img

রাশিয়া-ইউক্রেনের খাদ্যশস্য চুক্তি বদলে দিয়েছে বিশ্ববাজারে খাদ্যশস্যের দামের পরিসংখ্যান। চলতি বছর মার্চ-এপ্রিলে খাদ্যশস্যের দাম ছিল আকাশচুম্বী। কিন্তু বর্তমানে খাদ্যশস্যের দাম এতটা কমেছে যা ভেঙে দিয়েছে বিগত ১৪ বছরের রেকর্ড। খবর ব্লুমবার্গ।

জাতিসংঘের ফুড ইনডেক্সের তথ্য থেকে জানা যায়, গত মাসে খাদ্যশস্যের দাম কমেছে ৯ শতাংশ। এতে করে যে মন্দার বাতাস লেগেছিল, তা মিলিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। বছরের শুরুতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে জাতিসংঘ পূর্বাভাস দিয়েছিল, পৃথিবীর অনেক দেশে বড় রকমের দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে আফ্রিকার মতো সুবিধাবঞ্চিত দেশগুলোতে দেখা দিতে পারে মারাত্মক খাদ্য সংকট। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন চুক্তির পরে এ ব্যাপারে আশার আলো দেখছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি।
 

বিশ্বে বৃহৎ গম রফতানি কারক দুটি দেশ যখন ফেব্রুয়ারির শেষার্ধে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে, প্রায় তখন থেকেই বিশ্ববাজারে বাড়তে শুরু করে গমের দাম। এছাড়া ইউক্রেন গম রফতানি পুরোপুরি বন্ধ করে দিলে ইউরোপের মতো বাঘা বাঘা দেশগুলোতে বেড়ে যায় খাদ্যপণ্যের দাম। এতে করে পশ্চিমা দেশগুলোতে দেখা দেয় রেকর্ড পরিমাণ মূল্যস্ফীতি।
 

জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন আন্তর্জাতিক খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্যমতে, আর্জেনন্টিনা ও ব্রাজিলে মৌসুমি ফসল ফলতে শুরু করলে খাদ্যদ্রব্যের দাম আরও কমে আসবে। এতে করে তাৎক্ষণিক যুদ্ধ না থামলেও, খাদ্যদ্রব্যের বাজার ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
 

এর আগে চলতি মাসের ১ তারিখে ইউক্রেনের ওদেসা বন্দর থেকে প্রথম গমের চালান তুর্কিয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। শুক্রবার (৫ আগস্ট) আরও তিনটি জাহাজ ওদেসা বন্দর ছাড়বে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। ওদেসা থেকে বহনকৃত খাদ্যশস্য আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্বের অন্যান্য দেশে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।

 

এদিকে বিশ্ববাজারে খাদ্যশস্যের দাম কমলেও, এখন পর্যন্ত এর প্রভাব আফ্রিকার দেশগুলোতে পড়েনি। জাতিসংঘের দেয়া তথ্যমতে, আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় ১০ মিলিয়ন মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, অনাহারে কাটছে তাদের দিন।
 

বিশ্বের অনেক খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুতকারি কোম্পানি খাবারের দাম কমানোর ব্যাপারে এখন পর্যন্ত স্পষ্ট করে কিছু বলেনি। তবে বিখ্যাত খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুতকারি প্রতিষ্ঠান ওকাডো গ্রুপ জানিয়েছে, ক্রেতারা সস্তার খাবারের দিকে ঝুঁকছে। এক্ষেত্রে চাহিদার কথা মাথায় রেখে তারা খাবারের দাম কমিয়ে আনবে।

 

করোনাসময় থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে সৃষ্টি হয়েছিল খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা। রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যু ছিল সেখানে- আগুনে ঘি ঢালার মতো উত্তেজক পরিস্থিতি। তবে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে, কমে আসছে খাবারের দাম। ধারণা করা যাচ্ছে, এ যাত্রায় প্রায় নিশ্চিত দুর্ভিক্ষের থেকে বেচে যাবে অনেক দেশ।

এই বিভাগের আরও খবর