img

কোভিড-১৯ মহামারি থেকে পুনরুদ্ধার করতে এবং ভবিষ্যতের ধাক্কা মোকাবিলা প্রস্তুতি উন্নত করতে দেশের স্থানীয় নগর প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে সহায়তায় জন্য ৩০০ মিলিয়ন ডলার অর্থায়ন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংক।

রোববার (৭ আগস্ট) এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এতে বাংলাদেশের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খান ও বিশ্বব্যাংকের পক্ষে সংস্থাটির বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন সই করেন।

 

বিশ্বব্যাংক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, স্থানীয় সরকারের কোভিড-১৯ প্রতিক্রিয়া এবং পুনরুদ্ধার প্রকল্পের আওতায় ৮টি বিভাগের প্রায় ৩৯ দশমিক নয় মিলিয়ন শহরের বাসিন্দাকে উপকৃত করবে। এটি মহামারি থেকে পুনরুদ্ধার করা এবং জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ এবং রোগের প্রাদুর্ভাবসহ ভবিষ্যতের ধাক্কাগুলোর জন্য প্রস্তুত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরগুলোকে আরও ভালোভাবে গড়ে তুলতে সহায়তা করবে। এ ছাড়াও ৩২৯টি পৌরসভা এবং ১০টি সিটি করপোরেশনের জলবায়ু পরিবর্তনের এবং সাড়া দেয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নগর পরিষেবা এবং পরিকাঠামো উন্নতির জন্য প্রকল্প থেকে দ্বিবার্ষিক তহবিল পাবে।

 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, বাংলাদেশে দ্রুত নগরায়ন হচ্ছে। জনসংখ্যার প্রায় ৩৬ শতাংশ শহরাঞ্চলে বসবাস করে। এতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে মহামারি থেকে পুনরুদ্ধার করার পাশাপাশি ভবিষ্যতের ধাক্কা সামলানোর জন্য প্রস্তুত করতে সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভাগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
 

এ প্রকল্পটি স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোকে জলবায়ু-স্মার্ট নগরায়নের দিকে অগ্রসর হতে এবং ভবিষ্যতের ধাক্কায় স্বাভাবিক অবস্থায় প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রস্তুত করতে সঠিক ব্যবস্থা নিতে সাহায্য করবে বলে মনে করেন তিনি।


প্রকল্পটি পানি সরবরাহ এবং স্যানিটেশন, নিষ্কাশন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলো নিশ্চিত করবে, যা নিম্ন আয়ের এলাকা, বস্তি ও উচ্চ রোগের প্রাদুর্ভাব এবং দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা উন্মুক্ত এলাকাগুলোকে উপকৃত করবে। অন্যদিকে শহরের দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।

বিশ্বব্যাংক বলছে, পৌর ভবন ও পরিষেবাগুলোর সকল অবকাঠামোতে সোলার প্যালেন এবং কুল রুফ ব্যবস্থাসহ এনার্জি দক্ষতাসম্পন্ন ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করা হবে। প্রকল্পটি নারীদের জন্য আলাদা সুবিধাসহ হাত ধোয়ার স্টেশন এবং টয়লেট স্থাপন করবে এবং বাজার, কবরস্থান ও অফিসের মতো পাবলিক স্থানে স্যানিটাইজেশন উন্নত করবে। এটি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পৌরসভার মালিকানাধীন স্বাস্থ্য ক্লিনিকগুলোয় প্রবেশাধিকার দেবে এবং ভ্যাকসিন ও অন্যান্য কোভিড-১৯ প্রোটোকলের পাশাপাশি লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা এবং জলবায়ু ঝুঁকির বিষয়ে সচেতনতা প্রোগ্রাম পরিচালনা করতে সহায়তা করবে।


বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান বলেন, দ্রুত এবং সক্রিয় পদক্ষেপের মাধ্যমে, বাংলাদেশ সরকার কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে।


তিনি আরও বলেন, শহরাঞ্চলগুলো যাতে ভবিষ্যতে যেকোনো ধরনের ধাক্কা মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকে এবং শহরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আরও ভালো পরিষেবা নিশ্চিতকরণ এবং অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে উপকৃত করতে এ প্রকল্পটি আরও সহায়তা করবে।


এ ঋণটি বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) আওতায় দেয়া হচ্ছে। যেটি রেয়াতমূলক অর্থায়ন প্রদান করে থাকে। এ অর্থায়নটি ৫ বছরর গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছর মেয়াদি। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের সবচেয়ে বড় আইডিএ প্রোগ্রাম চলমান রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর