img

ওজন কমানোর জন্য শরীরচর্চা খুবই কার্যকরী একটি উপায়। কিন্তু আমাদের মাথায় কখনোই আসে না যে শুধু ওজন কমাতেই নয়, শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা সঠিক রাখতেও শরীরচর্চা বিরাট ভূমিকা পালন করে। অথচ করোনাকালে ঘরবন্দী থেকে আমরা সবচেয়ে বেশি অবহেলা করেছি এই শরীরচর্চাকে।

শরীরচর্চা শুধু ওজন কমানো বা নিজেকে সুন্দর দেখানোর জন্যই নয়। শারীরিক ও মানসিকভাবে ফিট বা সুস্থ থাকতে শরীরচর্চা অনেক বেশি কার্যকর। সুস্থ থাকতে শরীরচর্চা বা ওয়ার্কআউটকে অবশ্যই জীবনের একটি অংশ করতে হবে।

ভালো থাকতে শরীরচর্চা করতে হবে একটি নিয়মের ভেতর থেকে। অনেক সময় দেখা যায় অনেকে টানা কয়েক দিন ঠিকমতো শরীরচর্চা করে পরে আবার ছেড়ে দিচ্ছে অথবা শরীরচর্চা করলেও ইচ্ছেমতো ফাস্ট ফুড খাচ্ছে। এতে আদৌ কোনো লাভ হয় না। শুধু শরীরচর্চা করলেই হবে না, পাশাপাশি আরও অনেক কিছু মেনে চলতে হবে।

শরীরচর্চা একটি রুটিন মেনে করা ভালো। যাঁরা জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করেন, বিশেষ করে ছেলেদের মধ্যে মাসল বা অ্যাবস বিল্ড আপের প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ফিটনেস ধরে রাখতে গেলে শরীরচর্চার সময় শরীরের প্রতিটি অংশকে সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।

যাঁরা টানা শরীরচর্চা করেন, তাঁরা হঠাৎ কয়েক দিন বিরতি নিলে শরীরের ওপর তার কোনো প্রভাব পড়ে না। তবে সেই বিরতি দু–তিন মাস দীর্ঘ হলে শরীরে পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। যেমন ওজন বেড়ে যেতে পারে বা এনার্জি কমে যেতে পারে। এ জন্য শরীরচর্চায় দীর্ঘ বিরতি না দেওয়াই শ্রেয়।

অনেকে মনে করেন শরীরচর্চা করতে জিমে যেতেই হবে। ধারণাটি একদম ভুল। শরীরচর্চা ঘরে থেকেও করা যায়। করোনাকালে অনেকের পক্ষেই জিমে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য মোটেও শরীরচর্চা থেকে নিজেকে দূরে রাখা যাবে না। করোনা থেকে দূরে থাকতে আমরা ঘরে আছি। অথচ শরীরচর্চা ছেড়ে দিয়ে বা একদম না করে বসে থেকে যে আমরা আরও কত রকমের রোগকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, তা নিয়ে অনেকেরই কোনো ধারণা নেই। যেভাবে সম্ভব শরীরচর্চা করতে হবে। ঘরে থেকে এ সময়ে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ, যোগব্যায়াম বা স্ট্রেচিং জাতীয় ব্যায়ামগুলো করা যায়।

ঘরে থেকে কীভাবে সঠিকভাবে শরীরের প্রতিটি অংশের ব্যায়াম করা যায়, তা জানতে আমরা ওয়ার্কআউট নিয়ে যে ইউটিউব ভিডিও আছে তার সাহায্য নিতে পারি। এ ছাড়া কিছু ওয়ার্কআউট অ্যাপ আছে, যা দেখে রুটিনমাফিক শরীরচর্চা করা যায়।

শরীরচর্চা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে অনেক বেশি কার্যকর। এ নিয়ে পিয়া জান্নাতুল নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বলেন, নিয়মিত শরীরচর্চায় অভ্যস্ত হওয়ার আগে তাঁর প্রায় সব সময় ঠান্ডাজনিত সমস্যা যেমন সর্দি–কাশি লেগেই থাকত। কিন্তু যখন থেকে শরীরচর্চা তাঁর জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন থেকে তাঁর এই সমস্যাগুলো ঠিক হয়ে যায়।

শুধু ঠান্ডাজনিত অসুখের ক্ষেত্রেই নয়, নিয়মিত শরীরচর্চা আমাদের আরও অনেক বড় বড় রোগ থেকে বাঁচিয়ে দিতে পারে। অবশ্য এ জন্য খাওয়াদাওয়া ও ঘুমের দিকেও সমানভাবে লক্ষ রাখতে হবে। শরীর সুস্থ রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সুষম খাবার খেতে হবে এবং ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এ ছাড়া রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে হবে।

মানসিক সুস্থতাও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে পরোক্ষভাবে কাজ করে থাকে। মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতেও শরীরচর্চার প্রয়োজন আছে। করোনাকালে দেখা যাচ্ছে অনেকেই দুশ্চিন্তা ও হতাশায় দিন কাটাচ্ছে। এ অবস্থায় ঠিকমতো শরীরচর্চা করা হলে এ ধরনের মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। এ জন্য সবদিক দিয়ে ভালো ও সুস্থ থাকতে নিয়মিত শরীরচর্চার বিকল্প নেই।

জিরোআওয়ার২৪/এমএ

এই বিভাগের আরও খবর