img

পৃথিবীতে যত মানুষের পা কেটে ফেলার প্রয়োজন পড়ে, তার প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ ভাগই ডায়াবেটিক ফুট আলসারের কারণে। এতেই বোঝা যায় যে ডায়াবেটিক ফুট আলসার কতটা ভয়াবহ। সে জন্য ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিজের পা বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে এবং এটি প্রতিরোধে সঠিক ব্যবস্থা নিতে হবে।

কেন হয়?

ডায়াবেটিসের কারণে পায়ের স্নায়ু ও রক্তনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে একদিকে পায়ে রক্ত চলাচল যায় কমে, আবার অনুভূতিও চলে যায়। ফলে ডায়াবেটিসের রোগীরা পায়ে সহজেই আঘাত পান, যা বুঝতে পারেন না। আবার ডায়াবেটিসের রোগীদের রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতা কম বলে সহজেই জীবাণুর সংক্রমণ হয়। ফলে তাঁদের পা খুবই নাজুক অবস্থায় থাকে এবং সংক্রমণ একবার হলে তা সারে না। এর ফলাফল হয় ভয়াবহ।

ডায়াবেটিক ফুট আলসার প্রতিরোধে করণীয়

  • রক্তে শর্করার মাত্রা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে ডায়াবেটিক ফুট আলসারের ঝুঁকি কমানো যায়। এ জন্য নিয়মিত বাড়িতে সুগার পরীক্ষা করতে হবে। আর তিন মাস অন্তর গড় সুগার পরীক্ষা করে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
  • সুবিধামতো সময়ে আপনার পা পরীক্ষা করুন। পায়ের তলা দেখতে প্রয়োজনে আয়না বা পরিবারের অন্য সদস্যদের সাহায্য নিন। নখের গোড়ায়, কোনায়, আঙুলের ফাঁকে, পায়ের পাতায়/ তলায় ফেটে যাওয়া, লাল হওয়া, ফুলে যাওয়া, ফোসকা পড়া, চামড়া শক্ত হওয়া বা যেকোনো পরিবর্তন লক্ষ করলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কখনোই কোনো ফোসকা বা কর্ন নিজে নিজে গলানো বা কাটার চেষ্টা করবেন না।
  • প্রতিদিন কুসুম গরম পানি বা সাবান দিয়ে পা ধুয়ে নিন। পানির উষ্ণতা সহনশীল কি না, বুঝতে অন্যের সহায়তা নিন। কারণ, ডায়াবেটিসের রোগীর পায়ের অনুভূতি হ্রাস পায়। অতিরিক্ত তাপে পা পুড়ে যেতে পারে।
  • পায়ের ত্বক নরম ও মসৃণ রাখুন। পায়ে নিয়মিত লোশন, ক্রিম বা তেল ব্যবহার করুন। আঙুলের ফাঁকে ছত্রাকের ইনফেকশন হচ্ছে কি না, খেয়াল রাখতে হবে। সঠিক নিয়মে নখ না কাটার কারণে আঙুলে বিভিন্ন ইনফেকশন শুরু হতে পারে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  • খালি পায়ে হাঁটবেন না। সব সময় জুতা বা স্যান্ডেল ব্যবহার করুন, এমনকি ঘরের মধ্যেও। সঠিক মাপের জুতা এবং পরিষ্কার সুতির মোজা ব্যবহার করুন। জুতা পরার আগে দেখে নিন ভেতরে কিছু আছে কি না। অধিক গরম ও ঠান্ডা থেকে আপনার পা রক্ষা করুন। পায়ের স্বাভাবিক রক্ত চলাচলের জন্য, দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার সময় চেয়ার বা মোড়ার ওপর পা রাখুন। পায়ের আঙুল ও গোড়ালি দিনে দুই/ তিনবার ৫ মিনিট ধরে নাড়ুন।
  • ধূমপান পরিহার করুন।

পায়ের আলসারে প্রথম দিকে ব্যথা না থাকায় অনেকেই একে পাত্তা দেন না। পরে এ থেকে ইনফেকশনের সৃষ্টি হয়। তাই আলসার প্রতিরোধের সঙ্গে সঙ্গে নিজের পায়ের দিকে খেয়াল রাখুন। সামান্য লক্ষণ দেখতে পেলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

জিরোআওয়ার২৪/এমএ

এই বিভাগের আরও খবর