img

লোহিত সাগরে কিছু দিন আগেই মার্কিন যুদ্ধজাহাজের সাথে যৌথ মহড়া দিয়েছে ইসরায়েলি, আমিরাতি এবং বাহরাইনের নৌবাহিনী। 

এই মহড়ার ঠিক আগেই ইসরায়েলের বন্দর নগরী ইলাতের ঠিক উত্তরে একটি মরুভূমির বিমানঘাঁটিতে আরেকটি বিমান মহড়া হয়, যেখানে ইসরায়েল ছাড়াও আরো সাতটি দেশের যুদ্ধবিমান প্রচণ্ড গর্জনে আকাশ কাঁপিয়েছে। 

এই মহড়াগুলোর অন্যতম লক্ষ্য ইরানকে একটি কড়া সতর্কবার্তা পাঠানো এবং কৌশলগত জোটের উপর গুরুত্বারোপ করা। সম্প্রতি ইরানও বড়সড় সামরিক মহড়া চালিয়েছে।

এসব ঘটনা এমন সময়ে ঘটছে, যখন ইরানের পরমানু কর্মসূচীর বিরুদ্ধে ইসরায়েলকে অচিরেই একাকী ব্যবস্থা নিতে হয় কি না তা নিয়ে ক্ষুদ্র দেশটির মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

ইরানের পারমাণবিক সাইটগুলোতে সম্ভাব্য হামলার জন্য ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনীকে প্রস্তুত করতে দেশটির সরকার ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ দিয়েছে এবং রাজনৈতিক ও সামরিক নেতারা প্রায় প্রতিদিনই হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। 

সম্ভাব্য কী ঘটনা ঘটতে পারে, তা নিয়ে আমি ইরান বিষয়ক শীর্ষস্থানীয় পর্যবেক্ষক ও বিশ্লেষকদের কাছে মতামত জানতে চেয়েছিলাম।

একজন ইসরায়েলি নিরাপত্তা কর্মকর্তা আমাকে বলেন "ইরানের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার কোন আগ্রহ ইসরায়েলের নেই। তবে আমরা ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে দেব না।" 

"ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির অগ্রগতির আলোকে, আমরা সামরিক সক্ষমতাসহ সব বিকল্প এবং পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।"

এমন সময় এই সামরিক আস্ফালন শোনা গেল যখন ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়ে ইরান এবং পাঁচটি বিশ্বশক্তির (পরোক্ষভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ) মধ্যে আলোচনা চলছে। ওই চুক্তিটি 'জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন' (জেসিপিওএ) নামে পরিচিত। এ সম্পর্কিত পরবর্তী বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবার কথা আগামী ২৯শে নভেম্বর অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায়।

জেসিপিওএ ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমকে সীমিত করেছিল এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার আংশিক প্রত্যাহারের বিনিময়ে অধিকতর পরিদর্শনের জন্য ইরানের স্থাপনাগুলো খুলে দিয়েছিল। ২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসেন, যাতে ইসরায়েলের সায় ছিল।

ইরান বরাবরই বলেছে যে, তাদের পরমাণু কর্মসূচী শান্তিপূর্ণ।

ছবির উৎস, EPA

ছবির ক্যাপশান, 

ইরান বরাবরই বলেছে যে, তাদের পরমাণু কর্মসূচী শান্তিপূর্ণ।

নতুন করে আলোচনা শুরু হওয়ার তারিখ নির্ধারণের পরপরই ইরান জানিয়েছে যে, তারা ২৫ কেজি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে যা প্রায় ৬০% বিশুদ্ধ। একটি পরমাণু বোমা তৈরির জন্য যতটুকু সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম প্রয়োজন এটা তার প্রায় কাছাকাছি। এছাড়া আরো ২০% বিশুদ্ধ আরো ২১০ কেজির বেশি ইউরোনেয়িামও সমৃদ্ধ করেছে ইরান। 

যদিও তেহরান জোর দিয়ে বলছে এগুলো শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে, তারপরও এমনকি ইরানি বিশেষজ্ঞরাও স্বীকার করেছেন যে, এর আগে এই ধরনের উচ্চ ক্ষমতাসমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম শুধুমাত্র পারমাণবিক অস্ত্রসমৃদ্ধ দেশগুলোর কাছেই ছিল।

ইসরায়েলি নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, "ইরানি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য উপযুক্ত উপাদান তৈরির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে যা অতীতে ছিল না।" 

"এই বিষয়টি ইসরায়েল রাষ্ট্রের নিরাপত্তার উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে", বলেন ঐ কর্মকর্তা।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা সংস্থা অনুমান করছে যে, ইরান যদি চায় তাহলে এটি এখন এক মাসের মধ্যে একটি পারমাণবিক অস্ত্রের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম জমা করতে পারে।

ইরানের পারমাণবিক সংকট: মূল বিষয়

  • ক্ষমতাধর দেশগুলো ইরানকে বিশ্বাস করে না: কিছু দেশ বিশ্বাস করে যে ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে চায় - তবে ইরান সেটি অস্বীকার করে।
  • তাই একটি চুক্তি করা হয়েছিল: ২০১৫ সালে, ইরান এবং ছয়টি দেশ একটি বড় চুক্তিতে পৌঁছায়। ইরানের অর্থনীতিতে আঘাত করে এমন কঠোর শাস্তি বা নিষেধাজ্ঞার অবসানের বিনিময়ে কিছু পারমাণবিক কাজ বন্ধ করে ইরান। 
  • এখন সমস্যা কি? যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর এবং ইরানের ওপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর ইরান নিষিদ্ধ পরমাণু কাজ আবার শুরু করে। যদিও নতুন নেতা জো বাইডেন আবার চুক্তিতে যোগ দিতে চান, তবে উভয় পক্ষই চায় যে, অন্য পক্ষকে অবশ্যই প্রথম পদক্ষেপ নিতে হবে।

এই ধরনের অস্ত্র তৈরির জন্য একটি ওয়ারহেড তৈরি করতে হবে যা একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রে স্থাপন করা যেতে পারে। এর জন্য সময়সীমা গণনা করা আরও কঠিন, তবে কিছু বিশেষজ্ঞ বলেছেন যে, এটি তৈরি করতে ১৮ থেকে ২৪ মাস সময় লাগতে পারে।

ইসরায়েলেরও পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে বলে ধারণা করা হয়, তবে এ বিষয়ে ইচ্ছাকৃতভাবেই অস্পষ্টতা রাখার একটি সরকারি নীতি বজায় রাখা হয়েছে। তাদের দৃষ্টিতে পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন ইরানকে ইসরায়েলের অস্তিত্বের প্রতি একটি হুমকি। ইরান ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয় না এবং এর কর্মকর্তারা প্রায়শই এই বিশ্বাসকে সমর্থন করে যে, এটি শেষ পর্যন্ত বিলীন হয়ে যাবে।

যদিও যুক্তরাষ্ট্র এবং আরব উপসাগরীয় দেশগুলি, যাদের সাথে ইসরায়েলের সম্পর্ক জোরদার হচ্ছে, তারাও ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র থাকার গভীর বিরোধিতা করছে। তবে এটা স্পষ্ট নয় যে ঠিক কোন পর্যন্ত তাদের নিজেদের স্বার্থ ইসরায়েলকে একটি সামরিক পদক্ষেপ নেয়ায় সহায়তা করা থেকে ঠেকিয়ে রাখবে। 

সময় ফুরিয়ে আসছে

সাবেক ইসরায়েলি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ইয়াকভ আমিদ্রর ১৯৯০ এর দশকের শুরুতে সামরিক গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করার সময় ইরানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিপদ সম্পর্কে প্রথম সতর্ক করেছিলেন। তিনি এখন জেরুজালেম ইন্সটিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড সিকিউরিটির সিনিয়র ফেলো।

সাম্প্রতিক ঘটনাবলী সম্পর্কে তার একটি মূল্যায়ন রয়েছে।

তিনি বলেন, "ইসরায়েল এমন পরিস্থিতির সাথে বাঁচতে পারে না যেখানে ইরানিরা পারমানবিক বোমা তৈরির দ্বারপ্রান্তে এবং অচিরেই এটি ঠেকানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।"

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ বাধলে ইরানপন্থী সশস্ত্রবাহিনীগুলোও জড়িয়ে পড়বে বলে ধারণা করা হয়।

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ বাধলে ইরানপন্থী সশস্ত্রবাহিনীগুলোও জড়িয়ে পড়বে বলে ধারণা করা হয়।

"আমি এখানে বোমা ফেলা ছাড়া অন্য কোন উপায় দেখছি না, কারণ আমি মনে করি না ইরান তাদের পারমানবিক উচ্চাভিলাষ থেকে সহসাই পিছু হটবে। আর পারমানবিক শক্তিধর ইরান এখনকার চাইতেও বেশি আগ্রাসী হবে।"

ইসরায়েল অন্তত দুবার তাদের শত্রুপক্ষের পারমানবিক চুল্লি ধ্বংস করার জন্য একাকী পদক্ষেপ নিয়েছে- ১৯৮১ সালে ইরাকে, এবং ২০০৭ সালে সিরিয়ায়।

কিন্তু অনেক বিশ্লেষক প্রশ্ন করেন যে দেশটি ইরানের আরও উন্নত পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করার জন্য একটি জটিল অভিযান চালাতে সক্ষম কিনা, যেখানে ইরানের কিছু ভূগর্ভস্থ অবকাঠামোও রয়েছে।

মি. আমিদ্রর স্বীকার করেন, "ইসরায়েলের সবাই বোঝে যে একটি হামলা খুব জটিল যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলতে পারে তাদেরকে।"

ইরান এ ধরনের হামলার হুমকির প্রতিবাদে "মারাত্মক জবাব" দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ধারণা করা হয় যে, একটি যুদ্ধ বেধে গেলে ইরান তার নিজস্ব বাহিনীর পাশাপাশি মধ্যপাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে থাকা তাদের সহযোগী গোষ্ঠীগুলোকেও ব্যবহার করবে, যেমন: লেবাননের হেজবুল্লাহ, যাদের হাজার হাজার রকেট রয়েছে, সিরিয়া ও ইরাকের শিয়া মিলিশিয়া, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী এবং গাজা উপত্যকায় জিহাদীরা।

উচ্চ ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও, ইসরায়েলের কিছু মানুষ মনে করে একটি হামলা যদি ইরানের পারমানিক উচ্চাভিলাষকে মোটে কয়েক বছর পিছিয়েও দিতে পারে, তার পরও একটি হামলা চালানো যৌক্তিক। 

যদিও কর্মকর্তারা এখনও শান্তিপূর্ণ, আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথের প্রতিই আগ্রহী। 

গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের গবেষণা বিভাগের সাবেক প্রধান সিমা শাইন বলেন, "আমি আশা করি যে কূটনৈতিক চ্যানেল সফল হবে, তবে এই মুহূর্তে আমি এটিকে খুব বেশি কার্যকর ভাবছি না।"

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ইরানকে সরাসরি জেসিপিওএ-র সাথে "পারস্পরিক সম্মতিতে" ফিরে আসার প্রস্তাব দিয়েছে, কিন্তু ইসরায়েলের সরকার এর বিরোধিতা করে।

চুক্তিটি ২০২৫ সাল পর্যন্ত ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির উপর অনেক বিধিনিষেধ তুলে নেয় এবং ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নের বিষয়ে কোন সীমাবদ্ধতা দেয় না বা সমগ্র অঞ্চল জুড়ে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির জন্য এর সমর্থনকে প্রতিহত করে না।

"ইরানের অবস্থান সম্পর্কে আমার মূল্যায়ন হল যে এটি আসলে চুক্তিতে ফিরে যেতে চায় না," বলেন মিসেস শাইন, যিনি এখন ইসরায়েলের ইন্সটিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজের ইরান প্রোগ্রামের প্রধান৷

"তারা যা চায়, তা হল নিষেধাজ্ঞা কমানো এবং তারা বুঝতে পারে যে এটি পেতে তাদের কিছু দিতে হবে। প্রশ্ন হল, ইরানের হিসাবটা কী - এর অর্থনীতিতে আসলেই কতটা ছাড় দরকার?"

তার ভয় হল যে, পারমাণবিক আলোচনা কেবল সময় ক্ষেপণের জন্য একটি উপায় হতে পারে, কারণ দেশটি তার সেন্ট্রিফিউজগুলো চালু রাখতে চায় যা সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়ানোর জন্য প্রয়োজন।

গোপন পদক্ষেপ

ওয়াশিংটনের মিডল ইস্ট ইন্সটিটিউটের আরেক প্রবীণ ইরান বিশেষজ্ঞ অ্যালেক্স ভাটাঙ্কা পারমাণবিক কর্মসূচির প্রতি তেহরানের গভীর আদর্শিক প্রতিশ্রুতির বিষয়টি সামনে এনেছেন। 

তবে তার মতে, ইউরোপীয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অবিশ্বাস সত্ত্বেও, ইরান অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক চাপ কমাতে জেসিপিও'তে ফিরে আসতে চায়; তিনি দেশটির সাম্প্রতিক কার্যকলাপ এবং দাবিগুলিকে 'নিজেদের হাতকে শক্তিশালী করা'র উদ্যোগ হিসেবে দেখেন।

ইরানের কর্তৃপক্ষ পরমাণু কর্মসূচীকে জাতীয় গৌরবের অংশ বলে মনে করে।

ইরানের কর্তৃপক্ষ পরমাণু কর্মসূচীকে জাতীয় গৌরবের অংশ বলে মনে করে।

মি. ভাটাঙ্কার তত্ত্ব হল, ইরান আসলে পারমাণবিক অস্ত্র চায় না।

"এটি একটি বিকল্প যেটা তারা পেতে চায়, তবে এটি অস্ত্র তৈরির ব্যাপার নয়," তিনি বলেন। তার মতে, ইরান পারমাণবিক সক্ষমতার দ্বারপ্রান্তে থাকতে চায়।

"ইরান আমেরিকাকে বোঝাতে চায় যে, ইরান একটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক রাষ্ট্র এবং এর শাসন ব্যবস্থায় পরিবর্তন ঘটবে না।"

ইসরায়েলের হামলার হুমকি তিনি বিশ্বাস করেন না। তিনি পরামর্শ দেন যে, ইরানের পারমাণবিক অগ্রগতি রুখতে ইসারয়েলের গোপন প্রচেষ্টাই আরও বেশি কার্যকর হতে পারে।

"তারা প্রমাণ করেছে যে তারা এটা করতে পারে," মি. ভাটাঙ্কা মন্তব্য করেছেন। "স্পষ্টতই ইরানের একটি উচ্চস্তরে অনুপ্রবেশ রয়েছে।"

এক দশক আগে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ব্যাহত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সমন্বিতভাবে স্টাক্সনেট নামে কম্পিউটার ভাইরাস ব্যবহার করে হামলা চালায় বলে খবর রয়েছে।

অতি সম্প্রতি, ইরান তার শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী, মোহসেন ফাখরিজাদেহকে নাটকীয়ভাবে হত্যার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে। তাকে তেহরানের কাছে একটি এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার-সহায়তায় চালিত মেশিনগান দিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সেই সাথে তার পারমাণবিক স্থাপনায়ও বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।

ইরান বলছে যে, ২০২০ সালে নাতাঞ্জ পরমাণু স্থাপনায় বিস্ফোরণের ঘটনা "নাশকতার" অংশ।

ইরান বলছে যে, ২০২০ সালে নাতাঞ্জ পরমাণু স্থাপনায় বিস্ফোরণের ঘটনা "নাশকতার" অংশ।

এটিকে "যুদ্ধের মধ্যে যুদ্ধ" হিসাবে অভিহিত করা হয় এবং এর অংশ হিসাবে ইসরায়েল প্রতিবেশী সিরিয়ায় ইরানের প্রবেশ সীমিত করতে এবং হেজবুল্লাহর অস্ত্রের চালান কমাতে শত শত সামরিক হামলা চালিয়েছে।

অস্ত্র বিস্তারের ভয়

যদিও পরবর্তীতে কী ঘটবে তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অনেক মতপার্থক্য রয়েছে, তবে তারা একটি বিষয়ে একমত যে, ইরানের পারমাণবিক পরিকল্পনা নিয়ে আসন্ন আলোচনা একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নির্ধারিত হয়েছে। এই অস্থির অঞ্চলের জন্য এর চেয়ে বেশি ঝুঁকি আর হতে পারে না বলে একমত তারা।

ইরান যদি তার নিজস্ব পারমাণবিক অস্ত্রাগার তৈরি করে, তবে অন্যান্য রাষ্ট্র যেমন সৌদি আরব, তুরস্ক এবং মিশরও এ বিষয়ে আগ্রহী হবে।

ওয়াশিংটন বলেছে যে তারা মধ্যপ্রাচ্যে "চিরকালের জন্য যুদ্ধ" বন্ধ করতে চায়। তবে এটি সতর্ক করেছে যে এটি ইরানের ক্ষেত্রে তারা "অন্য বিকল্পের" দিকে গুরুত্ব দেবে এবং এক্ষেত্রে তাদের সামরিক শক্তি নমনীয় করতে দেখা গেছে।

একটি প্রতীকী পদক্ষেপ হিসেবে, সাম্প্রতিক ইসরায়েলি বিমান মহড়ার শেষে, বাস্টার-বাঙ্কিং বোমা বহন করতে সক্ষম একটি মার্কিন যুদ্ধবিমানকে দুটি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানের সাথে ইসরায়েলের আকাশসীমার মধ্য দিয়ে উড়তে দেখা গেছে। এই মার্কিন যুদ্ধবিমান ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক সাইটগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করতে সক্ষম।

তবে ইরানের পরমাণু অস্ত্র সমৃদ্ধকরণ রুখতে কৌশলবিদরা আসলেই যেটি চান- সেটির জন্য ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের জন্য জরুরি প্রস্তুতি নিয়ে রাখার সিদ্ধান্তই সর্বোত্তম কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর