img

পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল নিষিদ্ধের পরেও অনেকেই পিকআপে মোটরসাইকেল নিয়ে ব্রিজ পাড়ি দিচ্ছিলেন। তবে সম্প্রতি মোটরসাইকেলবাহী পিকআপও ফিরিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

পদ্মা সেতুর জাজিরাপ্রান্তের টোলপ্লাজার ম্যানেজার কামাল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ভারী মালামাল পারাপারের জন্য পিকআপ চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু পিকআপে করে মোটরসাইকেল ও মানুষ পারাপারের অনুমতি নেই। তাই এগুলো আমরা বন্ধ রেখেছি।

এর আগে সোমবার (২৭ জুন) মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। সেতুর উভয়প্রান্তে আসা মোটরসাইকেল ফিরিয়ে দেওয়া হলেও অনেকেই পিকআপে বাড়তি ভাড়া গুনে সেতু পার হচ্ছিলেন। সে সুযোগ বন্ধ করে দিয়ে দুপুর থেকেই ফিরিয়ে দেওয়া হয় মোটরসাইকেল ঠাসা এসব পিকআপ।

যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হতে না হতেই স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে চলছে নিয়ম ভাঙার হিড়িক। গাড়ি থামিয়ে কেউ তুলছেন ছবি আবার কেউ সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে করছেন টিকটক ভিডিও।

সেতুর রেলিংয়ের নাট খোলারও ঘটনা ঘটেছে। কাইসার ৭১ (Kaisar71) নামক একটি টিকটক অ্যাকাউন্টের লোগো লাগানো ৩৬ সেকেন্ডের সেতুর রেলিংয়ের নাট খোলার ভিডিও নিয়ে ব্যাপক সমালোচনাও হচ্ছে। যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় ওই টিকটকারকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া সেতুর রেলিংয়ের নাট খোলার আরও একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। 

এদিকে পদ্মা সেতুতে যানবাহন থেকে নামলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং টহল জোরদারে সেতুর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীকে সেতু কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়েছে।

টিকটক ভিডিও বানানোর দায়ে ফখরুল আলম নামে এক তরুণকে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ জরিমানা অনাদায়ে তাকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন  ভ্রাম্যমাণ আদালত।  এ সময় সাজাপ্রাপ্ত ওই তরুণ তার অপরাধ স্বীকার করে জরিমানার টাকা পরিশোধও করেন। সে একটি প্রাইভেটকার যোগে পদ্মা সেতু আসেন। অনেকে আবার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে এসেও এ কাজে লিপ্ত হন বলে জানা গেছে। 

এদিকে স্বপ্ন সংযোগ খুলে দেয়ার দ্বিতীয় দিন সোমবার (২৭ জুন) বেশ স্বাচ্ছন্দে পদ্মা সেতু পাড়ি দিচ্ছে সাধারণ মানুষ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার সেই রূপ আর নেই। দু’পাড়ের টোল প্লাজায় কোনো যানজট না থাকায় চোখের পলকেই নির্বিঘ্নে গন্তব্যে যাচ্ছেন যাত্রী ও চালক। সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ থাকায় ফিরেছে শৃঙ্খলা। ফেরিতে পদ্মা পার হতে হয়েছে বাইকারদের।

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সৌন্দর্যের প্রতীক প্রমত্তা পদ্মার বুকে কংক্রিটের গর্বের সেতুটিতে ভোর থেকে টোল প্লাজায় কোনো যানজট না থাকায় স্বাচ্ছন্দে টোলপ্লাজায় গিয়ে টাকা পরিশোধ করেন গাড়ির চালকরা। প্রশস্ত জায়গা আর একাধিক টোল বুথ থাকায় সেতুর দু’পাড় জাজিরা আর মাওয়ায় ছিল না কোনো ভোগান্তি। গড়ে প্রতিটি বুথে ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ড সময় লাগছে টোল পরিশোধ করতে। তাই আগের ভোগান্তির স্থানে জায়গা করে নিয়েছে স্বস্তি। সাশ্রয় হচ্ছে যাতায়াতের সময়ও।

টোল পরিশোধ করেই উত্তাল পদ্মার বুক চিরে সেতু দিয়ে বাহন ছুটে চলছে নির্ধারিত গন্তব্যে। দূরপাল্লার যান কিংবা ব্যক্তিগত গাড়ি সবাই ব্যস্ত বহুদিনের লালিত স্বপ্ন নিজ চোখে পরখ করে নিতে।

এই বিভাগের আরও খবর