img

‘আজ রবিবার’ নাটকে আজগর চরিত্রে অভিনয় করেন আলী যাকের। তিনি বাড়ির বড় ছেলে। গল্পে তাঁকে বেশির ভাগ সময় ঘরের ভেতর পড়াশোনা করতে দেখা যেত। দীর্ঘ সময় ঘরের ভেতর বসে বসে তিনি কী করতেন, সে ব্যাপারে উৎসাহী ছিলেন মতি চরিত্রের ফারুক। গৃহপরিচারক মতি প্রায়ই আজগরের দরজার ফাঁকা দিয়ে উঁকি দিতেন। মতি উঁকি দিলেই সেটা ধরে ফেলতেন আজগর। বেশির ভাগ সময় এ অপরাধের শাস্তি হিসেবে থাপ্পড় খেতেন তিনি। একবার দরজার ছিদ্র দিয়ে কালি ছুঁড়ে মারেন আজগর। সেই সব দিনের স্মৃতি স্মরণ করে ফারুক আহমেদ জানান, দৃশ্যগুলো ধারণের সময় তাঁকে অনেকগুলো থাপ্পড় খেতে হয়েছিল। কারণ, থাপ্পড়ের শটগুলো ঠিকমতো হয়ে উঠত না। ফারুক বলেন, ‘থাপ্পড় মারার শট ওকে না হওয়ার কারণে বারবার আলী যাকেরের হাতে আমাকে থাপ্পড় খেতে হচ্ছিল। প্রতিবার থাপ্পড় মেরে তিনি সঙ্গে সঙ্গে আমাকে জড়িয়ে ধরতেন। আমাকে আদর করে বলতেন, “ইশ্ রে, জোরে লেগেছে মনে হয়। মনে কষ্ট রেখো না।” আমি যতই তাঁকে বলি, ব্যথা পাইনি, কষ্ট নিইনি, তারপরও তিনি প্রতিবারই থাপ্পড়ের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছিলেন।’

টেলিভিশনে ফারুক আহমেদ অভিনীত প্রথম একক এবং ধারাবাহিকে তিনি আলী যাকেরকে পেয়েছিলেন। একে অভিনয়জীবনের বড় প্রাপ্তি মনে করেন ফারুক। হুমায়ূন আহমেদের ‘অচিন বৃক্ষ’ নাটকে অভিনয়ের স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘যাকের ভাই নিরহংকার এবং সহযোগিতাপূর্ণ একজন অভিনেতা। সেটে কখনো তাঁকে উচ্চ স্বরে কথা বলতে শুনিনি। তিনি সবাইকে মূল্যায়ন করতেন।’ ফারুক আহমেদ বলেন, ‘“অচিন বৃক্ষ” নাটকেও আমাকে থাপ্পড় খেতে হয়। ঘটনাটা ছিল একদল বিদেশি আসে একটি অচিন গাছ দেখতে। তাদের সঙ্গে আলী যাকের বসে কথা বলছেন। আমি কাজের ছেলে হয়ে তাদের কথার ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন কথা বলি। পরে আলী যাকের রেগে আমাকে ডেকে দূরে নিয়ে গিয়ে থাপ্পড় মারেন। যাকের ভাই ছিলেন স্বাস্থ্যবান, তার হাতের পাঞ্জা ছিল মোটা। সেদিন প্রথম থাপ্পড় খেয়ে আমি মাটিতে পড়ে যাই। ব্যথায় আমার মাথা ঘুরতে থাকে। যাকের ভাই দ্রুত আমাকে তুলে নেন। দুঃখ প্রকাশ করেন। সেদিন সারাক্ষণ আমাকে আদর করে বলতে থাকেন, “মনে কষ্ট রাখিস না।”’ ফারুক বলেন, ‘আলী যাকের আমাকে বোঝান, যদি জোরে থাপ্পড় না মারতাম, দৃশ্যে বাস্তবতা প্রকাশ পেত না।’ সেদিন থেকে তরুণ ফারুক আহমেদকে আলী যাকের খুব স্নেহ করতেন।

জিরোআওয়ার২৪/এমএ

এই বিভাগের আরও খবর