img

উত্তর কোরিয়া বুধবার হাইপারসনিক মিসাইলের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম খবর দিচ্ছে। 

কেসিএনএ বলছে, এটি ৭০০ কিলোমিটার দূরের একটি লক্ষ্যবস্তুতে 'নিশ্চিতভাবে আঘাত' করেছে। 

হাইপারসনিক মিসাইলের এটি দ্বিতীয় পরীক্ষা চালানোর ঘটনা। 

'হাইপারসনিক' মিসাইল একটি দূরপাল্লার এবং শব্দের চেয়ে কয়েকগুণ দ্রুতগতিসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র।

এ মিসাইল ব্যালিস্টিক মিসাইলের চেয়ে বেশি সময় ধরে শনাক্তকরণ রাডারকে ফাঁকি দিতে পারে। 

এই মূহুর্তে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মত অল্প কয়েকটি দেশেরই কেবল হাইপারসনিক মিসাইল আছে।

এ মুহূর্তে বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষেত্রে। 

এতদিন ধরে বিভিন্ন দেশের হাতে যেসব দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছিল, সেগুলো অনেকটা সেকেলে হয়ে যাচ্ছে এবং তার শূন্যস্থান পূরণ করতেই এ প্রতিযোগিতা - কার আগে কে নতুন প্রজন্মের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে পারে।

কয়েকদিন আগে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-আন পিয়ংইয়ংয়ের প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করার ঘোষণার পরই এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার খবর পাওয়া গেল।

নতুন বছরের প্রথম দিনে এক ভাষণে মি. কিম বলেছিলেন যে, কোরীয় উপদ্বীপে ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীল সামরিক পরিবেশ দেখা দিয়েছে, যে কারণে পিয়ংইয়ং নিজের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা শক্তিশালী করার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবে। 

দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনা ভেস্তে যাবার পর গত বছর উত্তর কোরিয়া অনেকগুলো ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে।

ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিষয়টি বুধবার ভোরে জাপানের কোস্টগার্ড প্রথম শনাক্ত করে। 

এরপর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিশ্চিত করে। 

কেসিএনএর রিপোর্টে বলা হয়েছে, বুধবারের ওই পরীক্ষায় 'হাইপারসনিক গ্লাইডিং ওয়ারহেড' তার রকেট বুস্টার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ৭০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে 'নিপুণভাবে আঘাত' করেছে। 

রিপোর্টে আরো বলা হয় এ পরীক্ষার মাধ্যমে ক্ষেপণাস্ত্রের ফ্লাইট নিয়ন্ত্রণ এবং শীত কালে কাজ করার ক্ষমতার মতো কিছু বিষয়ও নিশ্চিত হওয়া গেছে।

হাইপারসনিক অস্ত্র সাধারণত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়ে কম উচ্চতায় লক্ষ্যবস্তুর দিকে উড়ে যায় এবং শব্দের পাঁচ গুণেরও বেশি গতিতে ছোটে, যেমন ঘণ্টায় প্রায় ৬ হাজার ২০০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারে এ ক্ষেপণাস্ত্র। 

দুই ধরনের হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র

এমন এক সময়ে উত্তর কোরিয়া এ পরীক্ষা চালালো যখন করোনাভাইরাসের কারণে সীমান্ত অবরোধের ফলে পিয়ংইয়ং এখন খাদ্য সংকটে পড়েছে। এ কারণে দেশটির অর্থনীতির অবস্থা এখন খুবই খারাপ। 

বছরের শেষে মি. কিম বলেছিলেন যে তার দেশ এখন 'জীবন-মৃত্যুর লড়াই' এর মুখোমুখি। কিন্তু দেশে উন্নয়ন বাড়ানো এবং জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা দেশটির এ বছরের লক্ষ্য বলে তিনি উল্লেখ করেন। 

অর্থনীতির খারাপ অবস্থা সত্ত্বেও দেশটি নিজের সমরাস্ত্র কর্মসূচী চালিয়ে গেছে, এবং বরাবর নিজেদের আত্মরক্ষাকে এর পেছনে কারণ হিসেবে তুলে ধরেছে পিয়ংইয়ং।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়াকে তার পারমাণবিক অস্ত্র সমৃদ্ধকরণ পরিত্যাগের আহ্বান জানিয়ে আসছে। 

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের সাথে পিয়ংইয়ংয়ের সম্পর্ক এখন পর্যন্ত উত্তেজনায় ভরা।

 

এই বিভাগের আরও খবর