img

করোনাভাইরাসের কারণে পোশাক খাতের শ্রমিকদের বেতনের প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার কম সুদের ঋণ দিয়েছে ব্যাংকগুলো। এর বাইরে বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ বিতরণও শুরু হয়েছে। ফলে বাড়তে শুরু করেছে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে, গত এপ্রিলে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ৮২ শতাংশ। গত আগস্টে যা বেড়ে হয়েছে ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এই হার গত জুলাইয়ে ছিল ৯ দশমিক ২০ শতাংশ।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় ৮৬ হাজার কোটি টাকা টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। এসব ঋণের সুদহার ২ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত। আবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর অর্ধেক টাকা পুনঃ অর্থায়ন হিসেবে দিচ্ছে।

ব্যাংকগুলোর ওপর এই ঋণ বিতরণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেশ চাপ রয়েছে। আবার সুদ কম হওয়ায় ব্যবসায়ীরাও এসব ঋণের পেছনে ঘুরছেন।

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এখন মূলত প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ বিতরণ হচ্ছে। কারণ, এর সুদ কম। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত এর বাইরে অন্য ঋণের চাহিদা তৈরি হবে না। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, এর ওপর নির্ভর করবে পরবর্তী ঋণের চাহিদা। যাঁদের ঋণ অনুমোদন হয়েছে, তাঁদের সবাই এখনই টাকা নিতে চাইছেন না। কারণ, এখনই সবার টাকার প্রয়োজনও নেই। কম সুদ হওয়ায় নিয়েছেন। ফলে সামনের দিনে বেসরকারি ঋণ আরও বাড়বে।

করোনাভাইরাসের অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলায় সরকার প্রায় ৮৬ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে। গত এপ্রিলে এই ঋণ কর্মসূচি চালু হয়।

ব্যাংকগুলো সরকারের ঘোষিত আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজের প্রায় ৫৪ শতাংশ বা ৪৬ হাজার ২৫২ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। এই প্যাকেজের আওতায় বড়দের ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে ব্যাংকগুলো বেশ সক্রিয় থাকলেও ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি (সিএমএসএমই) এবং প্রাক্-জাহাজীকরণ পুনঃ অর্থায়ন কর্মসূচি খাতে ঋণ বিতরণে তারা এখনো পিছুটানে রয়েছে।

ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমরানুল হক এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কম সুদের কারণেই বেসরকারি খাতের ঋণ চাহিদা তৈরি হয়েছে এবং ঋণ বিশ্বব্যাপী ভোগ্যপণ্যের দাম কমায় আমদানি খরচ কমেছে, আবার বিদ্যুৎ খাতের কিছু আমদানি দায় পরিশোধের সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিশোধের সময় হলে তারল্য পরিস্থিতির ওপর চাপ পড়তে পারে। আবার সুদ কমায় তখন চাহিদামতো আমানত মিলবে কি না, এটাও চিন্তার বিষয়।’

জিরোআওয়ার২৪/এমএ

এই বিভাগের আরও খবর