img

প্রেম মানে না কোনো বাধা, কোনো ভৌগোলিক সীমারেখা। তাইতো প্রেমের টানে সুদূর আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গাজীপুরে এসেছেন রাইয়ান কফম্যান।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় সূত্রে গাজীপুরের মেয়ে সাইদা ইসলামের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে রাইয়ানের।

গত রোববার (২৯ মে) বাংলাদেশে আসেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক রাইয়ান। এরপর তারা দুজনে পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে করেন।

২৬ বছর বয়সী সাইদা ইসলাম গাজীপুর মহানগরের বাসন থানার ভোগড়া মধ্যপাড়া এলাকার মোশারফ হোসেন মাস্টারের নাতনি ও মৃত সিকন্দার আলীর মেয়ে। রাইয়ান কফম্যান যুক্তরাষ্ট্রের মিশৌরী স্টেটের ক্যানসাস সিটির নাগরিক। তিনি একটি প্লাস্টিক পণ্য তৈরির কারখানায় অপারেটর পদে কাজ করেন। লেখাপড়া করেছেন মাধ্যমিক স্কুল পর্যন্ত। পরিবারে মা-বাবা ও এক বড় ভাই রয়েছে। সবাই যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন।

কনের নানা মোশারফ হোসেন মাস্টার জানান, আমার মেয়ের জামাই ঢাকার দনিয়া এলাকার বাসিন্দা সিকন্দার আলী ২০১৯ সালে মারা যান। তার মৃত্যুর পর আমার মেয়ে দুই নাতনিকে নিয়ে গাজীপুরের ভোগড়া মধ্যপাড়া এলাকায় চলে আসেন। এখানেই এখন তারা বসবাস করছেন। ২০২০ সালে মানবিকে স্নাতক পাস করেন সাইদা।

সাইদা জানান, ২০২১ সালের এপ্রিলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রথম পরিচয় হয় রাইয়ান কফম্যানের সঙ্গে। পরিচয়ের সূত্র ধরে আমরা নিজেদের ফোন নম্বর ও ঠিকানা বিনিময় করেন। এরপর থেকে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হতো। 

‘ফেসবুক, ফোন ও ভিডিও কলে কথা বলতে বলতে আমাদের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়। একপর্যায়ে দুজন দুজনকে ভালোবেসে ফেলি। এভাবে কেটে যায় প্রায় এক বছর। এরপর দুজনে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেই। রাইয়ান বিয়ে করার জন্য খ্রিষ্টধর্ম ত্যাগ করে যথানিয়মে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। পরে দুই পরিবারের সম্মতিতে এ বছরের ২৯ মে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে আসেন রাইয়ান। এদিনই আমাদের দুজনের প্রথম দেখা হয়।’

সাইদা আরও বলেন, এয়ারপোর্ট থেকে রাইয়ান আমার সঙ্গে গাজীপুরে নানার বাড়িতে আসেন। পরে সামাজিক ও ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। বর্তমানে আমরা নানাবাড়িতেই আছি। বাংলাদেশে আসার আগেই বিয়ের গহনা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কেনাকাটার জন্য রাইয়ান টাকা পাঠিয়ে দেন। ওই টাকা দিয়ে বিয়ের প্রয়োজনীয় কেনাকাটাও সম্পন্ন হয়।

এদিকে শুক্রবার (৩ জুন) নবদম্পতি স্থানীয় চান্দনা চৌরাস্তা বাজারে কেনাকাটা করতে যান। এ দেশের বাজারের পরিবেশ নিয়ে এক মন্তব্যে রাইয়ান বলেন, খুবই জনাকীর্ণ ও গোলমেলে। রাস্তাঘাটের পরিবেশ খুব নোংরা।

তবে সাইদার স্বজন ও বাংলাদেশিদের বিষয়ে তার অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করতে গিয়ে রাইয়ান কফম্যান বলেন, বাঙালিরা খুবই অতিথিপরায়ণ। আমেরিকায় অচেনাদের সঙ্গে কেউ খুব একটা কথা বলে না। কিন্তু বাংলাদেশে আসার পর দেখছি আমার প্রতি সবাই খুবই আন্তরিক। আমার ক্ষুধা না লাগতেই লোকজন আমাকে খাওয়ানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন, আদর, আপ্যায়ন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন; যা আমেরিকায় বিরল।

সাইদাকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান রাইয়ান। রাইয়ান বলেন, আনুষঙ্গিক কাগজপত্র (কে-ওয়ান) ভিসা প্রসেসিং করতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। এসব সম্পন্ন হলেই সাইদাকে আমেরিকা নিয়ে যাব।

এই বিভাগের আরও খবর