img

হইচইয়ের নতুন সিরিজি ‘বয়ফ্রেন্ডস অ্যান্ড গার্লফ্রেন্ডস’ (Boyfriends and Girlfriends), গরিবের ‘দিল চাহতা হ্যায়’ই বটে। যেখানে গোয়া যাওয়ার প্ল্যানিং নেই। ডিস্কো থেকে মেয়ে পটানো নেই। দারুণ স্টাইল স্টেটমেন্ট নেই। দাড়ি, গোঁফে, চুল কাটায় কোনও কায়দা নেই। যা আছে, তা হল প্রেম, বিরহ, ব্রেকআপ এবং তিন বন্ধু আর তাঁদের অটুট বন্ধুত্ব। এই সিরিজের গল্প বলতে গিয়ে, মৈনাক ভৌমিক (Mainak Bhaumik) ফারহান আখতারের এই বন্ধুত্বটুকুই ধার করলেন। আর বাদ বাকিটা চলল মৈনাকের নিজের ছকেই। যে ছকটা মৈনাক তাঁর প্রথম ছবি ‘আমরা’তে ব্যবহার করেছিলেন। যে ছক মৈনাক ‘আমি আর আমার গার্লফ্রেন্ডস’ ছবিতেও কাজে লাগিয়েছিলেন। সেই ছককেই এবার সিরিজে নিয়ে এসে ফেললেন মৈনাক। তবে সিরিজের গল্প মৈনাক লিখলেও, পরিচালনার দায়িত্ব ছাড়লেন তাঁর সহ-পরিচালক শুভঙ্কর পালের হাতে।

তা কেমন হল এই সিরিজ?

‘বয়ফ্রেন্ডস অ্যান্ড গার্লফ্রেন্ডস’ সিরিজের সবচেয়ে ভাল দিক হল, এই সিরিজ দেখতে খুবই ফ্রেশ। তার প্রথম কারণ, এই সিরিজের অভিনেতারা একেবারেই ইয়ং ব্রিগেড। তাই সিরিজকে একটা স্মার্টলুক দেয়। এই সিরিজের আরও ভাল দিক হল, ৫টি পর্বে গল্পকে ভাগ করে, প্রত্যেকটি পর্বের সময়সীমা দীর্ঘ না করা। যার ফলে, সিরিজের গতি কখনওই শ্লথ হয়ে যায় না। বিশেষ করে শেষ এপিসোডটা মনে রাখার মতো। ‘বয়ফ্রেন্ডস অ্যান্ড গার্লফ্রেন্ডস’-এর আরেকটি ভাল দিক হল, সংলাপ। যা কিনা সিরিজের হালকা-ফুলকা মেজাজটাকে ধরে রাখতে সাহায্য করে। এই সিরিজ কিছুটা ডকু ফিচারের কায়দাতে শুট করা হয়েছে। যা দেখতে ভালই লাগে। তবে এতগুলো ভাল দিক থাকা সত্বেও, এই সিরিজ কিন্তু সেরা হয়ে উঠতে পারে না। কেন?

প্রথমত, প্রত্যেকটি দৃশ্যেই যেন একটু তাড়াহুড়ো করে বানানো মনে হয়েছে। বহু দৃশ্যই জমে ওঠার ঠিক আগেই তাল কেটে যায়। আর দুম করে অন্য দৃশ্যে জাম্প। ঠিক যেমন, সৌম্য ওরফে ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়ের চরিত্রটা আকার নেওয়ার আগেই ক্লাইম্যাক্সে ঢুকে পড়ে। ঠিক এমনটাই ঘটে, উজান ওরফে ঋদ্ধি সেনের চরিত্রের সঙ্গেও। সেদিক থেকে দেখলে, বান্টি ওরফে উজান চট্টোপাধ্যায়ের চরিত্রটা পরিচালক ঠিকঠাক করে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। উজানকে নিয়ে শেষের চমকটাও পরিচালক খুব সুন্দর করে দেখিয়েছেন। তাড়াহুড়ো দোষে দুষ্ট এই সিরিজের নারী চরিত্রগুলোও। বিশেষ করে অমৃতা ওরফে ইশা সাহার চরিত্রের ক্রাইসিস সিরিজের শেষ পর্যন্ত স্পষ্ট হয় না।

অন্যদিকে যে রিয়া ওরফে মধুরিমাকে নিয়ে এত কাণ্ড, তার চরিত্রটার উদ্দেশ্য-বিধেয় কিছুই ঠিক বোঝা যায় না। তাই পরপর চরিত্রগুলোর আচরণ দেখা গেলেও, সেগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করাটা কঠিন হয়ে পড়ে। খুবই ফাঁপা মনে হয়। অভিনয়ের দিক থেকে নজর কেড়েছেন ঋতব্রত। চরিত্রের সঙ্গে ঋদ্ধির অভিনয় একেবারেই যেন খাপ খায়নি। বান্টি চরিত্রে উজান চট্টোপাধ্যায় বেশ মানানসই। ইশা, অদৃজা, মধুরিমা নিজের জায়গায় একেবারে ঠিকঠাক। 

দ্বিতীয়ত, যাঁরা মৈনাকের আগের সব ছবি দেখেছেন, তাঁদের এই সিরিজ খুব একটা ভাল না লাগার মতোই। কারণ, মৈনাক ঠিক যেভাবে এতদিন ছবি বানিয়ে এসেছেন, সিরিজের গল্পের ক্ষেত্রেও ঠিক সেভাবেই গল্প লিখেছেন। যা কিনা প্রেডিক্টেবল। তবে শেষমেশ বলতে গেলে, এই সিরিজ বিনোদনের মাত্রাকে ঠিকঠাকভাবে এগিয়ে নিয়ে চলে, যার ফলে দেখতে বসলে খুব একটা বোর হবেন না!

 

এই বিভাগের আরও খবর