img

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র বাংলাদেশ সফরে বেশ কয়েকটি চুক্তি সই ও নবায়ন হতে পারে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। শনিবার (৬ আগস্ট) তিনি ঢাকায় আসছেন।

বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

জানা গেছে, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই শনিবার (৬ আগস্ট) সকালে বাংলাদেশে পৌঁছাবেন এবং ৭ তারিখে ফিরে যাবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে রোববার (৭ আগস্ট) সকালে তিনি বৈঠক করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও তার সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।

শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অনেক গভীর ও বিস্তৃত। সে জায়গা থেকে আসন্ন সফরে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক নবায়ন, নতুন সহযোগিতা, বিশেষ করে দুর্যোগ ও অর্থনৈতিক সম্পর্কবিষয়ক চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে।’

চীনের বৈশ্বিক উদ্যোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘চীন তাদের বৈশ্বিক উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করতে চাইলে তখন কথা হবে।’

ইন্দো-প্যাসিফিক ভিশন বা অন্য জোটের বিষয়ে চীনের অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, অন্য বলয়ের সঙ্গে কী করব সেটি আমাদের বিষয়। আশা করি অন্য কোনও দেশ এ বিষয়ে আমাদের কোনও পরামর্শ দেবে না।’

তিনি বলেন, তবে চীন বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র, তাদের অনেক পরিকল্পনার সঙ্গে বাংলাদেশ জড়িত।

এসময় তিনি জানান, ৬ আগস্ট সন্ধ্যায় চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মানে এক নৈশভোজের আয়োজন করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

কী কী বিষয়ে চুক্তি বা সমঝোতা সই হতে পারে প্রশ্ন করলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ তালিকা এখনও চূড়ান্ত হয়নি, অপেক্ষা করতে হবে। তবে বেশ কয়েকটি চুক্তি বা সমঝোতা সই হতে পারে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতির সঙ্গে জড়িত, বাংলাদেশের অব্যাহত সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতির সঙ্গে জড়িত, বাংলাদেশের নীতির সঙ্গে জড়িত। সংখ্যাটি পাঁচ বা সাত—এমন হতে পারে।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় চুক্তি হতে পারে, যার মধ্যে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার—দুটিই থাকবে। এর বাইরে সংস্কৃতি বিনিময় নিয়ে একটি চুক্তি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একটি শিক্ষাসংক্রান্ত বিনিময় চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দুর্যোগসংক্রান্ত চুক্তিটি একটি প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করা হবে, যেখানে চীনের অর্থায়ন থাকবে। সে হিসেবে দুর্যোগ প্রকল্পে চীনের ঋণ নেওয়া হতে পারে, তবে বৃহৎ কোনো প্রকল্পে চীনের ঋণ নেওয়া হবে না।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে চীনের ওপর কোনো জোরালো দাবি থাকবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই থাকবে। রোহিঙ্গা ইস্যু আমাদের আলোচ্য সূচির সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারে রয়েছে। এ সফরে এ ইস্যু গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। আপনারা দেখেছেন যে সম্প্রতি আসিয়ানের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে চীনের প্রতি শক্ত বার্তা দেওয়া হয়েছে এবং একই সঙ্গে চীনের স্টেট কাউন্সেলর যখন সফর করছেন, তার মাত্র দুই থেকে আড়াই সপ্তাহ আগে আইসিজে (আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত) রোহিঙ্গা ইস্যুতে তাদের প্রাথমিক রায় দিয়েছেন। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যখন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সফরে আসছেন, আমরা নিশ্চয়ই বার্তাটি দেব এবং তাদের আরও জোরালো ভূমিকা আহ্বান করব। প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে রাজনৈতিক সমাধানের জন্য চীনের সহযোগিতা আমরা অবশ্যই চাইব। আমরা এই বার্তা পেয়েছি যে মিয়ানমার যে পথে যাচ্ছে, তা নিয়ে চীনেরও অসন্তোষ রয়েছে।’

তাইওয়ান ইস্যু নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সব সময় এক-চীন নীতিতে বিশ্বাস করে এবং আমরা চাই তাইওয়ান পরিস্থিতি যেন খারাপ না হয়। বিশ্ব এখন যথেষ্ট খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সব পক্ষ যেন সংযত থাকে। জাতিসংঘ সনদ মেনে চলে। বর্তমান বিশ্বে আরেকটা সংকট কারও জন্য ভালো হবে না।

এই বিভাগের আরও খবর