img

১৬ অক্টোবর থেকে প্রেক্ষাগৃহ খুলে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়। সিনেমা হল খোলা প্রসঙ্গে দর্শকেরা জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সিনেমা দেখায় বাধা নেই অনেকের। তবে পরিবারসহ সিনেমা দেখার পরিবেশ তৈরি করতে হবে সিনেমা হলে। কেউ বলেছেন, এখনই সিনেমা দেখা নয়, পরিস্থিতি আরও ভালো হোক।

ক্রমাগত বন্ধ হচ্ছে সিনেমা হল। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় সংস্কার ছাড়া অনেক হল খোলাও কঠিন হয়ে যাবে। অনেক হলেই নেই সিনেমা দেখার পরিবেশ। তাই মধ্যবিত্ত হলবিমুখ হচ্ছে দিন দিন। আবার সিনেপ্লেক্সের টিকিটের দাম এতটাই চড়া যে মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। মুবাশ্বীর হাসান পেশায় চিকিৎসক। ফুরসত মিললেই স্ত্রী, সন্তান আর বাড়ির সহকারী নিয়ে তিনি ঢুকে পড়েন সিনেমা হলে। তিনি বলেন, ‘স্বাভাবিক পরিস্থিতিতেই সিনেপ্লেক্স আর ব্লকবাস্টার ছাড়া পরিবার নিয়ে সিনেমা দেখার মতো হল নেই। কিন্তু সিনেপ্লেক্সে এক দিন সিনেমা দেখতে গেলে অনেক টাকা খরচ হয়।

আবার সাধারণ সিনেমার হলের টিকিট নিম্নবিত্তের নাগালের বাইরে। যে টাকা দিয়ে দর্শক টিকিট কেটে সিনেমা দেখবেন, তা দিয়ে হয়তো তাঁর এক বেলার চাল কেনা হয়ে যাবে। তাই আপাতত তাঁদের সিনেমা দেখার প্রধান ভরসা ইউটিউব ও টেলিভিশন।

সিএনজিচালক বেলাল হোসেন ইউটিউবে সিনেমা দেখেন। তাঁকে সিনেমা হল খোলা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতেই পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘হলে গিয়া সিনেমা দেখবার কী আছে! এইডার (হাতে ধরা মুঠোফোনের দিকে নির্দেশ করে) মদ্দেই তো সব পাওয়া যায়।’

কথা হয় ঢাকার মালিবাগ রেলগেট ও মতিঝিল এলাকার বেশ কয়েকজন রিকশাচালকের সঙ্গে। তাঁদের প্রায় কেউই হলে গিয়ে সিনেমা দেখেন না। তাঁদের ভেতর একজন বলেন, ‘হলে যায়া সিনেমা দেখতে ইচ্ছা তো করেই। গরিবেরা কি আর পরিবার নিয়া সিনেমা দেখতে পারেন? আমিই তো এখন আর দেহি না। ৫০ টাকা বাঁচলে সংসারে কাজে দেয়। ঘরে টিভিতে সিনেমা দেহি। তয় বউ-বাচ্চা নিয়া একবার হলে যায়া সিনেমা দেখার ইচ্ছা আছে।’

হল খোলা নিয়ে উচ্ছ্বসিত সিনেপ্লেক্স কর্মকর্তারা। স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ বিপণন কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের যে ছবিগুলো আছে, সেগুলো দিয়েই ১৬ অক্টোবর হল খুলে দেব। এ মুহূর্তে আমাদের সব মনোযোগ হল খোলার ওপর। নতুন ছবি এলে অবশ্যই দেখাব। সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মানা হবে।’

সিনেমা হলের মালিকেরা অবশ্য অতটা উচ্ছ্বসিত নন। কারণ, দীর্ঘদিন হল বন্ধ থাকায় এখন সংস্কার ছাড়া হল খোলা কঠিন। ফেনীর কানন সিনেমা হলের মালিক আবদুল্লাহ হিমেল বলেন, হল খোলার আগে সংস্কার জরুরি। ভালো হয়, যদি মূল ভবন পুরোটা ভেঙে নতুন করে বানানো যায়।

যশোরের মনিহার সিনেমা হলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউল ইসলাম জানান, তাঁদের সিনেমা হল জেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া খোলা যাবে না। সেখান থেকে হল খোলার ব্যাপারে কোনো আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা আসেনি। তাই এ মুহূর্তে হল খোলা নিয়ে তিনি কিছু ভাবছেন না।

আর বড় বাজেটের নতুন ছবি না পেলে পুরোনো ছবি দিয়ে হল খুলতে নারাজ রাজধানীর মধুমিতা সিনেমা হলের কর্ণধার ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ।

জিরোআওয়ার২৪/এমএ

এই বিভাগের আরও খবর