মেসির খেলার ধরন বোঝে না পিএসজির কিছু খেলোয়াড়: নেইমার
স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনায় থাকতে ফুটবল জাদুকরের খেতাব পেয়েছেন লিওনেল মেসি। সেই ক্ষুদে জাদুকরকে দলে ভিড়িয়ে আশানুরূপ ফল পাচ্ছে না প্যারিসের ক্লাব পিএসজি। আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের পারফরম্যান্সে ধার হারানোর বিষয়ে তার সতীর্থ ও বন্ধু নেইমারের মত, মেসির খেলার ধরন বোঝে না পিএসজির কিছু খেলোয়াড়।
ক্ষুদে জাদুকর, মহাতারকা এসব খেতাব এমনি পাননি লিওনেল মেসি। ক্লাব ক্যারিয়ার বার্সেলোনায় কাটিয়েছেন স্বর্ণালি যুগ। জিতেছেন একে একে সাতটি ব্যালন ডি’অর। জাতীয় দলে ভালো সময় কাটাচ্ছেন একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম এ ফুটবল তারকা। গত বছর আর্জেন্টিনার ২৮ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে দিয়ে এনে দিয়েছেন কোপা আমেরিকার ট্রফি। বার্সেলোনার হয়ে তিনি জিতেছেন চারটি উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি। বলা যায় যার তিনটিতে তার অবদান সরাসরি।
সে মহাতারকাকে ২০২১ সালের আগস্টে দলে ভিড়িয়ে প্যারিসের ক্লাব পিএসজি নিজেদের অধরা স্বপ্নপূরণের আবদার জানিয়েছিল। যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা বার্সাকে তিনি চারবার জিতিয়েছেন, সে শিরোপা একবার হলেও চায় প্যারিসবাসী। তার সঙ্গে আক্রমণভাগে বিশ্বের অন্যতম দামি স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পে ও নেইমার তো ছিলই। এরপর ইউরোর সেরা গোলকিপার জিয়ানলুইজি ডোনারুম্মা, রক্ষণভাগের অন্যতম কান্ডারি সার্জিও রামোসকেও এনে দিলেন ক্লাবটির সভাপতি নাসের আল খেলাইফি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে স্বপ্নপূরণ করতে পারলেন না মেসি। কোয়ার্টার ফাইনালে তারা রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে হেরে নিয়েছে বিদায়।
তবে তার চেয়ে হতাশার ছিল মেসির পারফরম্যান্স। ইউরোপের শ্রেষ্ঠ প্রতিযোগিতা অথবা লিগ ওয়ান, কোথাও উজ্জ্বল ছিলেন না মেসি। ক্যাম্প ন্যুয়ের সে ক্ষুদে মেসিকে পাওয়া গেল না প্যারিসে। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩৪ ম্যাচে তিনি করেছেন মাত্র ১১ গোল। আর ১৪ গোলে সহায়তা নিয়ে মৌসুম শেষ করেছেন। ২০০৭-০৮ মৌসুমের পরে ক্লাব ক্যারিয়ারে এত কম গোল কখনো ছিল না মেসির। সবশেষ তার পা থেকে আসা গোলের সংখ্যা ৩১টি, ২০১৯-২০ মৌসুমে। আর বার্সা ছাড়ার বছরেও করেছেন ৩৮ গোল।
তবে হঠাৎ কেন মেসির এত অধঃপতন। ব্যাখ্যাটা আছে বন্ধু ও সতীর্থ নেইমারের কাছে। ফরাসি গণমাধ্যম কানাল প্লাসের ‘কানাল ফুতবল ক্লাব’ নামের অনুষ্ঠানে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নেইমার পিএসজিতে প্রথম মৌসুমে মেসির ‘ব্যর্থ’ হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘ও অনেক বছর ধরে বার্সেলোনায় ছিল। এক ক্লাব থেকে অন্য ক্লাবে গিয়ে খাপ খাওয়ানোর ব্যাপারটা সহজ কিছু না। দল-শহর বদল করা অনেক কঠিন। এ ছাড়া, ও একা আসেনি এখানে। পুরো পরিবার যাতে খাপ খাওয়াতে পারে এখানে, সে ব্যাপারটাও আছে।’
নেইমার যোগ করেন, ‘দল যেভাবে ফুটবল খেলছে, অনেক খেলোয়াড়ই আছে, যারা মেসির খেলার ধরন বোঝে না। তাই সেটাও একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। লিও, কিলিয়ান আর আমি—এ তিনজনকে মানুষ সব সময় পারফরম্যান্স, পরিসংখ্যান আর শিরোপার সংখ্যা দিয়ে বিচার করে।’