img

রাজধানীতে হঠাৎ বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। দিন দিন আক্রান্তের এ সংখ্যা এত বাড়ছে যে, চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, দক্ষিণখান, বাসাবো, কদমতলী ও মোহাম্মদপুর এলাকার মানুষ বেশি ভর্তি হচ্ছে। এ ছাড়া সায়েদাবাদ, শনিরআখড়া, কামরাঙ্গীরচর, মিরপুর, বাড্ডা, উত্তরখান, উত্তরা ও রাজধানীর পার্শ্ববর্তী নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকেও রোগী আসছে।

হাসপাতালটিতে গত ১৬ মার্চ থেকে গত ২ এপ্রিল বিকেল পর্যন্ত ২১ হাজার ৩ রোগী ভর্তি হয়েছেন। প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ১৬৭ রোগী। অতিরিক্ত চাপ সামলাতে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে তাঁবু টানিয়ে রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

রাজধানীর অন্যান্য হাসপাতালেও ডায়রিয়া রোগীর ভিড় বাড়ছে। কয়েকটি হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৮-১০ দিন ধরে এ চাপ বেড়েছে। ভর্তি হওয়া রোগীদের অধিকাংশই বয়স্ক। শিশুরাও আছে, তবে সংখ্যায় কম।

আইসিডিডিআর,বির হাসপাতাল শাখার প্রধান ডা. বাহারুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ভর্তি রোগীদের মধ্যে ১৮ বছরের রোগী বেশি। তাদের মধ্যে তীব্র পানিশূন্যতা লক্ষ করা যাচ্ছে। তীব্র গরমে অস্বাস্থ্যকর খাবার ও অনিরাপদ পানীয় পান করার ফলে ডায়রিয়ার তীব্রতা বেড়েছে।

হাসপাতালে আসা ভুক্তভোগীরা বলেন, ওয়াসার পানি নোংরা আসে, গন্ধ পানি পান করা যায় না। বাধ্য হয়ে পান করতে হয়। মাঝে মাঝে ভালো পানি এলেও গন্ধ পাওয়া যায়। 

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ডায়রিয়া রোগের প্রকোপ বাড়ার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।

ডা. নাজমুল ইসলামের মতে, প্রতিদিনকার কাজকর্মে বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করলে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এবং সবসময় সুপেয় পানি পান করলে ডায়রিয়া থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।

তিনি বলেন, সরকারি হাসপাতালগুলোতে খাবার স্যালাইন, আইভি ফ্লুইড স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণের সরবরাহ রয়েছে। অল্প ডায়রিয়া থাকতেই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।

চিকিৎসকরা বলছেন, গরমে জীবাণু বেশিক্ষণ বেঁচে থাকে। তা ছাড়া অনেকেই অনিরাপদ পানি পান করেন। এতে ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই বাইরের কোনো খাবারের পাশাপাশি যত্রতত্র থেকে পানি খাওয়া যাবে না।

এই বিভাগের আরও খবর