img

অনলাইন ভিডিও প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্সের ব্যাপক চাহিদা লক্ষ করা যায় মানুষের ঘরবন্দী সময়ে। চলতি বছরের শুরুতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশ্বের অধিকাংশ মানুষকেই বেছে নিতে হয় ঘরবন্দী জীবন। একসময় ঘরে থেকেই অনলাইনে শুরু হয় অফিসের কার্যক্রম, স্কুলের পাঠ্যক্রম। প্রয়োজন পড়ে বিনোদনেরও। তাই ব্যাপক চাহিদা দেখা যায় নেটফ্লিক্সের।

বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, পাঁচ ভাবে করোনাভাইরাস পাল্টে দিয়েছে এই ভিডিও প্ল্যাটফর্মকে।

১. গ্রাহক প্রবৃদ্ধির গতি কমেছে

নেটফ্লিক্স যেমনটা আশা করছিল, তেমনটা ব্যবসা আসলে তারা করতে পারেনি। শুরুতে একটা ‘বুম’ দেখলেও পরে প্রবৃদ্ধির ওই গতি তারা ধরে রাখতে পারেনি। সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, নেটফ্লিক্স জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর—এই তিন মাসের মধ্যে মাত্র ২২ লাখ নতুন গ্রাহক সংযুক্ত করেছে; যদিও তারা আগেই এ বিষয়ে সতর্ক ছিল। জুলাইতেই তারা জানায়, গ্রাহকের সংখ্যা ২৫ লাখ বাড়বে। এ ঘোষণার পর কোম্পানিটির শেয়ারের দর ৫ শতাংশ কমেছিল। অবশ্য এরপরও ২০২০ সালে এখন পর্যন্ত রেকর্ড গ্রাহক যুক্ত হয়েছে নেটফ্লিক্সে—৩ কোটি ৪০ লাখ। এর মোট গ্রাহকসংখ্যা ২০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে।

২. অ্যাকশন চলচ্চিত্র ‘ওল্ড গার্ড’নেটফ্লিক্সের অন্যতম হিট সিনেমা

নেটফ্লিক্সের প্রায় ৭ কোটি ৮০ লাখ সদস্য শার্লিজ থেরন অভিনীত এই সিনেমা দেখেছেন। ১০ জুলাই নেটফ্লিক্সে মুক্তি পায় ওই অ্যাকশন ছবি। মুক্তির পর ৪ সপ্তাহ ধরে দেখার দিক দিয়ে শীর্ষে ছিল সিনেমাটি। ‘ইনোলা হোমস’, ‘প্রজেক্ট পাওয়ার’ ও ‘দ্য কিসিং বুথ’ বেশ জনপ্রিয় হয়। মুক্তির প্রথম চার সপ্তাহের মধ্যে ৭ কোটি ৬০ লাখ, ৭ কোটি ৫০ লাখ ও ৬ কোটি ৬০ লাখ গ্রাহককে আকর্ষণ করে সিনেমাগুলো। অবশ্য কোনো ভিডিওতে দুই মিনিট গ্রাহক আটকে থাকলে তা ভিউ হিসেবে গণ্য করে নেটফ্লিক্স। তবে এখানে উল্লেখযোগ্য যে নেটফ্লিক্সের অরিজিনাল ছবির প্রতি মানুষের আগ্রহ, যা এই ভাইরাসের সময়ে অন্যতম সাফল্য।

৩. যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের বাজারগুলোয় ব্যবসা করা জটিল

নেটফ্লিক্সের আন্তর্জাতিক গ্রাহকসংখ্যা তাদের ব্যবসাকে জটিল করে তুলেছে। শেষ প্রান্তিকে যত গ্রাহক এসেছে, তার প্রায় অর্ধেকই এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াও গ্রাহক বেড়েছে। তবে এখনো কোম্পানিটির সিংহভাগ আয় হয় যুক্তরাষ্ট্রের গ্রাহক থেকে। তাই এর বাড়ির বাজার ধরে রাখা মূল বিষয়। বিশেষত, ডিজনি ও এইচবিওর মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে টিকে থেকে।

জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে মুনাফার রেকর্ড করেছে নেটফ্লিক্স। ৭৯ কোটি ডলার মুনাফা হয়েছে তাদের। আয় হয়েছে ৬৪০ কোটি ডলার। কোম্পানিটি বলছে, বিশ্বজুড়ে সিনেমা–নাটক তৈরির সাময়িক মন্দার কারণে তাদের এই ব্যাপক মুনাফা এসেছে।

৪. এখন প্রয়োজন আরও কনটেন্ট

নেটফ্লিক্স চলেই এর কনটেন্ট দিয়ে। এ বছর লকডাউনের কারণে সিনেমা ও টিভি নাটক তৈরির সংখ্যা ব্যাপক কমে গেছে। এখন নেটফ্লিক্সের জন্য চ্যালেঞ্জ যে বিপুল পরিমাণ গ্রাহক সংযুক্ত হয়েছে, তাদের ধরে রাখা। অবশ্য এই উদ্বেগ নেটফ্লিক্স দেখাচ্ছে না। তারা বলতে চাইছে কনটেন্টের বিষয়ে আরও ‘ভালো ও সাবধানী’ অগ্রগতি করতে চায় তারা। কোম্পানিটি প্রত্যাশা করছে, আগামী বছর নেটফ্লিক্সের প্রযোজনার সংখ্যা প্রতি ত্রৈমাসিকে ২০২০ সালের ত্রৈমাসিককে ছাড়িয়ে যাবে।

৫. উৎপাদন কমই হয়তো মুনাফা বাড়াচ্ছে

জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে মুনাফার রেকর্ড করেছে নেটফ্লিক্স। ৭৯ কোটি ডলার মুনাফা হয়েছে তাদের। আয় হয়েছে ৬৪০ কোটি ডলার। কোম্পানিটি বলছে, বিশ্বজুড়ে সিনেমা–নাটক তৈরির সাময়িক মন্দার কারণে তাদের এই ব্যাপক মুনাফা এসেছে।

জিরোআওয়ার২৪/এমএ

এই বিভাগের আরও খবর