img

করোনা এসেই বদলে দিয়েছিল যে বিনোদন অঙ্গনের চেহারা, এ বছর সেখানে কিছু পরিবর্তন আসছে। যেমন ঘরবন্দী মানুষ অনভ্যস্ত হয়ে পড়েছে সিনেমা হল সংস্কৃতিতে। অন্যদিকে মুঠোফোনকেন্দ্রিক জীবনে বিনোদনের কেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছে ইউটিউব আর ওটিটি। এই পরিবর্তনের হাওয়া এ বছর বইবে আরও জোর গতিতে। ২০২১ সালে বিনোদন অঙ্গনে কী কী ঘটতে পারে, তারই কিছুটা ধারণা দেওয়া যাক।

আলোচনায় থাকবে ওয়েব সিরিজ

একসময় নতুন সিনেমা মুক্তি নিয়ে থাকত উন্মাদনা। ওটিটির কারণে সেই জায়গা দখল করে নেবে ওয়েব সিরিজ। বিশ্বজুড়ে ওটিটিভিত্তিক ধারাবাহিকগুলো নিয়ে ভক্তদের উন্মাদনা বেড়েই চলেছে দিনকে দিন। শুধু কি তাই? সিনেমার ডাকসাইটে অভিনেতারাও ঝুঁকছেন এসব সিরিজে। তাই নতুন বছরে আলোচনার অন্যতম বিষয় হতে পারে ওয়েব সিরিজগুলো।

গল্প হবে আরও বৈচিত্র্যময়

টেলিভিশনে গল্প বলার নানা বাধ্যবাধকতা। ওটিটিতে তা নেই। তাই ওটিটিকেন্দ্রিক কাহিনি হবে আরও বৈচিত্র্যময়। নির্মাতারা এ স্বাধীনতা পেয়ে আনন্দিত। অমিতাভ রেজা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটা এক অর্থে ভালো। সবাই স্বাধীনভাবে শুটিং করতে পারছেন। তবে কতটুকু দেখানো যাবে, সেই বোধটা নির্মাতার থাকতেই হবে।’

ওটিটির দর্শক বাড়বে

টেলিভিশন ও ইউটিউব, দুই মাধ্যমেই অনুষ্ঠান উপভোগ করতে গেলে বিজ্ঞাপন একধরনের বিড়ম্বনা সৃষ্টি করে। ওটিটিতে সেটা নেই, ক্ষেত্রবিশেষে সহনীয়। তাই দর্শক থাকবেন ওটিটির সঙ্গেই। মূল্য পরিশোধ করে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে হবে বলে ওটিটিগুলো দর্শকের জন্য সেরা কনটেন্ট নিয়ে প্রস্তুত থাকবে। এ ছাড়া প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার চেষ্টা তো থাকবেই।

কমতে পারে টিভি নাটকের বাজেট

নাটকের বাজেট আরও কমে যেতে পারে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যাঁদের অনুসারী কম, তাঁদের নিয়ে নির্মিতব্য নাটকের বাজেট হবে কম। টেলিভিশন অ্যান্ড ডিজিটাল প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক সাজু মুনতাসির জানান, হাতে গোনা কিছু শিল্পীর নাটক টেলিভিশন ও অনলাইনগুলো কিনলেও, বাকি নাটকের দাম কমছে। অনেক নাটক ৫০-৬০ হাজার বা এক লাখ টাকায় বিক্রি হয়।

টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন বিড়ম্বনা। দর্শক চলে গেছেন ইউটিউবে। এ কারণে টেলিভিশনগুলোও নাটক প্রচারের পরই প্রকাশ করে নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে। দর্শকেরাও থাকেন সেই অপেক্ষায়। কিন্তু ওটিটিগুলো মানসম্পন্ন কনটেন্ট উপস্থাপন করবে, ফলে ইউটিউবে প্রকাশিত নাটকগুলোর দর্শকও কমে যেতে পারে। নির্মাতা মিজানুর রহমান বলেন, ‘গল্পকে গুরুত্ব না দিলে ইউটিউব নাটকের দর্শকও কমে যাবে।’

শিল্পী নির্বাচনে ‘ভিউ’ ভূমিকা রাখতে পারে

তিন-চার বছর আগেও টিভি নাটকে শিল্পী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে চরিত্রকে প্রাধান্য দেওয়া হতো। কিন্তু ইউটিউব ও ওটিটি চলে আসায় অভিনয়শিল্পীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের লাইক ও ভিউ এবং অনলাইনে প্রকাশিত নাটকের ভিউকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এই প্রবণতা আরও বাড়বে। এমনকি শিল্পীর পরবর্তী কাস্টিংয়ের ক্ষেত্রে আগের নাটকগুলোর ভিউও বিবেচনায় রাখা হবে। নির্মাতা সেরনিয়াবাত শাওন বলেন, ‘অনেক প্রোডাকশন হাউসে চিত্রনাট্য জমা দেওয়ার পর বেশি ভিউ আছে, এমন একটা নাটকের লিংক জমা দিতে বলেন। কাজের মান ভালো, কিন্তু ভিউ কম থাকলে কাজ পাওয়া যায় না।’

এ বছর নাটকপাড়ায় বেশ কিছু অভিনয়শিল্পীর দাপট বাড়তে পারে। তালিকায় আছেন মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, জাহিদ হাসান, আফরান নিশো, অপূর্ব, মেহ্‌জাবীন চৌধুরী, তৌসিফ আহমেদ, জোভান, তানজিন তিশা, সাবিলা নূর, সাফা কবিরসহ আরও বেশ কিছু তারকা। ঘুরেফিরে জুটি হিসেবে এই তারকাদেরই পর্দায় দেখা যাবে। এই তারকাদের সঙ্গে নিয়মিত কাজ করেন, এমন তিনজন নির্মাতা নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানিয়েছেন, তারকাদের কেউ কেউ জোটবদ্ধ হয়েও কাজ করবেন। সেই তালিকায় একদিকে থাকবেন আফরান নিশো, অপূর্ব ও মেহ্‌জাবীন, অন্যদিকে থাকতে পারেন তৌসিফ আহমেদ, জোভান, সাবিলা নূর ও সাফা কবির।

জিরোআওয়ার২৪/এমএ

এই বিভাগের আরও খবর