গ্লেন পিটার্স বলেন, ‘সৌর বায়ু, বৈদ্যুতিক যানবাহন ও ব্যাটারির ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। এটি দারুণ ব্যাপার।

তবে এটি শুধু অর্ধেক চিত্র। বাকি অর্ধেক চিত্রে রয়েছে জীবাশ্ম জ্বালানির নিঃসরণ কমানো। কিন্তু এ ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট কাজ করছি না।’

 

এই বিভাগের আরও খবর


সর্বশেষ