img

মহান আল্লাহ যখন আপনার কাছ থেকে কোনো কিছু ছিনিয়ে নেন, তখন যদি আপনি শুধু ধৈর্য ধারণ করেন এবং তাঁর কাছ থেকে আপনার পুরস্কার প্রার্থনা করেন, তবে তিনি আপনাকে তার চেয়েও ভালো কোনো কিছু দিয়ে ক্ষতি পূরণ করবেন। নবী করিম (সা.) বলেছেন, যার দৃষ্টিশক্তি ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে অথচ সে ধৈর্য ধরে, তাকে এর বিনিময়ে জান্নাত দিয়ে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

অন্য হাদিসে নবী করিম (সা.) বলেছেন, যদি কেউ এ জগৎ থেকে তার প্রিয় কাউকে হারিয়ে তার রবের কাছে এর প্রতিদান চায়, তাহলে তাকে জান্নাত দিয়ে এর খেসারত দেওয়া হবে।

অতএব, কোনো দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার জন্য অত্যন্ত দুঃখ বোধ করবেন না। কারণ যে মহান সত্তা এর হুকুম (আদেশ) দিয়েছেন, তাঁর কাছে এর ক্ষতিপূরণ ও এক মহাপুরস্কার আছে।

যারা এই পৃথিবীতে দুর্দশাকবলিত ও আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত, তারা জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে প্রশংসিত হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘(জান্নাতবাসীদের বলা হবে) তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। কেননা তোমরা ধৈর্য ধারণ করেছিলে। চূড়ান্ত গৃহ কতই না চমৎকার।’ (সুরা : রাআদ, আয়াত : ২৪)

কষ্টসহিষ্ণুতার কারণে কেউ যে পুরস্কার পায়, আমাদের অবশ্যই তা গভীরভাবে ভেবে দেখতে হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘তাদের রবের পক্ষ থেকে তাদের জন্য কল্যাণ এবং তারাই তাঁর অনুগ্রহ লাভ করে  এবং তারাই সঠিক পথপ্রাপ্ত।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৫৭)

পার্থিব জীবন খুবই সংক্ষিপ্ত এবং এর ধনভাণ্ডার খুবই নগণ্য। পরকাল উত্তম ও চিরস্থায়ী এবং এ জগতে যে সমস্যা জর্জরিত, পরজগতে সে তার পুরস্কার পাবে। এখানে (দুনিয়ায়) যে-ই কঠোর পরিশ্রম করবে, সেখানে (আখিরাতে) সে-ই শান্তি পাবে। যারা এ জগতের প্রতি আসক্ত, যারা এর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রাখে, যারা এর প্রেমে পড়েছে, তাদের সর্বাপেক্ষা কঠিন ভোগান্তি পোহাতে হবে। তারা পরকালীন সুখ-সমৃদ্ধি (শান্তি ও সম্পদ) হারাবে। তারা শুধু ইহজীবনকে উপভোগ করতে চায়। তাদের এ কামনার কারণেই তারা এ জগতের মুসিবতকে কঠিন ভাবে। তারা তাদের চারপাশে ইহজীবন ছাড়া আর কিছুই দেখতে পায় না। তারা দুনিয়ার অস্থায়িত্ব ও নগণ্যতা (তুচ্ছতা) দেখতে পায় না।

হে দুর্দশাকবলিতরা! যদি আপনারা ধৈর্য ধারণ করেন, তবে আপনারা কোনো কিছু হারাবেন না; আর আপনারা বুঝতে না পারলেও এতে আপনারা লাভবান হবেন। দুর্দশাগ্রস্ত ব্যক্তির উচিত পরকালের ফলাফলকে ভেবে দেখা, যে ফলাফল ধৈর্যশীলদের জন্য নির্ধারিত। ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর উভয় দলের মধ্যে একটি এক দরজাওয়ালা প্রাচীর দাঁড় করানো হবে। এর ভেতরে রহমত থাকবে আর এর বাইরে থাকবে আজাব।’ (সুরা : আল হাদিদ, আয়াত : ১৩)

এই বিভাগের আরও খবর