img

কৃষক সাহেব আলী (৬০) দেড় মাস আগে দুই একর জমিতে আমনের চারা লাগান। খেত প্রস্তুত করতে হালচাষ ও চারা রোপণ বাবদ ২০ হাজার টাকা তাঁর খরচ হয়েছে। এ নিয়ে তিনবার পাহাড়ি ঢলের কবলে পড়েছে তাঁর খেত। সর্বশেষ ঢলের কারণে তাঁর খেতের ফসল তিন দিন ধরে পানিতে ডুবে গেছে।

ফসল নিয়ে এই দুশ্চিন্তা শুধু সাহেব আলীর একার নয়। শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার যোগানিয়া, মরিচপুরান ও কলসপাড় ইউনিয়নের প্রায় ১ হাজার ৫০০ কৃষকের। তাঁদের ২ হাজার ৫০০ একর জমির ফসল তিন দিন ধরে পানিতে ডুবে রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কার্যালয়, জনপ্রতিনিধি ও কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলায় ১২টি ইউনিয়নে ২২ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে মরিচপুরান, যোগানিয়া ও কলসপাড় ইউনিয়নে ৮ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে।

গত আগস্ট মাসে উপজেলার ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীতে টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ভোগাই নদের বাঁধের এক হাজার মিটারে নতুন করে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া আগের ভাঙন দিয়ে ঢলের পানি প্রবেশ করে। এ পানিতে ১৪টি গ্রামের আমনের খেত আংশিক ক্ষতির মুখে পড়ে। পানি সরে গেলে অনেক কৃষক ঋণ নিয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়া খেতে আবার চারা রোপণ করেন।

১৭ সেপ্টেম্বর পাহাড়ি ঢল নামে। এরপর গত বৃহস্পতিবার অতিবৃষ্টিতে ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফের জমির ফসল পানিতে ডুবে যায়।

উল্লারপাড় গ্রামের কৃষক মো. রইচ উদ্দিন বলেন, ‘প্রথমবার ঢলে দুই দিন পানি খাহুনে খেত নষ্ট অয়া গেছে। আবার দৌড়ঝাঁপ কইরা খেত লাগাইছি। পরে আরও দুবার ঢলের পানিতে তিন একর জমি দুই দিন ধরা পানির তলে। পানি কমলে বুঝা যাইবো ফসলের কী অবস্থা। অহ নষ্ট অইলে এইবার আর আমন করুন যাইতো না।’

মরিচপুরান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার শফিক আহমেদ বলেন, তিন দিন ধরে ফসল পানিতে ডুবে থাকায় এবার কৃষকদের ফসল হয়তো রক্ষা করা সম্ভব হবে না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর কবির বলেন, পানির নিচে আমন ধান ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা থাকলে ফসলের তেমন ক্ষতি হয় না। কিন্তু পানি নামতে আরও কিছুদিন সময় লাগতে পারে।

জিরোআওয়ার২৪/এমএ

এই বিভাগের আরও খবর