img

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে কোণঠাসা করতে গিয়ে পুরো বিশ্বকেই হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটোর দেশগুলো।

 বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউক্রেন যুদ্ধে ইউরোপসহ কমবেশি বিশ্বের প্রায় সব দেশই অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পুরো ফায়দা লুটছে যুক্তরাষ্ট্র। বেশি দামে ইউরোপে জ্বালানি, কাঁচামাল ও অস্ত্র বিক্রি করছে মার্কিন কোম্পানিগুলো। শুধু তাই নয়, ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে খাদ্যসংকট দুর্ভিক্ষে রূপ নিতে পারে আফ্রিকায়।

ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়াকে দায়ী করলেও এর পটভূমি তৈরিতে তাদের দায়ও কম নয়। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে কোণঠাসা করতে গিয়ে পুরো বিশ্বকেই হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ইউরোপীয় দেশগুলো।

যুদ্ধের জেরে সরবরাহ সংকটে জ্বালানির দাম বেড়ে গেছে। এতে বিশ্বজুড়েই টালমাটাল নিত্যপণ্যের দাম। আর এর মাশুল সবচেয়ে বেশি দিচ্ছে ইউরোপই। ইউরোপের দেশে দেশে এখন রেকর্ড মুদ্রাস্ফীতি।

ইউক্রেন যুদ্ধে ইউরোপসহ কমবেশি বিশ্বের প্রায় সব দেশই অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও যুদ্ধের পুরো ফায়দা লুটছে যুক্তরাষ্ট্র। জ্বালানি ও কাঁচামালসহ অন্যান্য পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বর্ধিত দামে ইউরোপে তা বিক্রি করছে মার্কিন কোম্পানিগুলো। অথচ এতদিন কম দামেই এসব পণ্য রাশিয়া থেকে আমদানি করতে পারত ইউরোপের দেশগুলো।

অবরোধ আরোপের জবাবে ইতোমধ্যে ইউরোপের কয়েকটি দেশে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়া। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেশি দামে তেল ও গ্যাস আমদানি করছে দেশগুলো। রাশিয়াভীতি জাগিয়ে ইউরোপে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির বাজার তৈরি করেছে ওয়াশিংটন।

ইউক্রেন যুদ্ধের সবচেয়ে বেশি মাশুল দিতে হচ্ছে এশিয়া ও আফ্রিকার দরিদ্র ও অনাহারপীড়িত দেশগুলোকে। এই দেশগুলো রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে খাদ্যপণ্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল। যুদ্ধের জেরে শুধু ইউক্রেনেই আটকা পড়ে আছে আড়াই কোটি মেট্রিক টন গম। অপরদিকে পশ্চিমা অবরোধের কারণে অনিশ্চিত রাশিয়া থেকে খাদ্য সরবরাহ।

ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবরোধ তুলে না নেওয়া হলে অচিরেই এই খাদ্যসংকট দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির দিকে মোড় নেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে মৃত্যুঝুঁকিতে পড়বে আফ্রিকার অনাহারপীড়িত কোটি কোটি মানুষ। এ পরিস্থিতিতে আফ্রিকা থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নতুন ঢল নামতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ।

সব মিলিয়ে ইউক্রেনকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্ররোচিত করে পুরো বিশ্বকেই সংকটের মুখে ফেলে দিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। আর পেছন থেকে তাদের ইন্ধন দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

এই বিভাগের আরও খবর