অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হচ্ছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের
গত বুধবার থেকে প্রখ্যাত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের তিন দফায় কিডনির ডায়ালাইসিস করা হলে কিছুটা সাড়া মেলে চিকিৎসায়। কিন্তু গতকাল রাত থেকে তাঁর অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ শুরু হলে চিন্তিত হয়ে পড়ে তাঁর চিকিৎসায় নিয়োজিত ১৬ সদস্যের চিকিৎসক দল। রাত থেকে তাঁর রক্তক্ষরণ বন্ধের চেষ্টা চললেও তা পুরোপুরি সফল হয়নি।
গতকাল রাত নয়টায় সৌমিত্রের চিকিৎসক দলের প্রধান বিশিষ্ট ক্রিটিক্যাল বিশেষজ্ঞ অরিন্দম কর বলেন, ‘আমরা রক্তক্ষরণের কারণ খুঁজে পেয়েছি। এখন সেই রক্তক্ষরণ বন্ধের চেষ্টা চালাচ্ছি। অভিনেতার হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে প্লেটলেটের কাউন্টও। দিতে হচ্ছে রক্ত।’ তিনি আরও বলেন, গতকালই সিটি এনজিও করে রক্তক্ষরণের স্থান শনাক্ত করা গেছে। এখন তা বন্ধ করার চেষ্টা চলছে। তিনি এ কথাও বলেছেন, ‘অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ শুরু।’
এদিকে সৌমিত্রের চিকিৎসায় রক্তের প্রয়োজন হওয়ায় কলকাতার মোশন পিকচার্স আর্টিস্ট ফোরাম গতকাল তাদের সদস্যদের কাছে আবেদন করেছে, যেসব বন্ধু ফোরামের সভাপতি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের চিকিৎসায় রক্তদান করতে চান, তাঁরা যেন ফোরামের কলকাতার কার্যালয়ে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকেই রক্ত সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ক্রিটিক্যাল বিশেষজ্ঞ অরিন্দম কর গত শুক্রবার বলেছিলেন, ‘যত সময় যাচ্ছে, ততই ক্ষীণ হয়ে আসছে প্রবীণ অভিনেতার সুস্থ হওয়ার আশা।’ গত সোমবার তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে দেওয়া হয় ভেন্টিলেশন।
গতকালও হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছে, তাঁর শারীরিক অবস্থা এখনো সংকটজনক। আচ্ছন্নতা কাটেনি। মস্তিষ্কে কোভিড ও এনকেফ্যালোপ্যাথি রোগের কারণে ¯œস্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা রয়েছে। তাঁর মস্তিষ্কে করোনার প্রভাব বর্তমান। তবে জ্বর নেই তাঁর।
গত ১ অক্টোবর থেকে বাড়িতে থাকাকালে তাঁর শরীরটা ভালো যাচ্ছিল না। শরীরে জ্বর আসে। তবে করোনার কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি। এরপরই চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁর করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হলে গত ৫ অক্টোবর তার করোনার পজিটিভ রিপোর্ট আসে। ৬ অক্টোবর তাঁকে ভর্তি করানো হয় বেলভিউ নার্সিংহোমে। নার্সিংহোমে সর্বশেষ গত ১৪ অক্টোবর তাঁর করোনা নমুনা পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। এরপরই সৌমিত্র সুস্থ হতে থাকেন। যদিও তার করোনা ছাড়া অন্যান্য রোগ ছিল। এর মধ্যে রয়েছে প্রোস্টেট ক্যানসার, সিওপিডি, প্রেশার, সুগারের মতো রোগ। তার ওপরে ছিল করোনা পজিটিভ। কিন্তু গত মঙ্গলবার থেকে তাঁর স্বাস্থ্যের ক্রম অবনতি শুরু হয়। সেই অবনতির ধারা এখনো চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় তিনবার তাঁর ডায়ালাইসিস করা হয়েছে।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বয়স এখন ৮৫ বছর। ১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
জিরোআওয়ার২৪/এমএ