img

যুক্তরাষ্ট্রে বারবার বন্দুক হামলা হলেও তা নিয়ন্ত্রণ না হওয়ায় বাড়ছে আতঙ্ক। হামলার মহামারিতে নিরাপত্তা হুমকিতে দেশটির নাগরিকরা। নিরাপত্তার অজুহাতে নাগরিকদের হাতে থাকা বন্দুকই প্রতিনিয়ত কেড়ে নিচ্ছে শিশুসহ অসংখ্য নিরীহ মানুষের প্রাণ।

গবেষণা বলছে, দেশটিতে প্রতি ৬০ ঘণ্টায় একটি করে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বেছে নেয় স্কুল-কলেজ, ক্লাব-রেস্তোরাঁ কিংবা শপিংমল। উদ্দেশ্য, কম সময়ে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক নিরীহ মানুষকে হত্যা করা। এজন্য বন্দুকের সহজলভ্যতাকে প্রধান কারণ বলছেন বিশ্লেষকরা। 

হার্ভার্ডের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে ২০১১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রতি ৬৪ দিনে একবার করে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর আগে ২৯ বছর ধরে এর গড় ছিল ২০০ দিনে একবার। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, ১৯৯৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে ৯০টি। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়, নাইট ক্লাব থেকে সুপার শপসহ বিভিন্ন স্থানে চালানো হয় এ ধরনের হামলা।  

গবেষণার তথ্য বলছে, ২০১৫ সালে দেশটিতে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে ৩৬১টি। অর্থাৎ ওই বছর প্রায় প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্রের কোথাও না কোথাও বন্দুক হামলা হয়েছে। এতে নিহত হন ৩২৬ জন। আহত হন দেড় হাজারেরও বেশি।  

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা সংস্থার হিসাব বলছে, ১৯৭০ সাল থেকে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি স্কুলে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে ২০১৮ সালে। ওই বছর দেশটির স্কুলে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে ৯৪টি। 

গবেষণা বলছে, আমেরিকায় জনসংখ্যার চেয়ে আগ্নেয়াস্ত্রের সংখ্যা বেশি। শুধু আগ্নেয়াস্ত্রের কারণেই দেশটিতে বছরে প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ নিহত হন। অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন নিহত হন প্রায় ১০০ জন।  

হামলাকারীর আগাম তথ্য ও হামলা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে তেমন সাফল্য না পাওয়ায় দেশটিতে প্রশ্নের মুখে এফবিআই, সিআইএ ও এনএসএর মতো শক্তিশালী গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থা। অনেক ক্ষেত্রে হামলার কারণও থাকছে অজানা। দেশটিতে বন্দুক হামলা এখন যেন এক গণ-আতঙ্ক। 

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে বারবার হামলার জন্য বন্দুকের সহজলভ্যতাকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বিশ্বে খবরদারি করা ওয়াশিংটন নিজের ঘর সামলাতেই ব্যর্থ। 

এই বিভাগের আরও খবর