কাটছে না সৌদির টিকিট এবং ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা
সোনারগাঁ হোটেলের বাইরের দেয়ালের সঙ্গে লাগানো রেলিংয়ে বসা কবির হোসেন (২৫)। এক সপ্তাহ ধরে ঢাকায়। প্রথম দুদিন এক পরিচিতজনের বাসায় ছিলেন। এখন রাত কাটান সড়কে বা মসজিদে। সকালে এসে বসে থাকেন কারওয়ান বাজারে সোনারগাঁ হোটেলের সামনে। কয়েক দিন ধরে এভাবেই কাটছে তাঁর দিন।
কবির হোসেন সেসব প্রবাসীর একজন, যাঁরা করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর আগে দেশে এসে আটকা পড়েন। তিনি চার বছর সৌদি আরবে ছিলেন। গত জানুয়ারিতে দেশে এসেছিলেন ৫৭ দিনের ছুটিতে। ফেরার কথা ছিল মার্চেই। উড়োজাহাজের টিকিটও কেটে রেখেছিলেন। কিন্তু করোনাভাইরাস সবকিছু উল্টে দেয়। সৌদি আরবে আর ফেরা হয়নি কবিরের। এর মধ্যে ভিসা ও ইকামার মেয়াদ শেষ।
উড়োজাহাজের টিকিট এবং ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের দাবিতে সৌদিপ্রবাসীরা আজ মঙ্গলবার সকালে আবার রাস্তায় নামেন। সকাল ১০টার দিকে তারা রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকার কাছে প্রধান সড়কে নামেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সড়ক ছাড়লেও অবরোধের কারণে এ সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। কারওয়ান বাজার থেকে বিজয় সরণি পর্যন্ত দীর্ঘ এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়।
আজ সংগঠিতভাবে ব্যানার হাতে নিয়ে সার্ক ফোয়ারার সামনে সড়ক অবরোধ করে সৌদিপ্রবাসীরা। তাদের দাবি , স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি এবং টিকিট দেওয়া নিয়ে হয়রানি বন্ধ করা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সরে যায় বিক্ষোভকারীরা । এরপর ধীরগতিতে যান চলাচল শুরু হয়।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া সৌদিপ্রবাসী বেলাল হোসেন বলেন, ভিসা নবায়ন সংক্রান্ত সমস্যা সরকার চাইলেই সমাধান করতে পারে। প্রবাসী মন্ত্রী যদি সৌদি দূতাবাসে পদক্ষেপ নিতে বলেন তাহলে সৌদি আরব অবশ্যই এটি করবে। আমাদের ছাড়া সৌদি আরবের চলবে না। আমাদের মতো শ্রমিকদের দিয়েই সৌদি আরবের সব ধরনের কাজ হয়।
পুলিশের ঢাকা মহানগর ট্রাফিক বিভাগের (পশ্চিম) এডিসি মঞ্জুর মোর্শেদ জানান, সড়ক অবরোধের সময় কারওয়ান বাজার থেকে বিজয় সরণি পর্যন্ত দীর্ঘ এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়।
গত সোমবার থেকেই টিকিটের দাবিতে সৌদিপ্রবাসীরা বিক্ষোভ শুরু করেছেন। তাদের অনেকেরই দাবি ছিল, সৌদি আরবে তাদের ইকামার (সৌদি আরবে কাজের অনুমতিপত্র) মেয়াদ বৃদ্ধি ও একাধিক ফ্লাইট চালু করা। এর মধ্যেই গত ২৩ সেপ্টেম্বর ইকামার মেয়াদ ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দেয় সৌদি আরব। ওই দিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিকদের ইকামা আরও ২৪ দিন বৈধ থাকবে এবং প্রয়োজনে আরও বাড়ানো হবে। তিনি বলেন, যে সকল বাংলাদেশি তাদের কর্মস্থল সৌদি আরবে ফিরে যেতে চান তাদের ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে দিতে সম্মত হয়েছে সৌদি সরকার।
এই ঘোষণার পর আবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ও সৌদি এয়ারলাইনস তাদের ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ায়। তবে টিকিট পাওয়া নিয়ে সৌদিপ্রবাসীদের ক্ষোভ ছিল এবং এর পাশাপাশি তাঁরা ভিসা নবায়ন এজেন্সির মাধ্যমে করার নির্দেশ বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিল।
জিরোআওয়ার২৪/এমএ