img

নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি সব কিছুতে রাজি। বিভিন্ন মহল থেকে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে সংবিধান অনুসারে আইন প্রণয়নের যে দাবি উঠেছে,  জাতীয় পার্টিও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে সে প্রস্তাব দিয়েছে। পাশাপাশি এ বিষয়ে আগের দুইবারের মতো রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটি গঠন করতে চাইলে সে কমিটিতে তাদের পছন্দের ব্যক্তিদের নামের তালিকাও দিয়েছে। আর সার্চ কমিটি গঠন না করে যদি নির্বাচন কমিশনারদের সরাসরি নিয়োগ দেওয়া হয়, সে ক্ষেত্রেও দলটি একজনের নাম প্রস্তাব করেছে।

গতকাল সোমবার বিকেলে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপের সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এবং সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

সংলাপ শেষে সন্ধ্যায় দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের সাংবাদিকদের  বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠনের অংশ হিসেবে রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে তাঁর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমরা তিনটি প্রস্তাব দিয়েছি। প্রথমত জাতীয় পার্টি চায় সুনির্দিষ্টভাবে সংবিধান অনুযায়ী আইন প্রণয়ন হোক। আইন প্রণয়ন যে সময়সাপেক্ষ ব্যাপার, সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।’ 

তিনি বলেন, ‘আইন প্রণয়নের জন্য আমাদের আরেকটি প্রস্তাব ছিল তা হলো অধ্যাদেশ জারি। সব শেষে যদি সার্চ কমিটির মাধ্যমেই ইসি গঠন করা হয়, সে জন্য জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে চার-পাঁচজনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি আমাদের কথাগুলো আন্তরিকতার সঙ্গে শুনেছেন। প্রস্তাবগুলো পূরণের বিষয়ে আশ্বাসও দিয়েছেন।’

গতকাল বিকেল ৪টায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিদের সঙ্গে  সংলাপ  শুরু করেন। দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ছাড়াও পার্টির আরো সাত সদস্য ওই সংলাপে অংশ নেন। দলটির প্রাথমিক সিদ্ধান্ত ছিল, কো-চেয়ারম্যানরাই এ সংলাপে অংশ  নেবেন। কিন্তু রাষ্ট্রপতির চিঠিতে আটজন প্রতিনিধির কথা উল্লেখ থাকায় শেষ মুহূর্তে পার্টির সাবেক মহাসচিব ও প্রেসিডিয়াম সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গাকে প্রতিনিধিদলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কারণ কো-চেয়ারম্যানদের আটজনের মধ্যে জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু মারা যাওয়ায় এ পদধারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাতজনে। 

দুই পক্ষেরই অংশগ্রহণ : সংলাপে অংশ নেওয়া আট নেতার মধ্যে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুজিবুল হক চুন্নু, এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মসিউর রহমান রাঙ্গা এই চারজন পার্টিতে রওশন এরশাদঘেঁষা নেতা হিসেবে পরিচিত।  অন্যদিকে কাজী ফিরোজ রশিদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও সালমা ইসলাম পার্টির বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের)পন্থী নেতা হিসেবে পরিচিত। তবে উভয় পক্ষের নেতারাই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ বলয় প্রভাবিত বলে প্রচার রয়েছে। 

কবে কোন দলের সঙ্গে সংলাপ : জাতীয় পার্টির সঙ্গে গতকালের সংলাপটি ছিল নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রথম সংলাপ। সংলাপে আগামী ২২ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় অংশ নিচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জাসদ। জোটটির আরেক শরিক বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সঙ্গে সংলাপ ২৬ ডিসেম্বর। ওই দিন আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদকে।

২৭ ডিসেম্বর সংলাপ হবে ১৪ দলীয় জোটের আরেক শরিক বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের সঙ্গে। এদিন সংলাপ খেলাফত মজলিসকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে সংলাপ হবে ২৮ ডিসেম্বর। ২৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনফ এবং ইসলামী ঐক্যজোটের সঙ্গে সংলাপ।

এই বিভাগের আরও খবর