img

করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হওয়ার প্রেক্ষাপটে কভিড-১৯-সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি আজ রবিবার দুপুরে বৈঠকে বসছে। পরামর্শক কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ স্থগিতের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এরই মধ্যে দেশের বিমান-স্থলবন্দর এবং সব প্রবেশপথে স্ক্রিনিং আরো জোরদার করার জন্য তাগাদা দেওয়া হয়েছে।

যেসব দেশে নতুন এই ধরন শনাক্ত হয়েছে, সেখান থেকে বাংলাদেশে আসা বন্ধ করে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, নতুন এই ধরনকে অবহেলা করা যাবে না। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও মাস্ক পরে চলাফেরা করার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।

কভিড-১৯-সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘একদিকে শক্তিশালী ওমিক্রন ভীতি, অন্যদিকে সবাইকে টিকাও দেওয়া যায়নি। যাঁরা টিকা নিয়েছেন, নতুন ধরনের সামনে তাঁরাও কতটা নিরাপদ, সেটা এখনো বোঝা যাচ্ছে না। এসব কারণে মাস্ক পরার বিকল্প নেই। যাঁরা টিকা নিয়েছেন, তাঁদেরও সতর্ক থাকতে হবে।’

বাংলাদেশের সঙ্গে আফ্রিকার সরাসরি ফ্লাইট না থাকলেও কানেক্টিং ফ্লাইটে এখনো অনেকে আফ্রিকা থেকে দেশে আসছেন। গতকাল শনিবারও আইভরি কোস্ট থেকে দুজন যাত্রী এসেছেন বলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলি সেকেন্ড স্পেশাল সেশনে অংশ নিতে যাওয়ার পথে গতকাল সকালে এক অডিও বার্তায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আফ্রিকান এই ভেরিয়েন্টটি খুবই আগ্রাসী। পোর্টগুলোতে স্ক্রিনিং জোরদারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ভাইরাসটি নিয়ে বেশি আতঙ্কিত না হয়ে তিনি দেশবাসীকে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছেন।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মোশতাক হোসেন বলেন, ওমিক্রনকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সরাসরি উদ্বেগজনক বলেছে। এর শক্তি ডেল্টা ভেরিয়েন্টের চেয়েও বেশি। এটি টিকা দেওয়া ব্যক্তিদেরও ফাঁকি দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, করোনার যত রোগী আসে তাদের প্রত্যেকের কোন ধরন রয়েছে, তার জিনোম পরীক্ষা করতে হবে। ওমিক্রন রয়েছে যেসব দেশে, সেসব দেশ থেকে কেউ এলে স্থলবন্দর ও বিমানবন্দরে তাদের কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে। যেসব দেশে ওমিক্রন ছড়াচ্ছে, সেসব দেশের নাগরিকদের এ দেশে আসা বন্ধ করে দিতে হবে।

মোশতাক হোসেন আরো বলেন, ডেল্টা ভেরিয়েন্ট একজনের কাছ থেকে দুজনের কাছে ছড়ালে ওমিক্রন ভাইরাসটি একজনের কাছ থেকে আটজনে ছড়াবে। ফলে সতর্কতার বিকল্প নেই। দেশের প্রত্যেককে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছেন এই চিকিৎসক।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, ‘আফ্রিকা থেকে আসা যাত্রীদের ব্যাপারে আমরা সতর্ক আছি। যাত্রীদের ভ্রমণ ইতিহাসসহ যাবতীয় তথ্য রাখা হচ্ছে।’

জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, ‘বিমানবন্দরগুলোতে করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হচ্ছে। আমাদের বিমানবন্দরগুলো এবং সিভিল এভিয়েশন অথরিটি প্রস্তুত আছে। করেনার নতুন ভেরিয়েন্ট নিয়ে যে নির্দেশনা আসবে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর