img

ইসরাইলের সঙ্গে পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে যাচ্ছে তুরস্ক। এ ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেছে দেশ দুটি। খুব শিগগিরই একে অপরের দেশে রাষ্ট্রদূতও পাঠাবে তারা। উভয় দেশের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইসরাইল ও তুরস্কের মধ্যকার সম্পর্ক ক্রমেই উন্নত হয়েছে। একসময় ইসরাইলবিরোধী মনোভাব দেখালেও এখন দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।

চলতি বছরের মার্চ মাসে ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগের তুরস্ক সফর ছিল দুদেশের সম্পর্কোন্নয়নের প্রাথমিক ইঙ্গিত। ইসরাইলি প্রেসিডেন্টের ওই সফরকালে তাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেয় তুরস্ক। বাজানো হয় ইসরাইলের জাতীয় সংগীতও।

এরপর চলতি বছরের মে মাসে ইসরাইল সফর করেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসগলু। গত ১৫ বছরের মধ্যে প্রথম কোনো তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ইসরাইল সফর ছিল এটি। তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের মাসখানেক পরই আঙ্কারা সফর করেন ইসরাইলের তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইয়াইর লাপিদ। শীর্ষ পর্যায়ের কূটনৈতিক আলোচনার পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য সম্পর্ক ত্বরান্বিত হয়েছে।

আল-জাজিরা জানায়, দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কোন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বুধবার (১৭ আগস্ট) একে অপরের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান ও ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী ইয়াইর লাপিদ।

এ ফোনালাপের পর ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কূটনৈতিক সম্পর্কোন্নয়নের ফলে দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধন শক্তিশালী ও গভীর হবে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক বন্ধন এবং সর্বোপরি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা শক্তিশালী হবে।’

এদিকে রাজধানী আঙ্কায় এক সংবাদ সম্মেলনে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসগলু বলেন, একে অপরের দেশে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ হবে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের প্রথম ধাপ। তিনি বলেন, ‘ইতিবাচক এ পদক্ষেপটি ইসরাইলের পক্ষ থেকেই নেয়া হয়েছে। তুরস্কের পক্ষ থেকে আমরাও ইসরাইলে রাষ্ট্রদূত নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ 

ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের ফলে ফিলিস্তিন ইস্যু চাপা পড়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কার বিষয়ে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কূটনৈতিক সম্পর্কোন্নয়নের পদক্ষেপের মানে এই নয় যে ফিলিস্তিন ইস্যুতে এড়িয়ে যাওয়া  হবে। খুব শিগগিরই উভয় পক্ষ একে অপরের দেশে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করবে বলেও ইঙ্গিত দেন কাভুসগলু।

জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস খোলার প্রতিবাদে গাজা উপত্যকায় বিক্ষোভে নামেন ফিলিস্তিনিরা। কোনো রকম উসকানি ছাড়াই বিক্ষোভে গুলি চালায় ইসরাইলি বাহিনী। এতে ৬০ ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী প্রাণ হারান। ইসরাইলি বাহিনীর এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ২০১৮ সালে তেল আবিব থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নেয় তুরস্ক। পাল্টা পদক্ষেপ নেয় ইসরাইলও।

এই বিভাগের আরও খবর