img

ভোক্তা ও কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় সরকার চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা সাধন চন্দ্র মজুমদার।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তে সরকারের চালের মজুদ ১৭ লাখ মেট্রিক টন। চলমান বোরো সংগ্রহ অভিযানে ইতিমধ্যে সাড়ে আট লাখ টন চাল সংগ্রহ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, চাল সংগ্রহের সময় আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে, এর মধ্যেই শতভাগ চাল সংগ্রহ হয়ে যাবে। এ সময় খাদ্যগুদামে মানসম্মত চাল সংগ্রহের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, চালের মানের সঙ্গে আপস করা যাবে না।

আজ (বৃহস্পতিবার) বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় শান্তাহার সেন্ট্রাল স্টোরেজ ডিপোতে (সিএসডি) পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে  খাদ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, 'খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার আগে দেশে বেসরকারিভাবে চাল আমদানি হতো শূন্য শতাংশ কর আরোপে এবং যে কেউ আমদানি করতে পারত। এর ফলে বাজারে আমদানীকৃত চালের সরবরাহ বেশি ছিল, ফলে দামও কমে গিয়েছিল। এটার ফলে কৃষক কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিল। প্রান্তিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে অন্য ফসলের চাষ শুরু করে।'

মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর কৃষক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটি নিশ্চিত করতে এবং আমদানি নিরুৎসাহিত করতে চাল আমদানিতে ৬২.৫ শতাংশ  কর আরোপ করা হয়েছিল। মূল উদ্দেশ্য ছিল, কৃষককে ধান চাষে আবারও আগ্রহী করে তোলা এবং স্থানীয় সংগ্রহের মাধ্যমে খাদ্য মজুদ বৃদ্ধি করা। বর্তমান সরকার এখন কৃষকের কাছ থেকে যৌক্তিক দামে ধান সংগ্রহ করায় কৃষক উপকৃত হচ্ছে।

সাধন চন্দ্র মজুমদার অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, দেশে খাদ্য উৎপাদন যেমন বেড়েছে, ভোক্তাও তেমনি বেড়েছে। চালের এখন হিউম্যান ও নন-হিউম্যান ব্যবহার হচ্ছে। মোটা চালের বেশির ভাগ নন-হিউম্যান খাতে ব্যবহার হয়, যা সাধারণত হিসাব করা হয় না।এ ছাড়া প্রতিবছর জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিপুলসংখ্যক প্রবাসফেরত এবং ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার জন্য খাদ্যের সংস্থান করতে হচ্ছে, ফলে চালের বাজারে চাপ বাড়ছে।

তিনি আরো বলেন, চালের বাজার স্থিতিশীল করতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি বেসরকারিভাবে চাল আমদানির প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। শিগগিরই এর সুফল দৃশ্যমান হবে।

এর আগে খাদ্যমন্ত্রী স্থানীয় মিল মালিক, শ্রমিক ও খাদ্য অধিদপ্তেরর  কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে খাদ্য সংগ্রহ পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করেন।

অনুষ্ঠানে আদমদীঘি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবণী রায়, বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোতাহার হোসেন, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক রাজশাহী জি এম ফারুক হোসেন পাটওয়ারী, নওগাঁ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আলমগীর কবীর, বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আশরাফউজ্জামান এবং শান্তাহার সিএসডি ম্যানেজার দুলাল উদ্দিন খান উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর