img

পাকিস্তানের পাঞ্জাবে হঠাৎ করেই নারী ও শিশু যৌন নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে গেছে। প্রতিদিন গড়ে ৪ থেকে ৫টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। বেপরোয়া ধর্ষণকাণ্ড রুখতে এবার ‘জরুরি অবস্থা’ জারি করেছে স্থানীয় সরকার।

সোমবার (২০ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে পাঞ্জাবের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আত্তা তারার জানান, এ ধরনের ঘটনা বেড়ে যাওয়া সমাজ ও সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য একটি গুরুতর সমস্যা।

এ মন্ত্রী আরও জানান, পাঞ্জাবে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচটি ধর্ষণের ঘটনা নথিভুক্ত করা হচ্ছে। এ কারণে সরকার যৌন হয়রানি, অপব্যবহার এবং জবরদস্তির মামলা মোকাবিলা করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা বিবেচনা করছে।

এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, এ বিষয়ে সুশীল সমাজ, নারী অধিকার সংগঠন, শিক্ষক ও আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করা হবে। পাশাপাশি তিনি অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের নিরাপত্তার গুরুত্ব শেখানোর আহ্বান জানান।
মন্ত্রীর বক্তব্যে জানা যায় যে, বেশ কয়েকটি মামলায় অভিযুক্তদের আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি সরকার ধর্ষণবিরোধী অভিযান শুরু করেছে। শিক্ষার্থীদের স্কুলে হয়রানি সম্পর্কে সতর্ক করা হবে। সন্তানদের কীভাবে রক্ষা করতে হয়, সে বিষয়ে মা-বাবাদের সচেতন করা হবে।

ধর্ষণের বিচার দ্রুততর করতে সরকার ডিএনএ পরীক্ষার সংখ্যা ও গতি আরও বাড়াবে বলেও জানান তিনি। লিঙ্গ সম্পর্কিত সহিংসতা, যৌন নির্যাতন ও বিভিন্ন ধরনের নারী নির্যাতনের ঘটনা কমাতে হিমশিম খাচ্ছে পাকিস্তান।

গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্স ২০২১ অনুসারে দেখা যায়, নারী ও শিশু যৌন নির্যাতনে ইরাক, ইয়েমেন ও আফগানিস্তানের চেয়েও এগিয়ে রয়েছে পাকিস্তান। ১৫৬টি দেশের মধ্যে পাকিস্তানের অবস্থান ১৫৩।

ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর রাইটস অ্যান্ড সিকিউরিটির (আইএফএফআরএএস) এক রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তানে গত চার বছরে ১৪ হাজার ৪৫৬ জন নারী হয়রানির শিকার হয়েছেন। যার মধ্যে পাঞ্জাবে সর্বোচ্চ সংখ্যার রেকর্ড হয়েছে। এছাড়া কর্মক্ষেত্রে নারী হয়রানি, নারীর প্রতি গার্হস্থ্য সহিংসতা এবং নারীর প্রতি অন্যান্য বৈষম্যমূলক কর্মকাণ্ডও ব্যাপকহারে বেড়েছে।

মানবাধিকার মন্ত্রণালয়ের নথিতে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে দেশে কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি হয়রানির এবং সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ৫ হাজার ৪৮টি এবং ২০১৯ সালে ৪ হাজার ৭৫১টি ঘটনা ঘটেছে; ২০২০ সালে ৪ হাজার ২৭৬টি এবং ২০২১ সালে ২ হাজার ৭৮টি মামলা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশিষ্ট অধিকারকর্মী নয়াব গোহর জান বলেন, একজন নারীর বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার মুহূর্ত থেকে পুলিশে নথিভুক্ত করার পুরো প্রক্রিয়াটি এবং তারপর আদালতের পদ্ধতি এমনভাবে গঠন করা হয়েছে যাতে ন্যায়বিচার অধরা থেকে যায়।

এই বিভাগের আরও খবর