img

গল্প , উপন্যাস বা সিনেমার কাহিনিতে এমন ঘটনা হরহামেশাই দেখতে পাওয়া যায়। তবে বাস্তবেও এমনটা হতে পারে। আমেরিকার মিশিগান অঙ্গরাজ্যে এই অভিনব ঘটনা ঘটেছে।

২০১৫ সালের মে মাসে খুন হন ৪৬ বছর বয়সী মার্টিন ডুরাম নামে এক ব্যক্তি। খুব কাছ থেকে পাঁচটি গুলি করা হয় তাকে। ঘরে কীভাবে খুন হন তিনি–এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাচ্ছিল না আমেরিকার পুলিশও।
এদিকে মৃত মার্টিনের স্ত্রী গ্লেনা ডুরামকেও মাথায় আঘাত করে দুর্বৃত্তরা পালিয়েছে–এমন অভিযোগ ছিল স্ত্রী গ্লেনার। আদালতে এ খুন নিয়ে মামলা শুরু হলে হাজির হন মৃত মার্টিনের প্রথম স্ত্রী  ক্রিস্টিনা। হঠাৎ এমন সাবেক স্বামীর মৃত্যুতে তিনি একটু অবাকই হন। তবে তার সব রহস্যের জট খুলে যায় তাদেরই পোষা পাখি টিয়ার ডোন্ট শুট কথাটি শুনে।

টিয়া পাখিটি ক্রিস্টিনার কাছে এসে মার্টিনের গলা হুবহু নকল করে সে সময়ের কথাবার্তা  হুবহু  বলতে শুরু করে। ঘটনার একেবারে শেষে টিয়া পাখি চেঁচিয়ে বলতে থাকে 'ডোন্ট শুট'।

টিয়ার সব কথা শুনে মার্টিনের প্রথম স্ত্রীর বুঝতে আর বাকি থাকে না যে, মার্টিনকে গুলি করে মেরেছে তারই দ্বিতীয় স্ত্রী গ্লেনা ডুরাম। এরপর নিজেও করতে চেয়েছিলেন আত্মহত্যা। কিন্তু ভাবলেশহীন গ্লেনা ডুরামের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ খুঁজে পাচ্ছিল না আদালত কর্তৃপক্ষ।

মার্টিনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটার সময় তাদের পোষা পাখিটি সেখানে ছিল। তাই ভরা আদালতে পাখিটির সাক্ষ্য নেয়া হয়। শুরু হয় বাদী-বিবাদীর আইনি তর্কযুদ্ধ।

পাখির সাক্ষ্যতে কাউকে অপরাধী করা যায় না। তাই অপরাধীর বিরুদ্ধে প্রমাণ সংগ্রহ এবং কথার বেড়াজালে আসামিকে নানা প্রশ্নে জর্জরিত করার একপর্যায়ে ফার্স্ট ডিগ্রি মার্ডারের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন গ্লেনা।
প্রকৃত আসামিকে ধরিয়ে দেয়ার একমাত্র কান্ডারি এই পাখিটি আফ্রিকান গ্রে প্রজাতির টিয়া। পাখি গবেষকদের দাবি, এই প্রজাতির টিয়া পাখি অনেক বুদ্ধিমান হয়। একবার শুনেই ২০০টিরও বেশি শব্দ মনে রাখতে পারে এরা। তাই হুবহু সেদিনের ঘটনা বর্ণনা করতে পেরেছে বাড নাম রাখা সেই পাখিটি।

সূত্র: বিবিসি, আনন্দবাজার পত্রিকা। 

এই বিভাগের আরও খবর