img

সাজু খাদেম মঞ্চে ডা. মুরাদ হাসানকে নিয়ে বিশেষণ ব্যবহার করলেন খানিকক্ষণ, কেননা এখন প্রতিমন্ত্রী বক্তব্য দেবেন তার আগে বিশেষণ জুড়তে হয়। অথচ মাইক্রোফোনে যখন ডাকলেন তখন সবাই বিস্মিত। বলে ফেললেন, 'বক্তব্য দিতে আসছেন  ড. হাসান মাহমুদ।' এ কী কথা? 

তারিক আনাম খান মঞ্চে অন্যদের সঙ্গে বসে রয়েছেন, তথ্যমন্ত্রী আর প্রতিমন্ত্রীও পাশাপাশি বসে আছেন, কে বক্তব্য দিতে আসবেন তাহলে এখন? 

তারিক আনাম খান মাথা নাড়ালেন, হয়তো খুব ধীরে বললেন যে ভুল হয়ে গেছে। ততক্ষণে উপস্থাপক সাজু খাদেম বুঝে গেছেন তাঁর ভুল হয়ে গেছে। আসলে তিনি ডা. মুরাদ হাসানকে ডাকতে গিয়ে ডেকে ফেলেছেন ড. হাছান মাহমুদকে। 

সাজু খাদেম নিজের ভুল স্বীকার করতে এগিয়ে গেলেন। তখন তথ্যমন্ত্রী বললেন, 'আমি শুধু ডাক্তার নই, আমি গায়কও।' এটাই মাইক্রোফোনে অভ্যাগত দর্শকদের জানিয়ে দেওয়া হলো। হয়তো সবাই ভেবেছিলেন প্রতিমন্ত্রী গাইতে চেয়েছেন, হয়তো গাইবেন শখেই, যদিও কদিন আগে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল- সেখানে ডা. মুরাদকে গাইতেও দেখা গিয়েছিল। সেটা নিয়েও সন্দিহান ছিলেন।

কিন্তু ডা. মুরাদ যেসব আলো নিজের দিকে কেড়ে নেবেন কে জানত! বক্তৃতার পালা শেষ হয়ে যাওয়ার পর তার বেশকিছুক্ষণ পর চলে গেলেন। শুরু হলো সংগীতানুষ্ঠান। চলল একের পর এক। মঞ্চে উঠলেন অভিনেত্রী তারিন ও ডা. মুরাদ। দুজন কণ্ঠ মেলালেন একসঙ্গে। গাইলেন 'আমায় ডেকো না, ফেরানো যাবে না, ফেরারি পাখিরা...' 

অভাবনীয় সাফল্য, শিল্পকলার মূল মিলনায়তন মুহুর্মুহু করতালিতে ভরে গেল। দেয়ালে হতে লাগল প্রতিধ্বনি। একজন অভিনেত্রী আরেকজন রাজনীতিক। দুজন সংগীতে এসে যে পারফর্ম করলেন, তাতে মুগ্ধতা বেড়ে গেল দর্শকের, সেই সঙ্গে চাহিদা। গানের অনুরোধ পেতে থাকলেন প্রতিমন্ত্রী মুরাদ। 

এবার তিনি একা দাঁড়ালেন। কি-বোর্ড, ড্রাম, প্যাড, লিড গিটার, বেজ গিটার চেক করে নিলেন। চলে এলেন মঞ্চের একেবারে সামনে, চিরপরিচিত রকস্টারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন। কণ্ঠে নামল সুর- ঐ দূর পাহাড়ের ধারে, দিগন্তেরই কাছে, নিঃসঙ্গ বসে একটি মেয়ে, গাইছে, আপন সুরে...    সামনের সারির দর্শকরা উঠে পড়েছে। নাচের সুর শরীরকে স্থির রাখতে পারল না... উর্মিলা শ্রাবন্তী, বিজরী বরকতুল্লাহ, সুইটি... সবাই মিলে মঞ্চের সামনেই মেতে উঠলেন নাচে। আর বাকি দর্শকের কণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হতে থাকল 'আপন সুরে, আপন সুরে, আপন সুরে...'

উইনিঙে যখন মাতোয়ারা সবাই। তখন শুরু হলো ওরে মালেকা ওরে সালেকা, 'ওরে ফুলবানু পারবি না বাঁচাতে...' প্রাণ রায়, মামুন অপু বা আরো অনেক শিল্পীই উঠে এসেছেন মঞ্চে। মন্ত্রীকে ঘিরে শুরু করে দিয়েছেন নাচ। যেন এক সুরের লহরি ঘুরছে মিলনায়তন ঘিরে।  রীতিমতো একজন ব্যান্ডের মূল ভোকালিস্ট হয়ে উঠেছেন ডা. মুরাদ কিংবা একজন রকস্টার। 

ক্লান্থিহীন কণ্ঠে এবার চড়ল আজম খানের বিখ্যাত বাংলাদেশ গান। রেললাইনের ওই বস্তিতে, জন্মে ছিল একটি ছেলে মা তার কাঁদে, ছেলেটি মরে গেছে, হায় রে হায় বাংলাদেশ... বাংলাদেশ...  বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার দেয়ালে দেয়ালে ইটে ইটে ছড়িয়ে পড়ল বাংলাদেশ... 

তারও অনেক পরে রক এন রোল থেমেছিল। শিরোনামে রকস্টার এসেছে, 'যেন রকস্টার' প্রতিমন্ত্রী বলতেই পারেন যেন রকস্টার কেন? আমি তো রকস্টার। তার এই কথাকে  কিভাবে ফেলে দেওয়া যাবে, কারণ তিনি সত্যিই একটি ব্যান্ডের লিড ভোকালিস্ট। ব্যান্ডের নাম রকস্ট্রিট। এটাও জানালেন যে এই নাট্যশালায় একেবারে বিনা মূল্যে তাঁর দলের কনসার্ট করবেন। 

শনিবার অভিনয়শিল্পী সংঘের সাধারণ সভায় অতিথি হয়ে এসেছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ।

এই বিভাগের আরও খবর