img

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মির্জা ফখরুলদের ওপর কর্মীদেরই আস্থা নেই। বিএনপির কর্মীদের দ্বারাই তারা প্রচণ্ডভাবে সমালোচিত। যেই দলের এই অবস্থা সেই দলের মহাসচিবের হুইসেল বাজালেই আন্দোলনে মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ার বক্তব্য হাস্যকর। বিএনপি কোনো একটা অনুষ্ঠান করতে গেলে নিজেরাই মারামারি করে অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যান।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রটি আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কালুরঘাটে যে ট্রান্সমিটার ব্যবহার করে তৎকালীন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন সেই ট্রান্সমিটারটি এখন চট্টগ্রাম পুরনো সার্কিট হাউসে রাখা হয়েছে। এই ট্রান্সমিটারটা আগে যেখানে ছিল সেই কালুরঘাট বেতারের ট্রান্সমিশন সেন্টারে স্থানান্তর করা হবে।

তিনি আরো বলেন, সেখানে একটা ছোট্ট যাদুঘর করে রাখা হবে। সেখানে স্বাধীনতা পার্ক স্থাপন করা হয়েছে, স্বাধীনতা পার্কের সাথেই যেখান থেকেই এই ট্রান্সমিটার দিয়ে ঘোষণা করা হয়েছিল সেখানেই থাকা বাঞ্চনীয়। বাংলাদেশ বেতারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সেখানে স্থানান্তরের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আজ শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় বেতারের আবাসিক প্রকৌশলী নিত্য প্রকাশ বিশ্বাস, আঞ্চলিক পরিচালক এস এম মোস্তফা সরোয়ার, উপ বার্তা নিয়ন্ত্রক মো. জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

ড. মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র একটি ঐতিহাসিক বেতার কেন্দ্র। কারণ এই বেতার কেন্দ্র থেকেই ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন তৎকালীন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান। পরবর্তীতে ২৭ মার্চ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ একজন সেনা অফিসারকে দিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করানোর জন্য মেজর জিয়াউর রহমানকে খুঁজে বের করে এনে তাকে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করানো হয়েছিল।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকেই ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা তৎকালীন অভিবক্ত চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করে শুনিয়েছিলেন। এটা পুরো জাতি ও বিশ্ববাসী জেনেছিল এবং বঙ্গবন্ধু যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন, বাংলাদেশ যে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র সেটি চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের মাধ্যমেই দেশবাসী এবং বিশ্ববাসী জেনেছিল। এটি একটি ঐতিহাসিক বেতার কেন্দ্র।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে রেডিও যেমন অনন্য ভূমিকা রেখেছে একইভাবে দেশ গঠনেও রেডিও অনন্য ভূমিকা পালন করে চলেছে। বিশেষ করে কৃষি ভিত্তিক অনুষ্ঠান, জন্মনিয়ন্ত্রণ, পরিবেশ সংরক্ষণসহ সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানমালা মানুষ শুনে অনেক কার্যক্রম গ্রহণ করে। রেডিও যাতে দেশ গঠনে, দেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছে দিতে আরো জোরালো ভূমিকা রাখতে পারে সেজন্য রেডিও’র উন্নয়নের জন্য অনেকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রেডিও অত্যন্ত প্রাচীন গণমাধ্যম। একেবারে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির মাঝে পৌঁছাতে পারে রেডিও। টেলিভিশন সমুদ্রের মধ্যে শোনা যাই না। কিন্তু রেডিও বঙ্গোপসাগরের মাঝিমাল্লা, পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ের চূড়ায় বসেও শোনা যাই। দুর্যোগ দুর্বিপাকের সিগনাল শুনতে রেডিও’র ওপরই নির্ভরশীল থাকে মানুষ। মাঝখানে রেডিও শোনা কমে গেলেও এখন রেডিও শোনার অভ্যাস আবার ফিরে এসেছে। এখন মোবাইল ফোনে অ্যাপসের মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে বেতারের অনুষ্ঠান শোনা যায়।

মানুষ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত, ডাক দিলেই ঝাঁপিয়ে পড়বে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের বিষয়ে উপস্থিত সাংবাদিকরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, উনার বক্তব্যে মনে হচ্ছে উনি কিংবা সাত সমুদ্র তের নদীর ওপাড় থেকে তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হুইসেল বাজাবেন, তাহলেই মানুষ রাস্তায় নেমে পড়বে। আসলে মির্জা ফখরুল সাহেব জেগে জেগে যে স্বপ্ন দেখেন এবং প্রতিনিয়ত অবান্তর কথা বলেন, সেটিরই বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে তার এই বক্তব্য।

এই বিভাগের আরও খবর