ডিপজলকে ধরতে ১০০ ফুটেজ দেখে পুলিশ
নগরীর পাঁচ কিলোমিটার এলাকার ২০টির বেশি পয়েন্টের অন্তত ১০০ সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে এক মাস চেষ্টার পর দুই সহযোগীসহ পুলিশের জালে ধরা পড়লেন ছিনতাইকারী সাত্তার শাহ ডিপজল (৪১)। সোমবার (০৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় ইপিজেড থানার আকমল আলী রাস্তার খালপাড়ের জাহাঙ্গীরের বিল্ডিং থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ডিপজলের দেহ তল্লাশি করে একটি এলজি, এক রাউন্ড কার্তুজ এবং পাঁচটি এক হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়াও বাসার প্লাস্টিকের ওয়ার্ড রোব থেকে ৫০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
বিকাশের পতেঙ্গা জোনের ডিস্ট্রিবিউটর মো. আসলামের অভিযোগের ভিত্তিতে চিহ্নিত ছিনতাইকারী ১৯ মামলার আসামি সাত্তার শাহ ডিপজলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একই সঙ্গে তাঁর স্ত্রী রোজিনা বেগম (২৭) ও সহযোগী রাজু দেবনাথকে (৩৬) গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিপজলের গ্রামের বাড়ি রাউজানের কদলপুর ফরিদ সাহেবের বাড়ি। তিনি ইপিজেড থানার কাজীর গলির জাহাঙ্গীরের বিল্ডিংয়ে ভাড়া থাকতেন। রাজু পটিয়ার জিরি ইউপির সুনীল সওদাগরের বাড়ির রতন দেবনাথের ছেলে।
পুলিশ জানায়, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এজেন্ট এবং নগদ টাকা বহনকারীরাই তাদের মূল টার্গেট। বাইক রাইডারের ছদ্মবেশে সুযোগ বুঝে হাতিয়ে নেওয়া হয় টাকা, আর তা দিতে না চাইলেই শুরু হয় এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত। কয়েক মাসে এভাবেই চট্টগ্রামে শতাধিক ছিনতাই করেছে ডিপজল গ্রুপ। সর্বশেষ গত ৫ ডিসেম্বর পতেঙ্গা এলাকায় এক বিকাশ এজেন্টকে ছুরিকাঘাত করেছিল এই ছিনতাইকারীচক্র। টাকার ব্যাগ কেড়ে নিতে না পারায় ধারালো ছোরা দ্বারা ডিএসও আসলামের হাতের কবজিতে একাধিক আঘাত করে। এতে তাঁর দুই হাতের কবজির রগ কেটে যায়।
আসলামের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম নগরীর ত্রাস সৃষ্টিকারী ডিপজলের খোঁজে এক মাস ধরে নগরীর পাঁচ কিলোমিটার এলাকার ২০টির বেশি পয়েন্টের অন্তত ১০০ সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে পুলিশ। একেক সময় একেক মোটরসাইকেল এবং সার্বক্ষণিক হেলমেট ব্যবহার করায় তাকে শনাক্তে চরম বেগ পেতে হয় পুলিশকে।
এ বিষয়ে পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কবির হোসেন বলেন, 'নগরীর বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই করত সাত্তার শাহ ডিপজল। আমরা নগরের পাঁচ কিলোমিটার এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ডিপজলসহ তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করি। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি এলজি ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তিনটি মামলা করে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।'
এই ছিনতাইকারী গ্রুপের নেতা সাত্তার শাহ ডিপজলের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ১৯টি। নগরী ও জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে এই গ্রুপের অন্তত ১৫ জন ছিনতাইকারী সক্রিয় আছে।