img

ভারতের নারী শিক্ষাপ্রসারের অন্যতম স্তম্ভ ছিলেন। উনিশ শতকে জন্মেও বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, ইচ্ছাশক্তি আর আত্মবিশ্বাস থাকলে সমাজের যে কোনও বাধা পেরিয়ে ওঠা সম্ভব। তিনি কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্য়ায়। ভারতের প্রথম মহিলা চিকিৎসক। আজ, রবিবার ১৬০তম জন্মবার্ষিকীতে কাদম্বিনী দেবীকে বিশেষ সম্মান জানাল Google।

জনপ্রিয় এই সার্চ ইঞ্জিনে আজ ঢুঁ মারলেই দেখবেন, পালটে গিয়েছে গুগলের ডুডল (Doodle)। যেখানে সাধারণত বড়বড় করে Google লেখা থাকে, সেই Go আজ বদলে গিয়েছে স্টেথোস্কোপে। পরের O-তে ফুটে উঠেছে ক্যালকাটা মেডিক্যাল কলেজের ছবি। ১৮৮৪ সালে যেখানে ডাক্তারি পড়ার জন্য ভরতি হয়ে নারীশিক্ষার সংজ্ঞাকেই পালটে দিয়েছিলেন তিনি। মেয়েরাও যে ডাক্তার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে পারে, এই দৃঢ় বিশ্বাসই মহিলাদের মননে ঢুকিয়ে দেওয়ার কাজটি করেছিলেন। আর সেই কারণেই বরিশালে জন্ম নেওয়া কাদম্বিনী জায়গা করে নিয়েছিলেন ইতিহাসের পাতায়।

১৮০০ শতাব্দীতে বাড়ির অন্দরমহলই ছিল মেয়েদের গণ্ডি। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে খোলা আকাশে ওড়ার স্বপ্ন দেখতেও যেন ভয় পেত মেয়েরা। সেই যুগে অন্যদের থেকে নিজেকে একেবারে আলাদা প্রমাণ করে বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন কাদম্বিনী দেবী (Kadambini Ganguly)। ইংরাজি মাধ্যমে শিক্ষাগ্রহণ থেকে মেডিক্যাল ছাত্রী হয়ে ওঠার পথে প্রতিকূলতা এসেছে ঠিকই, কিন্তু সেসবকেই তিনি জয় করতে সফল হয়েছিলেন। এই লড়াইয়ে পাশে পেয়েছিলেন বাবা এবং স্বামীকে। মেডিক্যাল পাশ করার পর ১৮৯২ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য ব্রিটেন পাড়ি দিয়েছিলেন। এডিনবার্গ ও ডাবলিন থেকে শংসাপত্র নিয়ে ফিরেছিলেন দেশে। তারপর দেশবাসীর সেবায় নিযুক্ত করেন নিজেকে।

তবে শুধুই ডাক্তারি নয়, পরাধীন ভারতে নানা ভাবে সমাজসেবায় যুক্ত ছিলেন তিনি। মহিলাদের সাংস্কৃতিক, শিক্ষাগত উন্নতি কথা বলেছেন বারবার। মহিলাদের মেডিক্যালে ভরতি না নেওয়ার প্রতিবাদে ক্যালকাটা মেডিক্যাল কলেজের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন ১৯১৫ সালে। যার পর নিজেদের পলিসি বদলাতে বাধ্য হয়েছিল মেডিক্যাল কলেজ। ১৯২৩ সালে প্রয়াত হন কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর দেখানো পথ আজও প্রাসঙ্গিক। তাই তো তাঁকে বিশেষ সম্মান জানিয়ে বর্তমানের কাছে তাঁর কৃতিত্বের কথা তুলে ধরার প্রয়াস করল গুগল।

এই বিভাগের আরও খবর