img

মুখ ঢেকেছে পদ্মার ইলিশ (Hilsa)। ভরা বর্ষণেও বাংলাদেশে দেখা নেই রুপোলি শস্যের। উপকূলীয় জেলা বা রাজধানী ঢাকায় (Dhaka) যৎসামান্য যে ইলিশ মিলছে, তা দেশের প্রধান বন্দরনগর চট্টগ্রামের। আর সেটাই ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১২০০, ১৩০০ টাকায়। কয়েক বছর যাবৎ এ সময়ে রাজধানী ঢাকা ইলিশে ছয়লাপ হয়ে যেত। ঢাকার কাওরানবাজার, কাপ্তানবাজার, ঠাটারিবাজার, সদরঘাট মোকামে মিলত বিপুল ইলিশ। ঢাকার রাস্তাঘাটেও বসত ইলিশের বাজার। এবার তার ছিটেফোঁটাও চোখে পড়ছে না।

আসলে চট্টগ্রামের ইলিশের তেমন স্বাদ নেই। তাই ভোজনরসিকদের কাছে এই ইলিশের কদর নেই। এছাড়া দেশের দক্ষিণ জনপদ জেলা বরিশালে যে ইলিশ ওঠে, তা অধিকাংশ সাগরের। তাই কাঙ্খিত স্বাদ মেলে না। তবুও মরশুম ভেবে কিনলেও ইলিশের সেই স্বাদ থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। ইলিশের প্রকৃত স্বাদ মেলে ফরিদপুর ও চাঁদপুরের পদ্মা (Padma River) ও মেঘনায় ধরা পড়া ইলিশে। কিন্তু এ বছর এই দুই জেলায় ইলিশই নেই।

তারপরও বরিশাল নগরীর ‘ইলিশ মোকাম’ হিসেবে পরিচিত পোর্ট রোডে ইলিশ নেই। সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে মৎস্যজীবীরা নদীতে নামলেও খালি হাতে ফিরছেন। ইলিশ না পাওয়ায় দাদনের টাকা পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন মৎস্যজীবীরা। নদীতে ইলিশ না পাওয়ায় আবহাওয়াকে দায়ী করছেন মৎস্যজীবীরা। একই কথা বলছেন পোর্ট রোডের আড়তদাররাও। তবে মৎস্য (ইলিশ)বিভাগের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, সপ্তাহখানের মধ্যে নদীতে প্রচুর ইলিশ মিলবে। এদিকে বাজারে ইলিশের দাম চড়া। বরিশাল মোকামে এক কেজি ২০০ গ্রাম সাইজের প্রতি মণ ইলিশ পাইকারি ৪৬ হাজার টাকা, কেজি সাইজের প্রতি মণ ৪১ হাজার, প্রতি মণ ৩৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রায় স্বাদহীন ইলিশের দাম এত বেশি হওয়ায় ফিরে যাচ্ছেন ক্রেতারা।

মৎস্যজীবীদের এক নেতা খোরশেদ আলম জানান, গত বছরের সঙ্গে এ বছরের কোনও মিল পাওয়া যাচ্ছে না। গত বছর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর যে পরিমাণ ইলিশ উঠেছিল, তাতে মৎস্যজীবী ও আড়তদার সবাই খুশি ছিলেন। কিন্তু এ বছর জেলেদের খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে। কিছুদিন ধরে জল বৃদ্ধির কারণে ইলিশ গভীর জলে চলে গেছে। তাই ইলিশ মিলছে না। তবে পানি কমা শুরু হলে নদীতে স্বাদের ইলিশ পাওয়া যাবে। বরিশাল পোর্ট রোডে আসা ক্রেতা কাওছার জানান, ”টিভি চ্যানেলে দেশের বিভিন্ন স্থানে ইলিশের ছয়লাপ হওয়ার খবর প্রচার করা হচ্ছে। তাই দেখে বাজারে এলাম। কিন্তু এখানে এসে ইলিশ চোখে পড়ল না। কিছু ইলিশ থাকলেও দাম চড়া হওয়ায় এখন খালি হাতে বাসায় ফিরে যাচ্ছি।” এদিকে, পদ্মার ইলিশ পেতে চাতকের অপেক্ষায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের মানুষজন। কিন্তু পদ্মাপাড়ের বাসিন্দারা এ বছর রুপোলি শস্যের স্বাদ থেকে নিজেরাই বঞ্চিত।

এই বিভাগের আরও খবর